দিন পাঁচেক আগেও তুনিশা শর্মা ইনস্টাগ্রামে লিখেছিলেন, ‘জীবনের প্রতিটা মুহূর্তে খুশি থাকুন।’ সদা প্রাণচাঞ্চলে ভরপুর কুড়ি বছরের সেই মেয়ের মনেই যে ছাইচাপা আগুনের মতো বিষণ্নতা লুকিয়ে ছিল, তা কে জানত।
গতকাল শনিবার মুম্বাইয়ে একটি সিরিয়ালের শুটিংয়ের সেটের সাজঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর পর তুনিশার কয়েকটি হাস্যোজ্জ্বল ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যেমে। তাঁর মৃত্যু কিছুতেই মানতে পারছেন না পরিবারের সদস্য থেকে সহশিল্পীরা।
মাত্র ১৪ বছর বয়সে ‘ভারত কা বীর পুত্র: মহারাণা প্রতাপ’ সিরিয়াল শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় শুরু করেন তুনিশা। পরে ‘চক্রবর্তী অশোক সম্রাট’, ‘গাব্বার পুঞ্চওয়ালা’, ‘শের-ই-পাঞ্জাব: মহারাজা রঞ্জিত সিংহ’, ‘ইন্টারনেট ওয়ালা লাভ’-এর মতো টিভি ধারাবাহিকে অভিনয় করে বেশ পরিচিতি পেয়েছেন তিনি।
২০১৬ সালে ‘ফিতুর’ সিনেমায় ক্যাটরিনা কাইফের কিশোরীবেলার চরিত্রে অভিনয় করে বলিউডে অভিষেক ঘটে তুনিশার; পরে ‘দাবাং ৩’, ‘বার বার দেখো’ সহ বেশ কয়েকটি সিনেমায় দেখা গেছে তুনিশাকে। তবে সিনেমার চেয়ে সিরিয়ালেই তিনি বেশি জনপ্রিয়। এই সময়ে প্রচারের থাকা ‘আলি বাবা দুস্তানে কবুল’ সিরিয়ালে শেহজাদি মরিয়মের চরিত্রে দেখা যায় তুনিশাকে।
এর আগে নিজের বিষণ্নতা নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছিলেন তুনিশা। তিনি বলেন, ‘আমি খুব অল্প বয়স থেকে কাজ করছি। অল্প বয়সে বাবাকে হারিয়েছি। পরে আমার এক কাজিন ও দাদিকেও হারিয়েছি। আমি নিজের যত্ন নিতে ভুলে গেছি। সব সময় আমাকে একটা ভয় তাড়া করে বেড়ায়। আমার জীবনের রুটিন ভেঙে পড়ছিল, আমি চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছি, আমি বিষণ্নতায় ভুগছি।’
২০০২ সালে চন্ডিগড়ে জন্ম নেওয়া তুনিশাকে পরিবারের সদস্যরা ‘তুনো’ বলে ডাকডেন, অভিনয়ের পাশাপাশি নাচেও পারদর্শী ছিলেন তুনিশা। বেশ কয়েকটি মিউজিক ভিডিওতে দেখা গেছে তাঁকে। তিনি ক্রিকেট খেলা দেখতে ভালোবাসতেন, ভারতীয় ক্রিকেটার বিরাট কোহলির ভক্ত ছিলেন।
তুনিশাকে আত্মহত্যার প্ররোচনায় অভিযোগ তুলে করা মামলায় তাঁর সহ-অভিনেতা শেজান মোহাম্মদ খানকে আজ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শেজানের সঙ্গে তুনিশার প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে বিভিন্ন ভারতীয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে।