‘সময় পার হয়ে গেলে কিন্তু আর মনে করাব না। পরের বার শুধু ঘটনাটাই দেখবে’—সালমান খানের উদ্দেশে ই–মেইলে এ হুমকি দিয়েছিলেন এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। আর তার পর থেকে প্রায় রাতের ঘুম হারাম হতে বসেছিল মুম্বাই পুলিশের। বলিউডের ভাইজানের ‘জান’ বাঁচাতে তারা কোমর বেঁধে নেমে পড়েছিল। এবার সেই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি পুলিশের জালে এসেছেন। এখন একটু হলেও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে খান পরিবার ও মুম্বাই পুলিশ প্রশাসনে।
গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই দলের এক সদস্য সালমানকে হত্যার হুমকি ভরা ই–মেইল করেছিলেন, তা জানা ছিল মুম্বাই পুলিশের। কিন্তু সেই ব্যক্তি কে, তা নিয়ে ধোঁয়াশায় ছিল পুলিশ। মুম্বাই আর যোধপুর পুলিশ একসঙ্গে তদন্ত শুরু করেছিল। অবশেষে পুলিশ সেই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিটির পরিচয় বের করেছে।
যোধপুরের লুনি এলাকার ২১ বছরের যুবক ধাকড় রাম বিষ্ণোই ই–মেইলটি পাঠিয়েছিলেন। গতকাল রোববার যোধপুর পুলিশ অভিযুক্ত ধাকড় রামকে মুম্বাই পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিল।
আর তারপর সেই যুবককে মুম্বাইতে আনা হয়েছে। জানা গেছে, এই অভিযুক্ত এর আগে প্রয়াত গায়ক সিধু মুসেওয়ালার পরিবারকেও একবার হুমকি দিয়েছিলেন। এ মামলার তদন্ত পাঞ্জাব পুলিশ করছে। এদিকে পাঞ্জাব পুলিশ সিধু মুসেওয়ালার হত্যার তদন্তের কাজে যোধপুরে গিয়েছিল। মুম্বাই পুলিশের তদন্তের কাজ সম্পূর্ণ হলে তারা ধাকড় রামকে পাঞ্জাব পুলিশের হাতে তুলে দিতে পারে বলে জানা গেছে।
প্রায় এক সপ্তাহ আগে ১৮ মার্চ সালমানকে এক হুমকির ই–মেইল দেওয়া হয়েছিল। মেইলটি এসেছিল গ্যাংস্টার গোল্ডি বরাড়ের পক্ষ থেকে। সালমানের ব্যবস্থাপক প্রশান্ত গুঞ্জলকারের ই–মেইল অ্যাকাউন্টে মেইলটি এসেছিল। এটি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রশান্ত মুম্বাইয়ের বান্দ্রা পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।
এ মামলার গভীরতা দেখে আর ভাইজানের সুরক্ষার কারণে বান্দ্রা পুলিশ আইপিসির ধারা ৫০৬ (২), ১২০ (বি), এবং ৩৪ অনুযায়ী গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই, গোল্ডি বরাড়, আর রোহিত বরাডের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ই–মেইলে লেখা ছিল, ‘গোল্ডি বরাড়, তোর বস মানে সালমানের সঙ্গে কথা বলতে চায়। সাক্ষাৎকারটা নিশ্চয় ও দেখে ফেলেছে। না দেখে থাকলে দেখে নিতে বলিস।
সব হিসাব–নিকাশের নিষ্পত্তি করতে হলে কথা বলতে বলিস। সময় থাকতে থাকতে জানিয়ে দিলাম। মুখোমুখি কথা বলবে কি না, সেটাও জানিয়ে দিস৷ সময় পার হয়ে গেলে কিন্তু আর মনে করাব না। পরের বার শুধু ঘটনাটাই দেখবে।’
ই–মেইলটি পাওয়ার পর মুম্বাই পুলিশের পক্ষ থেকে সালমান খানের নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও কঠিন করা হয়। মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় তাঁর বাসা গ্যালাক্সি আবাসনের বাইরে প্রচুর পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। এমনকি ‘কিসি কী ভাই কিসি কে জান’ ছবির শুটিং ছাড়া অন্য কোনো কাজে ভাইজানের বাইরে যাওয়ার অনুমতি ছিল না। এই হুমকি ভরা ই–মেইল পাওয়ার পরও সালমান ফুরফুরে ছিলেন বলে জানা গেছে।