রাশি খান্না
রাশি খান্না

বহুবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছি, কিন্তু এসব মনে রাখিনি: রাশি খান্না

পাঞ্জাবি কন্যা রাশি খান্না। দিল্লিতে বেড়ে ওঠা। কিন্তু দক্ষিণের জনপ্রিয় নায়িকা তিনি। ঝরঝরে তামিল, তেলেগু বলতে পারেন। সাক্ষাৎকারের শুরুতে এক গাল হেসে রাশি বলেন, ‘জানেন, হিন্দিতে কথা বলেই আমার বেড়ে ওঠা। কিন্তু এখন হিন্দি বলার সময় দক্ষিণি টান চলে আসে। বুঝুন কী অবস্থা। “ফরজি” করার আগে আমাকে নতুন করে হিন্দি শিখতে হয়েছে।’

দক্ষিণ জয়ের পর রাশি ধীরে ধীরে উত্তর জয়ের লক্ষ্যে নেমেছেন। গত বছর হটস্টার-ডিজনির হিন্দি ওয়েবসিরিজ ‘রুদ্র: দ্য এজ অব ডার্কনেস’-এর মাধ্যমে ওটিটির দুনিয়ায় পা রেখেছিলেন তিনি। সম্প্রতি তাঁকে শহীদ কাপুরের সঙ্গে ‘ফরজি’ সিরিজে দেখা গেছে। সামনে সিদ্ধার্থ মালহোত্রার সঙ্গে জুটি বেঁধে হিন্দি ছবি ‘যোদ্ধা’তে আসতে চলেছেন।

রাশি খান্না

দক্ষিণের পর এবার উত্তর জয়ের প্রসঙ্গে রাশি বলেন, ‘বলিউডে এই তো সবে শুরু করেছি। এখনো অনেকটা পথ বাকি। দক্ষিণের মানুষ আমাকে খুব ভালোবাসেন। আমি চাই, উত্তরের মানুষ আমাকে একইভাবে আপন করে নিক। আমাকে ভালবাসুক।’ এই দক্ষিণি নায়িকা বলেন যে ইন্ডাস্ট্রির বাইরে থেকে এসেও ১০ বছর এখানে টিকে থাকা তাঁর জন্য সবচেয়ে বড় ব্যাপার।

রাশি আরও বলেন, ‘অনেকবার অডিশনের সময় বলা হয়েছে যে আমি দেখতে সুন্দর, কিন্তু বহিরাগত বলে আমাকে ছবিতে নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, ছবি যদি ফ্লপ হয়ে যায়। নির্বাচন যদি প্রতিভার জোরে হয়, তাহলে আমাদের মতো বহিরাগতদের সুযোগ দেওয়া উচিত। ১০ বছর ধরে এসব দেখছি। বহুবার প্রত্যাখ্যানের মুখোমুখি হয়েছি। কিন্তু এসব মনে রাখিনি।’

হিন্দি ছবি ‘মাদ্রাজ ক্যাফে’ দিয়ে শুরু হয়েছিল রাশির ক্যারিয়ার। কিন্তু এরপর আর তাঁকে হিন্দি ছবিতে দেখা যায়নি। এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে বলেন, ‘মাদ্রাজ ক্যাফে’র পর দক্ষিণ থেকে প্রচুর ছবির প্রস্তাব এসেছিল। তাই দক্ষিণেই পুরোপুরি ব্যস্ত হয়ে পড়ি। আর তখন ক্যারিয়ার নিয়ে আমার সে রকম কিছু পরিকল্পনা ছিল না।’
রাশির ক্যারিয়ারের বয়স ১০ বছর পার হতে চলল। ১০ বছরে তাঁর মধ্যে অনেক বদলই এসেছে বলে মনে করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে রাশি বলেন, ‘অভিনেত্রী হিসেবে আমি নিশ্চয় আরও পরিপক্ব হয়ে উঠেছি। ক্যারিয়ার শুরু করার সময় অভিনয়ের অ আ ক খ জানতাম না। এখন ক্যামেরার সামনে অনেক স্বচ্ছন্দ। নিজের অভিনীত প্রতিটি চরিত্রের প্রতি সৎ থাকার চেষ্টা করি। একজন বাধ্য ছাত্রীর মতো আজও অভিনয়ের খুঁটিনাটি শিখে চলেছি।’

আর মানুষ হিসেবে কতটা বদলেছেন, জানতে চাইলে হেসে ফেললেন রাশি, ‘এখন আমার মধ্যে অনেক পরিপক্বতা এসেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধীরস্থির হয়ে উঠেছি। আগে জীবন বা ক্যারিয়ার নিয়ে সে রকম কিছু পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু এখন ক্যারিয়ারের প্রতি অনেক বেশি ফোকাস।’

‘সরদার’–এ রাশি খান্না

দক্ষিণ বনাম বলিউড বিভাজনের জন্য গণমাধ্যমকে দায়ী করে রাশি বলেন, ‘এই ভেদাভেদ অহেতুক সৃষ্টি করা হচ্ছে। আর মিডিয়াতে এসব নিয়ে বেশি শোরগোল। আমরা সবাই মিলেমিশে কাজ করছি। দক্ষিণের অভিনেতারা বলিউডে, আর বলিউডের অভিনেতারা দক্ষিণে কাজ করছেন। তাই এসব বন্ধ হওয়া উচিত।’
কথায় কথায় উঠে আসে বলিউডের পাপারাজ্জি সংস্কৃতির কথা। দক্ষিণে মোটেও এই সংস্কৃতি নেই। তবে রাশি স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে পাপারাজ্জিদের এই দৌরাত্ম্য তিনি মোটেও পছন্দ করেন না।

কোন বলিউড অভিনেতা আর পরিচালকের সঙ্গে কাজ করা ইচ্ছে? এই প্রশ্নের জবাব হেসে জানালেন, ‘জানেন, রাজামৌলি স্যার আর আমি একই বিল্ডিংয়ে থাকি। তাই রাজামৌলি স্যারের সঙ্গে দেখা হলেই তাঁর ছবিতে কাজ করার ইচ্ছে প্রকাশ করি। আমার এই ইচ্ছের তালিকাটা অনেকটা দীর্ঘ। সঞ্জয় লীলা বানসালির ছবিতে কে না কাজ করতে চায়। আমিও চাই। তবে রাজকুমার হিরানির ছবিতে কাজ করতে দারুণ ইচ্ছুক। আর বলিউডের রণবীর কাপুরের সঙ্গে কাজ করতে চাই। তবে শাহরুখ খান আমার অনেক বড় ক্রাশ। তাঁর সব ছবি আমার মুখে হাসি ফোটায়।’