বলিউডে অভিষেকের আগে থেকেই মা শ্রীদেবীর সঙ্গে বারবার তুলনা হয়েছিল জাহ্নবী কাপুরের। এখন অবশ্য বিটাউনে নিজের পরিচয় গড়তে পেরেছেন। আর সেই পরিচয়ের জোরে আজ একের পর এক দারুণ প্রকল্প এই তারকাকন্যার ঝুলিতে। আগামীকাল শুক্রবার হটস্টার-ডিজনিতে আসতে চলেছে জাহ্নবী অভিনীত ছবি ‘গুডলাক জেরি’। বৃষ্টিমুখর এক সন্ধ্যায় মুম্বাইতে প্রয়াত বলিউড অভিনেত্রী শ্রীদেবীর ভাগ্যলক্ষ্মী বাংলোতে জাহ্নবীর সঙ্গে আলাপচারিতা শুরু হয়েছিল ‘গুডলাক জেরি’ ছবি দিয়ে। এ ছবির নায়িকা বাস্তবে নিজে ভাগ্যে কতটা বিশ্বাসী? জবাবে জাহ্নবী বলেন, ‘আমি ভাগ্যের থেকে পরিশ্রমে বেশি বিশ্বাসী। দেখুন, ভাগ্য আমাদের হাতে নেই। আর এর ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। তাই আমরা শুধু পরিশ্রম করে যেতে পারি। আমার মতে, একটা মানুষের সফলতার পেছনে ৪০ শতাংশ ভাগ্য তো, ৬০ শতাংশ পরিশ্রম থাকে।’
এই ছবিতে জাহ্নবীকে এক বিহারি তরুণীর চরিত্রে দেখা যাবে। এ কারণে বিহারি ভাষা আর উচ্চারণের ওপর অনেক কাজ করতে হয়েছে তাঁকে। জাহ্নবী বলেন, ‘ছবির দুনিয়ায় পা রাখার পর এমন অনেক কিছু করতে হয়েছে, যা স্বপ্নেও কল্পনা করিনি। বিহারে কোনো দিন যাইনি। জেরির দুনিয়ার থেকে আমার দুনিয়া সম্পূর্ণ আলাদা। শহুরে মেয়ে হয়ে পর্দায় আমায় বিহারিকন্যা হয়ে উঠতে হয়েছে। ‘গুঞ্জন সাক্সেনা’ ছবির জন্য বিমান চালানো শিখতে হয়েছে। ‘মিলি’ ছবির জন্য প্রায় ১৩ ঘণ্টা ফ্রিজারে থাকতে হয়েছে। পাঞ্জাবের গ্রামে গিয়ে দুই মাসের মতো থেকেছি। আমাদের দেশকে চিনেছি, জেনেছি।’ ক্যারিয়ারের শুরু থেকে বারবার সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে জাহ্নবীকে। সমালোচনা এই তারকাকন্যা কীভাবে নেন, জবাবে তিনি বলেন, ‘গঠনমূলক সমালোচনাকে আমি খোলামনে স্বাগত জানাই। আর তার ওপর সঙ্গে সঙ্গে কাজ করতে শুরু করি। কেউ কেউ বলেছেন, ‘গুঞ্জন সাক্সেনা’ ছবির কোনো কোনো দৃশ্যে আমার এনার্জি একটু কম ছিল। তাই ‘গুডলাক জেরি’র ক্ষেত্রে আমি বিষয়টা মাথায় রেখেছিলাম।’
সারা আলী খানের সঙ্গে জাহ্নবীর বন্ধুত্বের কথাও উঠে এসেছিল এই আলাপচারিতায়। ‘গুডলাক জেরি’ ছবির ট্রেলার মুক্তির অনুষ্ঠানে এই ছবির প্রযোজক আনন্দ এল রাই বলেছেন যে সারা আর জাহ্নবী হৃদয়ের দিক থেকে অনেকটা এক। এ কথা শুনে জাহ্নবী মিষ্টি হেসে বলেন, ‘আমার মনে হয় তার জন্য আমরা আজ এত ভালো বন্ধু। আমার মনে হয়, সারা আমার অনুভূতি আর সবার থেকে অনেক বেশি অনুভব করতে পারে। আর আমিও তা-ই পারি। আমরা একে অপরের হৃদয় পড়তে পারি।’ বোন খুশির প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমার সব ব্যাপারে খুশি মতামত দেয়। আমার পোশাক থেকে সিনেমা, সব ব্যাপারে ওর থেকে টিপস নিই। আগে আমি ট্রলিংয়ে ভেঙে পড়তাম। কিন্তু এখন ওর কথামতো এসবে পাত্তা দিই না।’
শ্রীদেবী মারা যাওয়ার পর বনি কাপুরের সঙ্গে জাহ্নবীর সম্পর্কের রসায়নটা এখন অনেক বদলে গেছে। এই তারকাকন্যা বলেন, ‘বাবার সঙ্গে আমার সম্পর্কটা আরও গভীর হয়েছে। আর এখন আমি বাবার সঙ্গে আমার জীবনের সবকিছু ভাগ করে নিই।’
আগামী দিনে জাহ্নবী আরও ভালো ভালো ছবির অংশ হতে চান। এই বলিউডকন্যা বলেন, ‘রণবীর কাপুর, রণবীর সিং আর নওয়াজুদ্দিনের সঙ্গে কাজ করা আমার ইচ্ছার তালিকায় আছে। ঋষি কাপুরের সঙ্গে কাজ করার খুব ইচ্ছা ছিল। কিন্তু ইচ্ছাটা ইচ্ছাই রয়ে গেল।’