চলতি বছর হিন্দি সিনেমার জন্য বলা যায় দুঃস্বপ্নের বছর। বড় বাজেট, বড় তারকা নিয়েও একের পর এক সিনেমা ফ্লপ হয়েছে। ব্যতিক্রম বলা যায়, দক্ষিণ ভারতের সিনেমা। ২০২২ সালে ‘আরআরআর’, ‘বিক্রম’, ‘কেজিএফ ২’, ‘কানতারা’, ‘সীতা রমন’-এর মতো সুপারহিট ছবি উপহার দিয়েছেন দক্ষিণি সিনেমা দুনিয়া। তবে ওপরের সিনেমাগুলো তামিল, তেলেগু ও কন্নড় সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির। এই তিন ইন্ডাস্ট্রির মতো বড় হিট না হলেও একের পর এক দিয়েছে মালয়ালম সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিও। তবে অন্যদের সঙ্গে মালয়ালম সিনেমার পার্থক্য হলো, এখানে সুপারহিট হওয়া বেশির ভাগ সিনেমাই ছিল খুবই অল্প বাজেটে তৈরি। জেনে নেওয়া যাক, এমন সাত সিনেমার খোঁজ খবর।
হৃদয়ম
গত জানুয়ারিতে মুক্তির পর বক্স অফিসে ঝড় বইয়ে দেয় বিনিথ শ্রীনিবাসনের ‘হৃদয়ম’। রোমান্টিক ঘরানার এই সিনেমা তৈরি হয়েছে চেন্নাইয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ কেসি টেকে পড়তে যাওয়া কেরালার তরুণ অরুণকে নিয়ে। কলেজে পড়তে গিয়ে প্রেমে পড়া ও তারপরের নানা ঘটনা উঠে এসেছে সিনেমাটিতে। সমালোচকদের মতে, সিনেমার চিত্রনাট্যে বেশ কিছু গন্ডগোল থাকলেও কলেজ জীবনের সত্যিকারের গল্প মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। সেটা এতটাই যে মাত্র পাঁচ কোটি বাজেটের সিনেমাটি প্রায় ৭০ কোটির ব্যবসা করে।
আইএমডিবিতে সর্বোচ্চ রেটিং পাওয়া ভারতীয় সিনেমাগুলোর একটি এটি। ছবিটি নিয়ে কেরালার তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয়তার আরেকটি বড় কারণ ছিল গান। সংগীত পরিচালক হাশিম আবদুল ওয়াহাব কাজ ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হন। ছবির প্রধান তিন চরিত্রে অভিনয় করেন প্রণব মোহনলাল, কল্যাণী প্রিয়দর্শন, দর্শনা রাজেন্দ্রন। প্রথম দুজন তারকাসন্তান। প্রণব হলেন প্রখ্যাত অভিনেতা মোহনলানের পুত্র আর কল্যাণী হলেন পরিচালক প্রিয়দর্শনের কন্যা।
ছবির পরিচালক বিনিথ শ্রীনিবাসন নিজে ছিলেন কেসি টেকের ছাত্র। তাঁর বর্তমান স্ত্রী দিব্যা নারায়াননের সঙ্গে সেখানেই দেখা হয়। ‘হৃদয়ম’-এ নিজের হৃদয়ের গল্পই বলেছেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, সিনেমায় দেখানো বেশির ভাগ ঘটনাই তাঁর নয়তো তাঁর বন্ধুদের জীবনে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত।
জয় জয় জয় জয় হে
আগেরটির মতো এ ছবিতেও আছেন এ সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় মালয়ালম অভিনেতা দর্শনা রাজেন্দ্রন। তাঁর সঙ্গে এখানে দেখা গেছে বাসিল জোসেফকে। তবে বিপিন দাসের ছবিটি রোমান্টিক নয়, কমেডি-ড্রামা ঘারানার। গত ২৮ অক্টোবর মুক্তির পর প্রায় ৬ কোটি বাজেটের সিনেমাটি এ পর্যন্ত আয় করেছে ৪০ কোটির বেশি। তবে ছবিটিকে সমালোচকেরা খুব একটা পছন্দ করেননি।
মুকুন্দন উন্নি অ্যাসোসিয়েট
ব্ল্যাক কমেডি ঘরানার সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন ‘হৃদয়ম’ পরিচালক বিনিথ শ্রীনারায়ণ। তাঁর সঙ্গে আছেন সুরজ বেজারামুডু। অভিনব সুন্দর নায়কের প্রথম ছবিটি মুক্তির পরই সাড়া জাগায়। এর মধ্যেই সিনেমাটির তামিল রিমেক নিশ্চিত হয়েছে।
মেপ্পাদিয়ান
চলতি বছরের প্রথমার্ধের সবচেয়ে আলোচিত সিনেমাগুলোর একটি এটি। জানুয়ারিতে মুক্তির পর সমালোচকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া পায় কিন্তু বক্স অফিসে সাফল্য পায় ব্যাপক। ড্রামা ঘরানার এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন উন্নি মুকুন্দন, সাইজু কুরুপ। ছবিটি পরিচালনা করেন বিঞ্চু মোহন। ভারতের বাইরে চলচ্চিত্র উৎসবেও প্রদর্শিত হয়েছে সিনেমাটি।
সুপার সারন্যা
ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়তে যাওয়ার পর সারন্যার প্রেমে পড়ে এক শিক্ষক, সহপাঠী ও সিনিয়র। সে কাউকে পাত্তা দেয় না। এরপর কী হয়, তা–ই নিয়ে তৈরি হয়েছে গিরিশ এ ডি পরিচালিত কামিং অব এজ কমেডি সিনেমাটি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে মুক্তির পর ২৩ কোটি রুপির বেশি ব্যবসা করেছে ‘সুপার সারন্যা’। ছবির গান ‘সারু সারু’ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।
কুমান
ছবির পরিচালক যখন ‘দৃশ্যম’খ্যাত জিতু জোসেফ, তখন সেই ছবি হিট হবে না! চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে শুটিং শুরুর পর ৪ নভেম্বর মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। মিস্ট্রি থ্রিলার ঘরানার সিনেমাটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন আসিফ আলি। সমালোচকদের প্রশংসার সঙ্গে ১০ কোটি বাজেটের ছবিটি প্রায় পুরো টাকাই তুলে এনেছে। নিশ্চিতভাবেই সামনে আয় আরও বাড়বে।
নানা থান কেস কোদু
কয়েক বছর ধরেই সমালোচক–প্রশংসিত ও দর্শকনন্দিত সিনেমা উপহার দিয়ে আসছেন মালয়ালম অভিনেতা কুনচাকো বোবান। ‘টেক অফ’, ‘ভাইরাস’, ‘নয়াট্টু’, ‘পাদা’র পর এবার তাঁকে দেখা গেছে বিদ্রূপাত্মক সিনেমাটিতে। রথিশ বালকৃষ্ণান পরিচালিত সিনেমাটি গত ১১ আগস্ট মুক্তি পাওয়ার পর ৫০ কোটির বেশি ব্যবসা করে।