তারকা সব সময় তারকাই। কয়েকটা সিনেমা ফ্লপ হলেও তাঁর ধার কম হয়ে যায় না। হোক সেটা ১টি বা ২০টি ফ্লপ সিনেমা। এখন তাঁর শুধু একটা হিটের প্রয়োজন। দক্ষিণি তারকা প্রভাস সম্পর্কে কথাগুলো বলেছেন ‘সালার’ ছবির পরিচালক প্রশান্ত নীল।
আসলে তা–ই। সত্যি সত্যি প্রভাসের একটা হিট সিনেমার বড়ই প্রয়োজন। দিনকাল খুব খারাপ যাচ্ছে। ‘বাহুবলী টু’র পর আর হিটের মুখ দেখেননি এই প্যান ইন্ডিয়া তারকা। গত কয়েক বছরে তাঁর সাহো, রাধে শ্যাম, আদিপুরুষ চরম ব্যর্থ। প্রভাসের নামের জোরে ‘আদিপুরুষ’ শুরুটা ভালো করেছিল বটে। কিন্তু ছবির রিভিউ প্রকাশ্যে আসার পর আর হলমুখী হননি দর্শক। তাই প্রভাসের ভাগ্য ফেরাতে এখন একমাত্র আশা-ভরসা ‘সালার: পার্ট ওয়ান সিজফায়ার’ ছবিটি।
আজ শুক্রবার মুক্তি পাচ্ছে প্রশান্ত নীল পরিচালিত ‘সালার’। এর আগে প্রশান্ত নীলের কেজিএফ ফ্র্যাঞ্চাইজি ভারতে ঝড় তুলেছিল। সেই ছবির নায়ক ছিলেন কন্নড় তারকা যশ। কেজিএফ ছবিটি তাঁকে রাতারাতি প্যান ইন্ডিয়া তারকা করে তুলেছিল। তাই সিনেমাপ্রেমীদের প্রশান্ত নীলের ওপর আস্থা অনেকখানি। ডার্ক ঘরানা, লার্জার দ্যান লাইফ আর ভায়োলেন্ট ছবি নির্মাণের ব্যাপারে সিদ্ধহস্ত এই পরিচালক। আর তাঁর সবচেয়ে বড় প্রমাণ কেজিএফ। তাই সালারকে ঘিরে ভক্তদের প্রত্যাশা একটু বেশিই।
অনেকের মতে, এই ছবি প্রভাসের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ছবি হতে পারে। ইতিমধ্যে ‘অলওয়েজ বলিউড’-এ সালার ছবির ‘ফার্স্ট রিভিউ’ চলে এসেছে। টুইট করে তারা জানিয়েছে, সালার–এর গল্প দুই বন্ধুর পরস্পরের শত্রুতে পরিণত হওয়া নিয়ে। খুনখারাবিতে ভরপুর এ সিনেমায় শিল্পীদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স আর চোখধাঁধানো সিনেমাটোগ্রাফি রয়েছে। প্রভাস এই ছবিতে পুরোপুরি হিংস্র এক রূপে দেখা দিয়েছেন। শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন তিনি। রিভিউতে আরও জানানো হয়েছে, এ সিনেমায় প্রভাসকে হাড় হিম করা অ্যাকশন করতে দেখা যাবে। সব মিলে সিনেমাটির সুপারহিট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কেননা, দর্শক এখন থিয়েটারে গিয়ে এ ধরনের ছবি দেখতে বেশি পছন্দ করছেন। এ সিনেমায় জুটি বেঁধে আসছেন প্রভাস আর শ্রুতি হাসান। আছেন পৃথ্বীরাজ সুকুমারন আর জগপতি বাবুর মতো অভিনেতারাও। হোমবেল ফিল্মসের ৪০০ কোটি বাজেটের অ্যাকশন-থ্রিলারধর্মী ছবিটির সিনেমাটোগ্রাফার ভুবন গাওডা।
একের পর এক ফ্লপ হলেও প্রভাসের সিনেমা মানেই তাঁর অনুরাগীদের মধ্যে বাঁধনহারা উচ্ছ্বাস। ‘সালার’ সিনেমার ট্রেলার মুক্তির পর এ উচ্ছ্বাস ক্রমেই বেড়ে চলেছে। প্রভাসের অনুরাগীরাও এই সিনেমার প্রচারে নেমে পড়েছেন আরও আগে। জানা গেছে, দক্ষিণের বেশ কিছু সিনেমা হলের দরজা মাঝরাতেও খোলা থাকবে।
ইতিমধ্যে মুম্বাইয়ের এক শপিং মলের সামনে প্রভাসের ১২০ ফুট উচ্চতার কাটআউট বানানো হয়েছে। মুম্বাই শহরের বুকে এই প্রথম কোনো দক্ষিণি তারকার এত বড় কাটআউট বানানো হলো। মুম্বাই আর দক্ষিণে এখন চলছে প্রভাসবন্দনা। প্রভাসের পোর্ট্রেটে ধূপ, ধুনা, দুধ ঢেলে পূজা করতেও দেখা গেছে ভক্তদের।
জানা গেছে, ‘সালার’ সিনেমার জন্য প্রভাসকে ১০০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক দেওয়া হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, ছবির আয় থেকে ১০ শতাংশ যাবে তাঁর পকেটে। ‘সালার’ ছবির অগ্রিম বুকিং হচ্ছে হুড়হুড়িয়ে। অগ্রিম বুকিংয়েই ছবিটি প্রায় ৩০ কোটি আয় করে ফেলেছে বলে জানা গেছে। বাণিজ্যিক বিশ্লেষক মনোবালা বিজয়বালন জানিয়েছেন যে প্রভাসের এই ছবির অগ্রিম বুকিংয়ের এমন হিড়িক লেগেছে যে ‘বুক মাই শো’র সার্ভার ক্রাশ করেছে!
‘সালার’–এর সামনে একমাত্র বাধা হলো, শাহরুখ খান অভিনীত ‘ডানকি’, আর অবশ্যই তাঁর আকাশচুম্বী তারকাখ্যাতি। গতকাল বৃহস্পতিবার মুক্তি পেয়েছে এই ছবি। এ বছর ‘পাঠান’ ও ‘জওয়ান’ পরপর দুটো ব্লকবাস্টার ছবি এই বলিউড সুপারস্টারের ঝুলিতে। অগ্রিম টিকিট বুকিংয়ের দৌড়ে ‘ডানকি’ আর ‘সালার’ একে অপরকে জোর টক্কর দিয়েছে। যদিও দুই ছবির মুখোমুখি ‘সংঘাত’ নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন পরিচালক প্রশান্ত নীল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই ছবি কত ব্যবসা করবে, কত আয় করবে, এসব বিষয়ে আমি ভাবতে চাই না। একটা ছবি নির্মাণের জন্য আমি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ হাতে পাই। আমার কাজ হলো, সেই পরিমাণ অর্থের মধ্যে ছবি প্রস্তুত করা আর তাকে মুক্তি দেওয়া।’ পরিচালকের মাথাব্যথা না থাকলেও প্রভাসের জন্য যে ‘সালার’ বেশ বড় চ্যালেঞ্জ, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।