বিদ্যা বালান। এএফপি
বিদ্যা বালান। এএফপি

‘আমরা সম্পর্ককে হাটের মধ্যে নিয়ে আসি বলে জটিলতা বাড়ছে’

‘দো অউর দো পেয়ার’ ছবিতে বিদ্যা বালানের অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে। বিশেষ করে, পর্দায় তাঁর সঙ্গে প্রতীকের দুরন্ত রসায়ন মুগ্ধ করেছে সিনেমাপ্রেমীদের। মুম্বাইয়ের একটি পাঁচ তারকা হোটেলে বিদ্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি

‘শেরনি’, ‘শকুন্তলা দেবী’, ‘জলসা’ ইত্যাদি ছবিতে দাপুটে চরিত্রে দেখা গেছে বিদ্যা বালনকে। তবে দো অউর দো পেয়ার ছবিতে যেন অন্য এক বিদ্যাকে দেখা গেল। হাসি, রাগ, মান-অভিমান, প্রতারণা, পরকীয়া, রোমান্স—সব মিলিয়ে এই ছবি। অনেক দিন পর সিরিয়াস চরিত্র ছেড়ে বড় পর্দায় রোমান্টিক চরিত্রে দেখা গেল অভিনেত্রীকে। ছবিতে তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্রতীক গান্ধী ও সন্ধিল রামামূর্তি।

বিশেষ করে, পর্দায় তাঁর সঙ্গে প্রতীকের রসায়ন মুগ্ধ করেছে সিনেমাপ্রেমীদের। সাক্ষাৎকারের শুরুতেই উঠে আসে তাঁর এই ছবির কথা। অনেক দিন পর রোমান্টিক-কমেডি ছবিতে অভিনয় করতে কেমন লাগল?

বিদ্যার জবাব, ‘১০ বছর পর রোমান্টিক ছবিতে অভিনয় করলাম। এখনকার ছবিতে শুধু হিংসা আর খুনখারাবি। প্রেমের ছবি খুব একটা করা হয় না। আমি কমেডি ছবিতে কাজ করতে চাই।’

বিদ্যা বালান। এএফপি

বিদ্যা জানান, এখন তাঁকে বিনোদনমূলক ছবি বেশি টানে। তবে তিনি সব সময় এমন চরিত্র বেছে নেন, যে চরিত্রে তিনি আগে অভিনয় করেননি। এ সময়ের সিনেমা নিয়ে বিদ্যা একরাশ বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, ‘দর্শক হিসেবে এখনকার কনটেন্ট আমার একঘেয়ে লাগে। সব ছবি একই ধরনের মনে হয়। দর্শক হিসেবে আমি অন্য রকম স্বাদ নিতে চাই।’

বিদ্যার কথায়, এখনকার বৈবাহিক সম্পর্ক থেকে প্রেম হারিয়ে যাচ্ছে। তাই এখন বিচ্ছেদের সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। তিনি মনে করেন, স্বামী-স্ত্রীর একে অপরকে সময় দেওয়া জরুরি। চিত্রনির্মাতা সিদ্ধার্থ রায় কাপুরের সঙ্গে বিদ্যার ১২ বছরের বেশি দাম্পত্যজীবন। নিজের সফল বৈবাহিক সম্পর্কের প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, ‘আমরা একে অপরের সঙ্গে সময় কাটাই। ঘুরতে যাই। একসঙ্গে সিনেমা দেখি। সারা দিন কী ঘটল, তা দিনের শেষে একে অপরের সঙ্গে ভাগ করে নিই। স্বামী-স্ত্রীর উচিত পরস্পরের প্রতি নিজেদের অনুভূতি সততার সঙ্গে প্রকাশ করা। আমাদের মধ্যেও ভুল বোঝাবুঝি হয়। তবে কথা বলে তা মিটিয়ে নিই। আর আমি অত রাখঢাক করতে পারি না। মনে যা আসে তা খোলাখুলি বলে দিই।’

বিদ্যার মতো অভিনেত্রীর থেকে সব সময় সবার প্রত্যাশা অনেক বেশি থাকে। এ প্রত্যাশা কী তাঁকে কোথাও চাপে ফেলে? অভিনেত্রী জানালেন, একদমই না। তাঁর কথায়, ‘আমার থেকে দর্শকের প্রত্যাশা বেশি, এ বিষয়কে আমি উপভোগ করি। প্রত্যাশাকে চাপ হিসেবে নিলে কাজটাকে আর উপভোগ করতে পারব না। সব সময় চেষ্টা করি নিজের সেরাটা দেওয়ার।’

‘দো অউর দো পেয়ার’ সিনেমার পোস্টার থেকে

বিদ্যার মতে, দাম্পত্য সম্পর্ক ভাঙনের পেছনে সামাজিক মাধ্যমের একটা বড় ভূমিকা আছে। তাঁর কথায়, ‘এখানে একজনের সঙ্গে আরেকজনের তুলনা টানা হয়। এমনকি সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ তুলনা চলে আসে। অপরকে দেখাতে চাই যে আমরা কতটা সুখী। শুধু স্বামী-স্ত্রী নয়, যেকোনো সম্পর্ককে ব্যক্তিগত রাখাই ভালো। আমরা সম্পর্ককে হাটের মধ্যে নিয়ে আসি বলে জটিলতা বাড়ছে।’
আজকের প্রজন্মের ভালোবাসা প্রসঙ্গে বিদ্যা বলেন, ‘ভাগ্যিস, আমি এখন একা নই। সত্যি বলতে, আজকালকার প্রেম আমার বোধগম্যের বাইরে। আজকের প্রজন্ম সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি দিতে ভয় পায়।’