পরিবারের সঙ্গে বাড়িতে ফিরছিল পাকিস্তানি শিশুটি। হঠাৎ শিশুটি ট্রেন থেকে নেমে যায়। তখনই ট্রেন স্টেশন ছাড়ে। ভারতে আটকে পড়া সেই শিশু ফিরে যেতে চায় তার জন্মভূমিতে। সেই শিশুটিকে নিয়ে এগোতে থাকে সিনেমার গল্প। একসময় প্রধান চরিত্রের অভিনেতা সালমান খানের মতোই জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। বলা যায় ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ সিনেমায় সালমানের চেয়ে মুন্নির দিকেই ভক্তদের চোখ ছিল। সেই শিশুই হয়ে ওঠে সিনেমার মুখ্য চরিত্র। ভারতের সিনেমাপ্রেমীদের কাছে সেই শিশু হয়ে ওঠেন মুন্নি। আজ তাঁর জন্মদিন। সেই মুন্নি এখন কেমন আছেন?
তাঁর নাম হারশালি মালহোত্রা। তবে তিনি এখনো ভক্তদের কাছে মুন্নি নামে পরিচিত। তবে শিশু সেই হারশালিকে এখন অনেকেই প্রথম দেখায় চিনতে পারেন না। কারণ, ১০ বছর আগে শুটিং করা সেই মুন্নি এখন আর শিশু নেই। যে কারণে ‘আপনি কি মুন্নি’ ভক্তদের কাছে এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়া এখন নিত্যদিনের ঘটনা। হারশালির জন্ম ২০০৮ সালে, মুম্বাইয়ে।
শৈশবেই অভিনয়ে হাতেখড়ি। মাত্র ২১ মাস বয়সে এই অভিনেত্রী প্রথম বিজ্ঞাপনে নাম লেখান। পরে আরও কিছু বিজ্ঞাপনে তাঁকে দেখা গেছে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পেতে থাকেন ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ সিনেমা থেকে। এই সিনেমার পরে হারশালি আর খুব বেশি অভিনয় করেননি।
প্রায় এক দশক আগের কথা। তখন ‘বজরঙ্গি ভাইজান’–এর শিশু চরিত্রের জন্য অভিনয়শিল্পী খোঁজা হচ্ছিল। পরিচালক কবির খান একের পর অডিশন নিচ্ছিলেন। কিন্তু পছন্দমতো কোনো শিশুকে পাচ্ছিলেন না। পাঁচ হাজার শিশুর মধ্যে বেছে নেন হারশালিকে। সিনেমার অনুশীলনের পরে আরও ভালো করলেন তিনি। সালমানের সঙ্গে হয়ে গেল দোস্তি। শুটিং থেকেই সালমানকে মামা ডাকেন। এই সিনেমা থেকেই তাঁর ইচ্ছা, সালমানের মতো জনপ্রিয় তারকা হওয়া।
আইএমডিবিতে সিনেমাটির রেটিং ৮.১। ভারতের খুব কম সিনেমাই মুক্তির আট বছর পরও এমন রেটিংয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে। এই সিনেমার আলোচনায় বেশির ভাগ সমালোচক লিখেছেন, গল্পে হারশালির কোনো কথা না বলে অভিনয় করা সবার মন কেড়েছিল। তবে মজার ব্যাপার, সিনেমাটি মুক্তির পরে সব সাংবাদিকের কাছ থেকে প্রশ্ন শুনতে হয়েছে।
তখন হারশালি সবাইকে বলেছেন, ‘বাসায় সবাই বলে আমি নাকি বাচাল।’ বাসায় তিনি অতিরিক্ত কথা বলেন। অভিনয়ের সময়েই তাঁর জীবনের সবচেয়ে কম কথা বলেছেন। কবির খান টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছিলেন, তিনি তাঁর জীবনে যত শিশু দেখেছেন, তাদের সবার চেয়ে বেশি কথা বলা একজন হারশালি।
সিনেমা মুক্তির পরে রাতারাতি খ্যাতি পাওয়া মুন্নি পরে আর কোনো সিনেমায় সেভাবে অভিনয় করেননি। তাঁর পরিবার হারশালির পড়াশোনা নিয়ে কঠোর অবস্থানে—আগে পড়াশোনা, পরে অভিনয়।
বর্তমানে তাঁর বয়স ১৫ বছর। কত্থক নাচ শিখছেন। নিয়মিত নাচ কাভার করেন। সেগুলো ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রচার করেন। অভিনয়ে নিয়মিত না হলেও ফেসবুকে তিনি জনপ্রিয়। পড়াশোনার খবরসহ ব্যক্তিজীবনের নানা খবর তিনি ফেসবুকে ভক্তদের জানান। অভিনয়ে নিয়মিত না হয়েও তাঁর ফেসবুকে অনুসারীসংখ্যা এক কোটি।
সূত্র: টাইম অব ইন্ডিয়া