টানা ৪১ দিনের লড়াইয়ের আজ সমাপ্তি হলো। অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন জনপ্রিয় কৌতুকশিল্পী রাজু শ্রীবাস্তব। দিল্লির এইমস হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে ভারতের বিনোদন দুনিয়ায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
এইমস হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল রাজু শ্রীবাস্তবের। গত ১০ আগস্ট হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন রাজু। দিল্লির এক হোটেলের ব্যায়ামাগারে শরীরচর্চা করার সময় হঠাৎ তাঁর বুকে যন্ত্রণা হয়। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় জনপ্রিয় এ তারকাকে। হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তিনি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। আর রাজুর মস্তিষ্ক কাজ করছিল না বলে জানা গিয়েছিল। ৪১ দিন ধরে তাঁকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছিলেন চিকিৎসকেরা। অবশেষে সব চেষ্টা ব্যর্থ করে ৫৮ বছর বয়সে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন রাজু।
রাজু শ্রীবাস্তবের অসুস্থতার খবরে ভেঙে পড়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে বলিউড তারকা অমিতাভ বচ্চন—রাজুর দ্রুত সেরে ওঠার জন্য প্রার্থনা করেছিলেন অনেকে। এমনকি রাজুর পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। ধীরে ধীরে সুস্থতার পথে এগোচ্ছিলেন এই শিল্পী। কিন্তু ১ সেপ্টেম্বর আবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। রাজুকে তখন ভেন্টিলেশনে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।
১৯৬৩ সালে কানপুরের একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম রাজুর। পরিবারের কেউ অভিনয়জগতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। নিজের জায়গা করে নিয়েছিলেন লড়াই করে। তাঁর বাবা রমেশ চন্দ্র শ্রীবাস্তব ছিলেন কবি।
তাঁকে ‘বলাই কাকা’ নামে চিনতেন স্থানীয় মানুষ। ছোটবেলা থেকেই রাজুর মধ্যে ছিল শিল্পীসত্তা। মানুষের চালচলন নকল করতে পারতেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই তিনি চেয়েছিলেন মানুষকে হাসাতে, কমেডিয়ান হতে। বলিউডে ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয় করেই কর্মজীবন শুরু করেছিলেন রাজু।
ভারতের ডিডি ন্যাশনালের জনপ্রিয় শো ‘টি টাইম মনোরঞ্জন’-এ রাজু অংশগ্রহণ করেছিলেন। তার পর থেকে তাঁকে আর পেছন ফিরে দেখতে হয়নি। ২০০৫ সালে ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান লাফটার’ শোতে সবার হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন এই শিল্পী।
বলিউডে তিনি পা রাখেন ‘তেজাব’ ছবির মাধ্যমে। এরপর তিনি ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’, ‘বাজিগর’, ‘বিগ ব্রাদার’সহ মোট ১৬টি ছবিতে কাজ করেছিলেন। ১৪টি টেলিভিশন শোতে কাজ করেছেন রাজু।
অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতির আঙিনাতেও সক্রিয় ছিলেন রাজু। ২০১৪ লোকসভার ভোটে কানপুর থেকে সমাজবাদী পার্টির প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি। সেই বছরই দল বদলে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন।