কানপুর থেকে মায়ানগরী মুম্বাইয়ে এসেছিলেন তিনি অভিনেতা হবেন বলে। হয়েছেনও। আজ অমিত সিয়াল বলিউডের প্রতিষ্ঠিত অভিনেতাদের মধ্যে একজন। ইন্ডাস্ট্রির বাইরে থেকে এসেও ভিড়ে হারিয়ে যাননি তিনি। সম্প্রতি ইয়েলো বাস ছবিতে তাঁর অভিনয় আলোচনায় এসেছে। প্রথম আলোর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে অমিত শুরুতেই জানান ইয়েলো বাস ছবির কথা। অস্কারজয়ী প্রযোজক গুণিত মোঙ্গা এই ছবি প্রযোজনা করেছেন।
ইয়েলো বাস ছবির প্রসঙ্গে অমিত বলেন, ‘এই ছবির সঙ্গে গুণিত আর তনিষ্ঠা (চট্টোপাধ্যায়) এই দুই পরিচিত নাম জড়িয়ে আছে। ছবির চিত্রনাট্য শোনার আগেই তাঁদের নাম আমি শুনেছিলাম। গুণিত মানেই ভালো কোনো প্রকল্প। আর তনিষ্ঠার কাজ আমি আগে দেখেছি। অভিনেত্রী হিসেবে তুখোড়। এরপর চিত্রনাট্য পড়ে আমি আর “না” বলার জায়গায় ছিলাম না।’
অমিতকে ইনসাইড এজ, কলা, মির্জাপুর, মহারানির মতো সফল প্রকল্পগুলোয় দেখা গেছে। এরপর কেমন প্রস্তাব পাচ্ছেন, এর জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রস্তাব তো আসতেই থাকে। কিন্তু সবকিছু করা সম্ভব নয়। আমার থিওরি সাধারণ। কোনো গল্প যখন আমাকে নাড়া দেয়, তখন সেই প্রকল্প করতে আমি রাজি হই। তবে অনেক সময় অর্থের প্রয়োজনেও কাজ করেছি।’
‘সেটে যাওয়ার আগে আমি নিজেকে মনে মনে বলি যে আমাকে আমার সেরাটা দিতে হবে। প্রকল্পের চেয়ে আমি আমার চরিত্র নিয়ে বেশি ভাবি। কারণ, গোটা প্রকল্প নিয়ে ভাবা আমার কাজ নয়,’ যোগ করলেন অমিত।
ক্রমাগত নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করে এখন বিরক্ত অমিত। তাঁর ভাষ্যে, ‘সত্যি বলতে নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করতে করতে এখন আমি ক্লান্ত। তাই আমি বিরতি চাইছিলাম। এর জন্য অনেক প্রকল্প আমি ফিরিয়ে দিয়েছি। তবে এখন অন্য ধরনের প্রকল্পে কাজ করছি। আগামী দিনে আমাকে ব্যতিক্রমী নানা প্রকল্পে দেখতে পাবেন।’
ওটিটির হাত ধরেই অমিতের আজ এত পরিচিতি। কিন্তু সব অভিনেতাই বড় পর্দায় নিজেকে বেশি করে দেখতে চান। অমিতের কি একই বাসনা, একটু আনমনা হয়ে তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই। আমি আরও ছবিতে কাজ করতে চাই। কারণ, সিনেমার একটা আলাদা চমক আছে। বিশেষ করে বড় পর্দায় নিজেকে দেখার মজাই আলাদা। আমার অভিনীত দুটি ছবি মুক্তির অপেক্ষায় আছে। তবে জানি না, ছবি দুটো বড় পর্দায় না ওটিটিতে মুক্তি পাবে।’
ওটিটি প্রসঙ্গে এ অভিনেতা বলেন, ‘বলতে পারেন ওটিটি আমাদের মতো অভিনেতাদের নতুন জীবন দিয়েছে। আগে আমাকে মানুষ চিনতেন। কিন্তু ওটিটিতে অভিনয় করার পর আমার পরিচিতি আরও বেড়েছে।’
বলিউড ইন্ডাস্ট্রির বাইরে থেকে এসে অনেক সংগ্রামের পর আজ অমিত তাঁর জায়গা পাকাপাকি করেছেন। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, ‘শুরুতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। কান্না পেত। নিজেকে অসহায় লাগত তখন। কিন্তু হাল ছাড়িনি আমি। শত কষ্টের মধ্যেও আনন্দকে খুঁজে নিয়েছি আমি। আমাকে ইরফান খান একবার বলেছিলেন, “কখনো হাল ছেড়ো না।” তাঁর এই কথাই আমার মূল মন্ত্র।’ যদিও অমিত অতীতে বিশ্বাসী নন। তিনি বর্তমানকে নিয়ে চলতে ভালোবাসেন।