২০২৪ সালের ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল এসে গেছে। প্রতিবারের মতো এবারের নির্বাচনে একঝাঁক তারকা লড়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে কেউ বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন, আবার কেউবা হার মেনেছেন। একনজরে দেখে নেওয়া যাক কোন কোন তারকা জয়ী হয়েছেন। আর কোন কোন তারকা নির্বাচনী ময়দানে পরাজিত হয়েছেন।
এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রনৌত, হেমা মালিনী, শত্রুঘ্ন সিনহা, রাজ বব্বরসহ আরও অনেকে।
এই প্রথম নির্বাচনী ময়দানে নেমেছিলেন কঙ্গনা। তাই অনেকের চোখ ছিল তাঁর দিকে। রাজনীতিবিদ হিসেবে কঙ্গনা তাঁর শুরুটা বেশ ভালোই করলেন। হিমাচল প্রদেশের মান্ডি লোকসভা কেন্দ্রে ভারতীয় জনতা দলের প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। তাঁর বিপরীতে ছিলেন কংগ্রেস নেতা বিক্রমাদিত্য সিংহ। ৭৪ হাজার ৭৫৫ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন অভিনেত্রী।
চলচ্চিত্র জগতের তারকাদের মধ্যে সবচেয়ে বাজিমাত করেছেন অভিনেত্রী হেমা মালিনী। উত্তর প্রদেশের মথুরা আসনের বিজেপির টিকিট পেয়েছিলেন বলিউডের ‘ড্রিম গার্ল’। কংগ্রেস নেতা মুকেশ ধনগরকে তিনি ২ লাখ ৯৩ হাজার ৪০৭ ভোটে হারিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গের আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়তে নেমেছিলেন বলিউড অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা। তিনি বিজেপির নেতা এস এস আলুওয়ালিয়াকে ৫৯ হাজার ৫৬৪ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন।
টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেতা অরুণ গোভিল বিজেপির প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। দূরদর্শনের ‘রামায়ণ’ ধারাবাহিকে তিনি প্রভু রামের চরিত্রে অভিনয় করে সবার হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন। আজও যে তাঁর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে তা লোকসভা নির্বাচনে প্রমাণিত। অরুণ গোভিল উত্তর প্রদেশের মেরট আসন থেকে জয়ী হয়েছেন।
অভিনেতা তথা নেপথ্যকণ্ঠী সুরেশ গোপী কেরালার ত্রিশুর কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন। তিনি বিজেপির প্রার্থী হয়ে নির্বাচন লড়েছিলেন। সুরেশ কমিউনিস্ট দলের নেতা বি এস সুনীল কুমারকে ৭৫ হাজার ৬৮৬ ভোটে পরাজিত করেছেন।
বিজেপি নেতা মনোজ তিওয়ারি উত্তর-পূর্ব দিল্লি কেন্দ্রে কংগ্রেস নেতা কানহাইয়া কুমারকে হারিয়েছেন। মনোজ ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭৭৮ ভোটের ব্যবধানে কানহাইয়া কুমারকে হারিয়েছেন।
‘লাপাতা লেডিস’ ছবির কারণে অভিনেতা রবি কিষাণের নাম এখন সবার মুখে মুখে। তিনি বিজেপির প্রার্থী হয়ে উত্তর প্রদেশের গোরখপুর কেন্দ্রে দাঁড়িয়েছিলেন। সমাজবাদী দলের নেত্রী কাজল নিষাদকে তিনি ১ লাখ ৩ হাজার ৫২৬ ভোটে পরাজিত করেছেন।
টালিউড অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ পশ্চিমবঙ্গের যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের টিকিট পেয়েছিলেন। এই অভিনেত্রী বিজেপির অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়কে ২ লাখ ৫৮ হাজার ২০১ ভোটে হারিয়েছেন।
নব্বইয়ের দশকের টালিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শতাব্দী রায় তৃণমূল দলের প্রার্থী হয়ে নির্বাচনী ময়দানে নেমেছিলেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম কেন্দ্রের প্রার্থী ছিলেন। শতাব্দী ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬৫০ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। এই কেন্দ্রে তাঁর বিপরীতে ছিলেন বিজেপির দেবতনু ভট্টাচার্য।
‘দিদি নম্বর ওয়ান’ সঞ্চালক ও অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় আর এক অভিনেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ৭৬ হাজার ৭৫৩ ভোটে পরাজিত করেছেন। তাঁরা দুজনে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি কেন্দ্রের প্রার্থী ছিলেন।
রচনা তৃণমূলের হয়ে নির্বাচন লড়েছিলেন। আর লকেট ছিলেন বিজেপির প্রার্থী। এ ছাড়া জোড়া ফুলের প্রার্থী হয়ে জয়ী হয়েছেন অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন অভিনেত্রী জুন মালিয়া। তিনি তৃণমূলের টিকিট পেয়েছিলেন। বিজেপির হেভিওয়েট প্রার্থী ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পালকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন জুন।
এবারও পশ্চিমবঙ্গের ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন তারকা অভিনেতা ও প্রযোজক দেব। তিনি ১ লাখ ৮২ হাজার ৮৬৮ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। দেবের বিপরীতে বিজেপির হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়।
এদিকে বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা রাজ বব্বর পরাজিত হয়েছেন। তিনি হরিয়ানার গুরগাঁও কেন্দ্রে কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। রাজ বব্বর বিজেপি নেতা রাও ইন্দ্রজিৎ সিংয়ের কাছে ৭৫ হাজার ০৭৯ ভোটে পরাজিত হয়েছেন। এ ছাড়া ভোজপুরি তারকা পবন সিং পরাজিত হয়েছেন।