দক্ষিণি তারকা বিজয় দেবেরাকোন্ডা আইনি ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছেন। যত বিপত্তি তাঁর ‘লাইগার’ ছবিকে ঘিরে। এই ছবিতে বিদেশি মুদ্রা বিনিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। আর তাই তাঁকে গতকাল বুধবার ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) প্রশ্নবাণের মুখোমুখি হতে হয়েছিল।
গতকাল ইডি তলব করেছিল বিজয়কে। ৩৩ বছর বয়সী এই অভিনেতা সকাল আটটা নাগাদ ইডির দপ্তরে হাজির হয়েছিলেন। রাত আটটা পর্যন্ত চলে এই জেরা পর্ব। টানা ১২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁকে কী কী প্রশ্ন করা হয়েছে, এখনো তার খোলাসা হয়নি। তবে ইডির দপ্তর থেকে বের হওয়ার পর খোশমেজাজে দেখা গেছে বিজয়কে। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, ‘অতিরিক্ত জনপ্রিয়তার সঙ্গে সঙ্গে এসব প্রতিবন্ধকতা আসতেই থাকে। এটা খ্যাতিরই একটা অংশ। এখানে কিছু করার থাকে না। আমি এটাকে এক অভিজ্ঞতা হিসেবে নিয়েছি। আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি। আমি গিয়েছিলাম, আর তাদের সব প্রশ্নের জবাব দিয়েছি। আমি সব রকম সহযোগিতা করেছি।’
এবার জানা যাক, বিজয় আইনি ঝামেলায় কেন ফাঁসলেন। এ বছর আগস্টে মুক্তি পেয়েছিল প্যান ইন্ডিয়া ছবি ‘লাইগার’। এই ছবির মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হয়েছে বিজয়ের। তাঁর সঙ্গে ছবিতে জুটি বেঁধেছিলেন বলিউড নায়িকা অনন্যা পাণ্ডে। এদিকে অনন্যা আবার ‘লাইগার’ ছবির হাত ধরে দক্ষিণি ছবির দুনিয়ায় প্রথম পা রেখেছিলেন। পুরী জগন্নাথ পরিচালিত ছবিটিকে ঘিরে সবার প্রত্যাশা ছিল তুঙ্গে। কিন্তু ‘লাইগার’ সব প্রত্যাশা পূরণ করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়। তাই ফ্লপ ছবির মিছিলে সামিল হয়েছে বিজয়ের এই ছবি। ১২৫ কোটি বাজেটের ‘লাইগার’ দর্শককে হলমুখী করতে পারেনি।
ধর্মা প্রোডাকশনের ব্যানারে নির্মিত ছবিটি সর্বসাকল্যে ৬০ দশমিক ৮০ কোটি ব্যবসা করেছিল। খবর ছিল যে এই ছবির পর নির্মাতা পুরী জগন্নাথ প্রায় ভরাডুবি হয়ে গেছেন। আর তাই ছবির দুনিয়া থেকে তিনি আপাতত বিরতি নিয়েছেন। নির্মাতারা এই ছবির প্রচারণার জন্য মুড়ি–মুড়কির মতো টাকা উড়িয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে তাঁরা প্রচারণা করেছিলেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কোনো লাভ হয়নি। ১২৫ কোটি বাজেটে নির্মিত এই ছবিকে ঘিরে এখন নানান প্রশ্ন উঠেছে। ইডির অভিযোগ যে এই টাকা পুরোপুরি অবৈধ। আর তাই ‘লাইগার’ ছবির নির্মাতা থেকে শুরু করে নায়ককে ইডির দপ্তরে হাজির থাকতে হয়েছে। কিছুদিন আগে চিত্র নির্মাতা পুরী জগন্নাথ আর প্রযোজক চার্মি কাউরকে সমন পাঠিয়েছিল ইডি। এই দুই নির্মাতাকে ইতিমধ্যে ইডির প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে।
ইডির অভিযোগ যে এই ছবি নির্মাণের পেছনে বিদেশি মুদ্রা ঢালা হয়েছে। আর তাই ‘ফেমা’ (ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট) ভঙ্গ করার অভিযোগ উঠেছে এই ছবির নির্মাতাদের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, তেলেঙ্গানার এক বড়সড় রাজনৈতিক নেতা কোটি কোটি কালো টাকা এই ছবিতে বিনিয়োগ করেছেন। আর তাই আইনের জালে জড়িয়ে পড়েছে ‘লাইগার’। এখন দেখা যাক, কেঁচো খুঁড়তে কত কেউটে বের হয়।