বলিউডে ৩৩ বছর পার করে ফেলেছেন রাভিনা ট্যান্ডন। কিছুদিন আগে ডিজনি-হটস্টারের সিরিজ কর্মা কলিং-এ দেখা গেছে তাঁকে। মুম্বাইয়ের একটি পাঁচতারা হোটেলে সম্প্রতি অভিনেত্রীর মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি
প্রতারণা, প্রতিহিংসা আর বিশ্বাসঘাতকতা নিয়ে রুচি নারেনের সিরিজ ‘কর্মা কলিং’। এই সিরিজে রাভিনা প্রতিহিংসার কথা বলেছেন। বাস্তবে প্রতিহিংসায় কতটা বিশ্বাসী, জানতে চাইলে অভিনেত্রীর জবাব, ‘ব্যক্তিগত জীবনে আমি প্রতিহিংসায় বিশ্বাসী নই। যদি কেউ ক্ষতি করে, আমি ক্ষমা করে দিই। কিন্তু কখনো তা মন থেকে মুছে ফেলি না। আমার মতে, ন্যায়-অন্যায় বলে যদি কিছু থাকে, তাহলে মানুষ তার কর্মফল নিশ্চয় ভোগ করবে।’ রাভিনা জানান, তিনি কাজে বিশ্বাসী। তাঁর মতে, ‘যেমন কর্ম তেমন ফল।’
মেয়ে রাশাকে জন্ম দেওয়ার পর মাতৃত্বের যন্ত্রণা প্রথম অনুভব করেছিলেন রাভিনা। রাশার প্রসঙ্গ আসতেই একটু আনমনা হয়ে তিনি বলেন, ‘রাশা জন্মানোর প্রথম রাতে উপলব্ধি করেছিলাম যে আমি নিজের বাবা-মায়ের সঙ্গে যা যা করেছিলাম, রাশা আমার সঙ্গে সেই রকম আচরণ করলে আমার কেমন লাগবে।
রেগে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিতাম। বাবা-মাকে না বলে গাড়ির চাবি নিয়ে বেরিয়ে যেতাম। কত যে জ্বালিয়েছি তাদের। একেই বোধ হয় “কর্মা কলিং” বলে (সশব্দ হেসে)। রাশা জন্মানোর রাতে মাকে ফোন করে আমি ক্ষমা চেয়েছিলাম।’
রাশার অভিনয়জগতে আসার প্রসঙ্গে রাভিনা বলেন, ‘আমার মেয়ে এবার অভিনয়জগতে পা রাখতে চলেছে। তার মানে এই নয়, তার জীবনের সব সিদ্ধান্ত আমি নেব। নিজের সন্তানদের আমি কখনোই অতিরিক্ত আগলে রাখি না। কারণ, পড়ে গেলেই উঠতে শিখবে, তাই ওদের পড়ে যেতে দিন। একজন অভিভাবক হিসেবে সন্তানদের শেখাতে হবে কোনটি ঠিক, কোনটি ভুল। এরপর তারা তাদের পথে হাঁটবে। বাবা-মায়ের যে মূল্যবোধ আর শিক্ষায় আমি বড় হয়ে উঠেছি, আমি আমার সন্তানদের বড় করার ক্ষেত্রে সেসব প্রয়োগ করেছি।’
জীবনে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে গেছেন রাভিনা। তবে জীবনের সব পর্যায়ে বাবা-মাকে পাশে পেয়েছেন অভিনেত্রী। তিনি বলেন, ‘জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়ে বাবা-মায়ের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি শক্তি পেয়েছি। বাবাকে খুব মিস করি। তার দেওয়া ঘড়ি আমার সব সময়ের সঙ্গী। এখনো আমার হাতে ঘড়িটা আছে। ঘড়িটা পরলে মনে হয়, বাবা আমার সঙ্গেই আছে।’
রাভিনা এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, ‘আমার কঠিন সময়ে যাঁরা পাশে ছিলেন না, তাঁদের ধন্যবাদ জানাই। কারণ, তাঁরা পাশে ছিলেন না বলেই নিজেকে আরও বেশি করে প্রমাণ করার তাগিদ অনুভব করেছিলাম। মানুষ সহজে কোনো কিছু পেয়ে গেলে, তার মূল্য বোঝে না। যখন আমাকে কেউ সুযোগ দিত না, তখন আমি শক্তি আর আত্মবিশ্বাসকে হাতিয়ার বানিয়ে লড়াই করেছি। তাই আমার এই সফলতার কৃতিত্ব নিজেকেও দিতে চাই।’