২ নভেম্বর শাহরুখের জন্মদিন উপলক্ষে ছিল বিশেষ আয়োজন। সে আয়োজনে বাংলাদেশ থেকেও আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন বেশ কয়েকজন শাহরুখ-ভক্ত। তাঁদেরই একজন তামজিদ ইসলাম জারির। কোলাজ
২ নভেম্বর শাহরুখের জন্মদিন উপলক্ষে ছিল বিশেষ আয়োজন। সে আয়োজনে বাংলাদেশ থেকেও আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন বেশ কয়েকজন শাহরুখ-ভক্ত। তাঁদেরই একজন তামজিদ ইসলাম জারির। কোলাজ

শাহরুখের জন্মদিনে বাংলাদেশি ভক্ত, কী দেখে এলেন তিনি

বিশ্বজুড়েই তারকাদের ভালোবেসে নানা পাগলামি করতে দেখা যায় ভক্তদের। জন্মদিনসহ বিশেষ দিনগুলোতে নানান আয়োজন করেন ভক্তরা। কিন্তু কজন তারকা এসবের খবর রাখেন! তবে এখানে সবার থেকে আলাদা একজন। তিনি শাহরুখ খান। ভক্তরা যেমন তাঁর জন্য ভালোবাসা উজাড় করে দেন, তিনিও প্রতিদান দিতে ভোলেন না। ২ নভেম্বর শাহরুখের জন্মদিন উপলক্ষে ছিল বিশেষ আয়োজন। সে আয়োজনে বাংলাদেশ থেকেও আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন বেশ কয়েকজন শাহরুখ-ভক্ত। তাঁদেরই একজন তামজিদ ইসলাম জারির। মুম্বাই থেকে ফিরে নাজমুল হকের কাছে নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন বাংলাদেশে শাহরুখ খানের ফ্যান ক্লাব ‘এসআরকে বাংলাদেশ সিএফসি’র অ্যাডমিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক তামজিদ।

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য আমাকে নিশ্চিত করা হয়। গত বছরও আমাদের ক্লাব থেকে কয়েকজন গেলেও আমার জন্য এবারই ছিল প্রথম যাওয়া। এরপর অপেক্ষার প্রহর যেন আর ফুরাচ্ছিল না। কখন আসবে নভেম্বরের ২ তারিখ। এরপর গত জুন মাসে ভারতীয় ভিসার জন্য আবেদন করি। এক মাসের অপেক্ষার পর জুলাইয়ে ভিসা পাই। এর পর থেকে এই যাত্রা নিয়ে আমার উচ্ছ্বাস বহুগুণে বেড়ে যায়। ৩১ অক্টোবর মুম্বাইয়ের উদ্দেশে দেশ ছাড়ি। সেদিন মুম্বাইয়ে পৌঁছানোর পর কোথাও না থেমে আমি সোজা চলে যাই মান্নাতের সামনে।

এসআরকে ডে
শাহরুখ স্যারের মান্নাতের দুই কিলোমিটারের মধ্যেই বান্দ্রার বালগন্ধর্ভ রং মন্দির অডিটরিয়াম। আমার হোটেলও ছিল এর এক কিলোমিটারের মধ্যেই। ১ নভেম্বর রাতে উত্তেজনায় একটুও ঘুমাতে পারলাম না। সারা রাত এপাশ-ওপাশ করে কেটে যায়। অবশেষে এল সেই প্রতীক্ষিত ২ নভেম্বর, শাহরুখ খানের জন্মদিন।

অনুষ্ঠান শুরুর আগে তামজিদ ইসলাম জারির। তামজিদের সৌজন্যে

দিনটি আমরা ভক্তরা উদ্‌যাপন করি ‘এসআরকে ডে’ হিসেবে। আমাকে ‘এসআরকে ডে’র পাস দেওয়া হয়। ভেন্যুতে পৌঁছাই বেলা একটার দিকে। ঘণ্টাখানেক পর অডিটরিয়ামে ঢুকি। অডিটরিয়ামে ঢোকার সময়টা আমি কখনো ভুলতে পারব না। ব্যাকগ্রাউন্ডে তখন বাজছে শাহরুখের ‘ম্যায় হু না’ সিনেমার গান ‘কিসকা হ্যায় হ্যায় তুমকো ইন্তেজার ম্যায় হু না’...আমার চোখ থেকে তখন পানি ঝরছিল। সময়টা যেন কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছিল না আমার।

প্রথমবার সামনে থেকে শাহরুখকে দেখা
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে মঞ্চে এলেন শাহরুখ খান। বলিউড বাদশাহকে সবাই যখন মঞ্চে প্রবেশ করতে দেখলাম, সে সময়টা বর্ণনা করা যাবে না। সবাই আবেগতাড়িত হয়ে যাচ্ছিলাম। অনুষ্ঠানের প্রতিটি সেকেন্ড থেকে শাহরুখ স্যারের বক্তৃতা উপভোগ করেছি আমরা। স্যার নতুন সিনেমার কথা বললেন, সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার কথা জানালেন। এর বাইরে অনেক জানা-অজানা কথা তুলে ধরেন তিনি।

তামজিদ ইসলাম জারিরের সেলফিতে মঞ্চে শাহরুখ। তামজিদের সৌজন্যে

এরপর জীবনের সেই সেরা মুহূর্ত এল, শাহরুখ স্যারের সঙ্গে গ্রুপ ফটো তোলার জন্য মঞ্চে ডাকা হয় আমাদের। স্যারের পাশে বসার আগে আমি তাঁর দিকে হাত বাড়িয়ে দিলাম, তিনি সঙ্গে সঙ্গে আমার হাত ধরলেন; মুহূর্তটি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। তারপর আমি তাঁকে বললাম, ‘স্যার, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি।’

তিনি উত্তর দিলেন, ‘বেঠ যাও (বসে যাও)।’ এরপর আমরা তাঁর সঙ্গে একটি গ্রুপ ছবি তুলি। যাওয়ার আগে আমি আবার আমার হাত বাড়িয়ে দিলাম এবং তিনি আবার আমার হাত ধরলেন।

উপহার হাতে তামজিদ ইসলাম জারির। তাসজিদের সৌজন্যে

এই মুহূর্তগুলো সত্যিই কখনো ভুলতে পারব না। এদিন রাত ৯টা পর্যন্ত শাহরুখ স্যার আমাদের সময় দিয়েছিলেন।

শাহরুখের কাছ থেকে পাওয়া উপহার
অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগে আমাদের সবাইকে শাহরুখ স্যারের পক্ষ থেকে খাবারের প্যাকেটের সঙ্গে দুটি উপহার দেওয়া হয়। একটি ব্লুটুথ নেকব্যান্ড (হেডফোন) এবং অপরটি শাহরুখের স্বাক্ষরসহ একটি ছবি। এ অনুষ্ঠানে যে মুহূর্তগুলো কাটিয়েছি, সেগুলো কখনো ভোলার নয়।