বলিউড তথা পৃথিবীজুড়ে যত শোবিজ অঙ্গন আছে, সবখানেই আছে হতাশা-চাপ আর টিকে থাকার নিরন্তর সংগ্রাম। এই সংগ্রাম করতে করতে কখনো কখনো জেঁকে বসে মানসিক অবসাদ। ঘটে করুণ অপমৃত্যুর ঘটনাও। বিষয়টি সবচেয়ে বেশি নাড়া দিয়েছিল, যখন বলিউডের তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতার অপমৃত্যুর খবর এসেছিল। সুশান্তের মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি তাঁর ভক্তরা। বলা হচ্ছিল, দীর্ঘ অবসাদ, টিকে থাকার লড়াই ও মাদকের কাছে হার মেনেছিলেন এই মেধাবী মানুষটি। শুধু তা–ই নয়, আরও আগে অর্থাৎ ২০১৩ সালে অপমৃত্যু হয়েছিল বলিউডের উঠতি অভিনেত্রী জিয়া খানের। এই অভিনেত্রীর মৃত্যুতেও অপমৃত্যু নিয়ে শঙ্কিত হয়ে উঠেছিল শোবিজ তারকা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। জিয়া খান বা সুশান্ত সিং রাজপুতের পরও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসছে তারকাদের ‘অপমৃত্যু’র খবর। সাম্প্রতিক সময়েও শোবিজ অঙ্গনে বেড়েছে অপমৃত্যুর ঘটনা।
এ বছরের জানুয়ারিতে আত্মহত্যা করেন ভারতীয় টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সেজাল শর্মা। ফেব্রুয়ারিতে অপমৃত্যুর এই তালিকায় যুক্ত হন সংগীতশিল্পী ও অভিনেত্রী মল্লিকা রাজপুতের নাম। ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের সুলতানপুরে নিজ বাড়ি থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। এরপর গত ১২ মে সড়ক দুর্ঘটনায় তেলেগু অভিনেত্রী পবিত্রা জয়রামের মৃত্যুর পর ভেঙে পড়েন অভিনেতা চন্দ্রকান্তও। ১৮ মে তেলেঙ্গানার অলকাপুরে নিজের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় তাঁর ঝুলন্ত দেহ।
এবার অপমৃত্যুর তালিকায় যুক্ত হলো আরও এক অভিনেত্রীর নাম। বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে অভিনেত্রী নূর মালবিকা দাসের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছে মুম্বাই পুলিশ। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, আত্মঘাতী হয়েছেন আসামের বাঙালি অভিনেত্রী। সম্প্রতি ডিজনি প্লাস হটস্টারের ওয়েব সিরিজ ‘দ্য ট্রায়াল’-এ নজর কেড়েছিলেন ৩৭ বছর বয়সী মালবিকা । সিরিজে যিশু সেনগুপ্ত, কাজলের মতো প্রথম শ্রেণির তারকাদের সঙ্গে কাজ করেছেন মালবিকা।
পুলিশ জানায়, সেদিন বাড়ির সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছিল অভিনেত্রীর দেহ। প্রতিবেশীরা বন্ধ বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। তালা ভেঙে অভিনেত্রীর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হয়েছে ময়নাতদন্ত। অভিনয়জগতে আসার আগে কাতার এয়ারওয়েজের একজন বিমানসেবিকা ছিলেন তিনি। জানা গেছে, অভিনেত্রীর বাড়ি থেকে তাঁর মুঠোফোন, ডায়েরি এবং বেশ কিছু ওষুধও উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই ফ্ল্যাটে নিজের পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন মালবিকা। সপ্তাহখানেক আগে আসামের গ্রামের বাড়িতে ফিরে যায় পরিবার। তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু অলোকনাথ পাঠক। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কেউ তাঁর মরদেহ নিয়ে যায়নি।
বেশ কিছু হিন্দি ওয়েব সিরিজ ও সিনেমায় কাজ করেছেন এই অভিনেত্রী। ‘সিসকিয়ান’, ‘ওয়াকম্যান’, ‘তিখি চাটনি’, ‘জাগন্য উপয়া’, ‘চার্মসুখ’, ‘দেখি উন্দেখি’, ‘ব্যাকরোড হাস্টল’-এর মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। অভিনেত্রী হতাশায় ভুগছিলেন নাকি মৃত্যুর পেছনে অন্য কারণ আছে, সেটিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।