শূন্য থেকে বলিউডের শীর্ষে

তাঁকে এখনো শুনতে হয় ‘ওয়াসিপুরের গুন্ডা’। যিনি হেসেখেলে মানুষ খুন করতেন। শুধু একটি চরিত্র দিয়ে যাকে বাঁধা যায় না। তাঁর কথা মনে এলেই এলাকার গুন্ডা, রেস্তোরাঁর ওয়েটার, পকেটমার, এক্সট্রা আর্টিস্ট, নায়কের ভাই, গ্রামের সাংবাদিক—এমন অনেক চরিত্র সামনে চলে আসে। সেই অভিনেতা আজ পঞ্চাশে পা দিলেন। অভিনয়ের মেধা নিয়ে শূন্য থেকে বলিউডে পথচলা শুরু নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকীর। তিনি এখন বলিউডের শীর্ষ অভিনেতাদের একজন। ১৯৭৪ সালের ১৯ মে তাঁর জন্ম।
উত্তর প্রদেশের মুজাফফরনগরের ছোট্ট একটি শহর বুধানা। সেখান থেকেই অভিনয়ের নেশার বলিউডে আসেন। কাজের খোঁজে এসে প্রেমে পড়েন মঞ্চনাটকের। সেই প্রেম তাঁকে টেনে নিয়ে যায় ভারতের প্রখ্যাত নাটকের প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামায় (এনএসডি)।
ছবি: আইএমডিবি
আমির খান অভিনীত ১৯৯৯ সালের সিনেমা ‘সারফারোশ’-এ ছোট একটা চরিত্রে অভিনয় করেন। এলাকার ছোট এক গুন্ডার চরিত্রে দেখা যায় নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকীকে। সেই থেকেই শুরু।
এরপরে তাঁকে প্রশংসা এনে দেয় ইরফান খানের সঙ্গে জুটি হয়ে স্বল্পদৈর্ঘ্যে অভিনয়। তাঁরা অভিনয় করেন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘দ্য বাইপাস’-এ। বিএফআই লন্ডন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে মনোনয়ন পায়। কিন্তু বড় চরিত্র তখনো অধরাই ছিল।
২০১২ সালের ‘গ্যাংস অব ওয়াসিপুর’ সিনেমায় নাম লিখিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। তাঁর চরিত্রের নাম ছিল ‘ফয়জাল খান’। সিনেমাটি দিয়ে দর্শকদের কাছে ব্যাপক হারে পরিচিতি পেতে শুরু করেন। তাঁকে একজন সত্যিকারের গুন্ডা মনে হয়েছিল সিনেমায়।
সে বছরই তিনি নাম লেখান ‘কাহানি’, ‘পাতাং’, ‘পান সিং তুমার’, ‘গ্যাংস অব ওয়াসিপুর’, ‘চিটাগং’, ‘তালাশ’, ‘মিস লাভলি’ সিনেমায়। পরে আর পেছনে তাকাতে হয়নি।
. ‘মুন্না ভাই এমবিবিএস’ সিনেমায় পকেটমারের ভূমিকায় অভিনয় করেন। সিনেমায় একটি দৃশ্য ছিল। তখনো সিনেমার মূল অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ হয়নি। বড় বড় সিনেমায় ছোট চরিত্রে কাজ করলেও সেসব সিনেমার তারকাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ হতো না। এমন শত শত বঞ্চনাই এই চরিত্র অভিনেতাকে সাহস জুগিয়েছিল।
খ্যাতির পর বেড়ে চলে অভিনয়ের পথচলা। একে একে ‘মুনসুন শুটআউট’, ‘দ্য লাঞ্চবক্স’, ‘আনওয়ার কা আজব কিস্‌সা’, ‘বদলাপুর’, ‘বজরঙ্গি ভাইজান’, ‘মাঝি: দ্য মাউন্টেনম্যান’, ‘লায়ন’, ‘রইস’, ‘হারামখোর’, ‘মম’, ‘মান্টো’, ‘পেট্টা’, ‘রাত আকেলি হ্যায়’—নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকীর অভিনয়যাত্রা চলছেই। বর্তমান তাঁর হাতে রয়েছে ১২টি সিনেমা সিরিজের কাজ।