‘আমার সুরিয়া,’ সহশিল্পী তথা দক্ষিণি তারকা সুরিয়াকে এভাবেই সম্বোধন করলেন ববি দেওল। গত মঙ্গলবার ‘কঙ্গুয়া’ ছবির সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়েছিলেন দুই তারকা।
আগামী ১৪ নভেম্বর মুক্তি পাবে সুরিয়া, ববি দেওল ও দিশা পাটানি অভিনীত ‘কঙ্গুয়া’। ছবি মুক্তির আগে সাধারণত নায়ক-নায়িকার রসায়ন নিয়ে আলোচনা হয়, তবে এবার আলাপ জমেছে নায়ক ও খলনায়কের রসায়ন নিয়ে। এই ছবির নায়ক সুরিয়া ও খলনায়করূপে আসতে চলেছেন ববি। মুম্বাইয়ের এক প্রেক্ষাগৃহে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দুই তারকার সঙ্গে ছিলেন দিশা পাটানি, সংগীত পরিচালক দেবী শ্রী প্রসাদসহ অনেকেই। তবে সব ছাপিয়ে ধরা পড়েছে সুরিয়া আর ববির রসায়ন।
‘কঙ্গুয়া’ করার কারণ ব্যাখ্যা করে ববি বলেন, ‘সুরিয়া আছে বলেই ছবিটি করেছি। সেটে তাঁর সঙ্গে যখন আমার প্রথমবার দেখা হয়, মনেই হয়নি যে আমরা প্রথমবার সাক্ষাৎ করছি। এত বড় তারকা হওয়া সত্ত্বেও সুরিয়া অত্যন্ত বিনয়ী। তিনি পরিবারকে খুব ভালোবাসেন। আমি আর সুরিয়া বেশির ভাগ সময় নিজেদের পরিবার নিয়ে কথাবার্তা বলতাম। আমার সঙ্গে তাঁর রসায়ন দুর্দান্ত। সুরিয়া কফির ব্যাপারে খুব শৌখিন।’
ববির কথা শেষ হওয়ার আগেই আবেগে তাঁর গলা জড়িয়ে ধরেন সুরিয়া। বলেন, ‘জানি না কী প্রতিক্রিয়া দেব।’ এরপর ববি আরও বলেন, ‘তিনি খুব ভালো কফি বানান। আমি একদিন তাঁকে জিজ্ঞেস করি যে কফি কোথা থেকে কেনেন। এরপর তিনি আমাকে কফি বিনস উপহার দিয়েছিলেন। চেন্নাইয়ে যখন শুটিং করছিলাম, তখন বেশ কিছুদিন আবহাওয়া ভালো ছিল না; কিন্তু তার মধ্যেই শুটিং করা এক অন্য ধরনের অভিজ্ঞতা ছিল।’
সুরিয়ার গলায়ও ঝরে পড়ছিল ববির প্রশংসা। এই দক্ষিণি তারকা বলেন, ‘প্রথমবার জানলাম, অন্য মায়ের থেকে ভাই পাওয়ার অনুভূতি কেমন হয়। আমার প্রিয় ভাইটি শুটিংয়ের সময় নিজের পরিবারের সঙ্গে কোনো উৎসব উদ্যাপন করতে পারেননি। টাকার কথা ভাবেননি।’
ববিকে নিয়ে সুরিয়া আরও বলেন, ‘রোদ আর ধুলার মধ্যে শুটিং করেছেন; কিন্তু কখনো তাঁকে অভিযোগ করতে শোনা যায়নি। ইউনিটের সবার মনে হয়েছে যে আমাদের পরিবারের সঙ্গে এক নতুন সদস্য যুক্ত হয়েছেন। তিনি এমন এক তারকা, যাঁকে দেখে মনে হয়, অনেক অনেক দূরে আছেন; কিন্তু তিনি যখন মাটিতে নেমে আসেন, তখন আমাদের ভালোবাসা আর উষ্ণতায় ভরিয়ে দেন। তাঁর কারণে এই ছবি আরও উচ্চতায় পৌঁছে গেছে।’
এই দক্ষিণি তারকা আরও বলেন, ববি দেওলের সামনে দাঁড়িয়ে সংলাপ বলাটা তাঁর জন্য মোটেও সহজ কাজ ছিল না।
‘কঙ্গুয়া’ প্রসঙ্গে সুরিয়া বলেন, ‘আমি সব সময় ভাবতাম যে ভারতে কখন ব্রেভহার্ট, দ্য লর্ড অব দ্য রিংস-এর মতো ছবি হবে। এ ছবিতে আমরা এমন কিছুই করার সুযোগ পেয়েছি।’
পরিচালক শিবার দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করে ভারতের জাতীয় পুরস্কারজয়ী এই অভিনেতা বলেন, এ ছবির মাধ্যমে দর্শক এমন এক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চলেছেন, যা আগে কখনো করেননি।
ছবির নায়িকা দিশা পাটানিও জানান তাঁর অভিজ্ঞতা, ‘এই দলের অংশ হওয়া আমার জন্য অনেক বড় সৌভাগ্যের বিষয়। সেটে যাওয়া আমার কাছে ওয়ার্কশপের মতো ছিল। রোজ কিছু না কিছু শেখার সুযোগ পেয়েছি, তুখোড় সব অভিনেতার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। সেটে আমরা একটা পরিবারের মতো হয়ে উঠেছিলাম।’
সুরিয়া ও ববির বিষয়ে দিশা বলেন, ‘সুরিয়া স্যার আমার দেখা সবচেয়ে বিনয়ী মানুষদের একজন। তাঁর কাছ থেকে যতটা পারি, শেখার চেষ্টা করেছি। আর ববি স্যার ভীষণ মিষ্টি একজন মানুষ।’