‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’ ছবির সফলতার পর রাতারাতি সর্বভারতীয় তারকা হয়ে উঠেছেন ‘জাতীয় ক্রাশ’ রাশমিকা মান্দানা। ধীরে ধীরে বলিউডেও নিজের প্রভাব বিস্তার করছেন এই দক্ষিণি নায়িকা। কিছুদিন আগে গুডবাই ছবির মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হয়েছে। ‘মিশন মজনু’তে এবার সিদ্ধার্থ মালহোত্রার সঙ্গে জুটি বেঁধে এলেন। ১৯ জানুয়ারি নেটফ্লিক্সে ছবিটি মুক্তি পেয়েছে। মুক্তির আগে মুম্বাইয়ের এক পাঁচতারা হোটেলে রাশমিকার মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি।
সাক্ষাৎকারের শুরুতেই উঠে এল ‘মিশন মজনু’ প্রসঙ্গ। রাশমিকা বলেন, ‘আগে গুডবাই মুক্তি পেলেও মিশন মজনু আমার প্রথম হিন্দি ছবি। তাই এ ছবির শুটিংয়ের শুরুতে ভয়ে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু দু-এক দিনের মধ্যে আমি টিমের সবার সঙ্গে সহজ হয়ে গিয়েছিলাম। পুরো টিম আমাকে আপন করে নিয়েছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘লক্ষ্ণৌতে শুটিং হয়েছিল। ওখানে পেট পুরে মিষ্টি খেয়েছি। সেটে মশার উপদ্রবে আমাদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিল। সব মশা যেন আমাকেই ঘিরে থাকত। সিদ্ধার্থ আমাকে “মচ্ছর অ্যাট্রাক্টর” বলে ডাকত।’
‘মিশন মজনু’তে রাশমিকা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এক মেয়ে। চরিত্রের জন্য প্রস্তুতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দৃষ্টশক্তিহীন মানুষের শারীরিক ভাষা বোঝার জন্য কঠিন প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে। চোখ বেঁধে আমার দিকে বল ছুড়ে দিত, শব্দ শুনে ধরতে হতো। প্রশিক্ষণের শুরুর দিকে খুব কষ্ট হতো। মাথা যন্ত্রণা করত। পরে অভ্যাস হয়ে যায়। সহ–অভিনেতার চোখের দিকে তাকিয়ে অভিনয় করা আমার স্বভাব। এই ছবিতে আমাকে অন্যদিকে তাকিয়ে অভিনয় করতে হয়েছে। এই প্রশিক্ষণ এতটাই জবরদস্ত হয়েছে যে না দেখে আমি এখন রান্না করতে পারি।’
‘শ্রীবল্লী’ নামে জনপ্রিয় রাশমিকা। ‘পুষ্পা’ ছবিতে তাঁর অভিনীত চরিত্রের নাম ছিল এটা। নিজের অভিনীত চরিত্রের নামে জনপ্রিয়তার প্রসঙ্গে এই দক্ষিণি নায়িকা বলেছেন, ‘ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই আমি আলাদা চরিত্রে অভিনয় করেছি। মানুষ এসব চরিত্রের নামে আমাকে চিনেছেন। তবে সব চরিত্র ছাড়িয়ে শ্রীবল্লী বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আমি চাই আমার আগামী ছবির চরিত্র যেন শ্রীবল্লীকেও ছাড়িয়ে যায়।’
আমি বলতে চাই কোনো মানুষই নিখুঁত নয়। অন্য চাকরিজীবীর মতো অভিনয় করাটা আমার কাজ, সব সময় সুন্দর দেখানো নয়
রাশমিকা যেখানে, পাপারাজ্জিরা সেখানে ধাওয়া করে। পাপারাজ্জিদের দৌরাত্ম্যে বলিউড তারকারা রীতিমতো বিরক্ত। রাশমিকা কতটা বিরক্তি বোধ করেন, জিজ্ঞেস করতেই মিষ্টি হেসে বলেন, ‘দক্ষিণে পাপারাজ্জি সংস্কৃতি নেই। এখানে আছে। তবে পাপারাজ্জিদের কারণে আমি মোটেও বিরক্ত না। আমরা যেমন আমাদের কাজ করি, তাঁরাও তাঁদের কাজ করছেন। তাই কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে পাপারাজ্জিদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করি। কিছুক্ষণের জন্য তাঁদের আনন্দ দিই। এটাই বড় কথা।’
পাপারাজ্জিদের কারণে সব সময় নিজেকে সুন্দর দেখানো কি চাপের মনে হয়, জবাবে তিনি বলেন, ‘সব সময় না। এটা আপনি চাপ হিসেবে নেবেন কি না, তা আপনার ওপর নির্ভর করছে। আমি বলতে চাই কোনো মানুষই নিখুঁত নয়। অন্য চাকরিজীবীর মতো অভিনয় করাটা আমার কাজ, সব সময় সুন্দর দেখানো নয়।’