গায়ের রং নিয়ে কটুকথা শুনতে হয়েছে, এখন তিনি শীর্ষ তামিল নায়িকা

তামিল অভিনেত্রী ঐশ্বরিয়া রাজেশের জীবনটা আর দশ অভিনেত্রীর চেয়ে আলাদা। নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে ঐশ্বরিয়া মাত্র আট বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছেন। ঐশ্বরিয়ার গায়ের রং তথাকথিত সিনেমার নায়িকাদের মতো নয় বলে বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। তবু তিনি হাল ছাড়েননি, চড়াই-উতরাই পেরিয়ে নিজের যোগ্যতা দিয়েই তামিল সিনেমায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। আজ ১০ জানুয়ারি জন্মদিনে তাঁর জীবনে আলো ফেলা যাক।
২০২০ সালে টেড টকে দেওয়া বক্তৃতায় নিজের জীবনের গল্প বলেছিলেন ঐশ্বরিয়া রাজেশ। তিনি বলেন, ‘নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে আমার জন্ম। আমি যেখানে বেড়ে উঠেছি, সেই জায়গাকে মানুষ “বস্তি” বলে। আমি তিন ভাই ও মা-বাবার সঙ্গে চেন্নাইয়ের একটি হাউজিং বোর্ড অ্যাপার্টমেন্টে বাস করতাম। আট বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছি। ১২ পেরোনোর আগেই দুই ভাইকে হারিয়েছি। মা আমাকে আগলে রেখেছেন। সেই সময় আমাদের পরিবারকে সহযোগিতা করার মতো কেউ ছিল না।’
ছবি: ঐশ্বরিয়া রাজেশের ইনস্টাগ্রাম থেকে
‘মায়ের উৎসাহে আমি অভিনয়ে এসেছি। ক্যারিয়ারের শুরুতে আমি একটা সিরিয়ালে কাজের প্রস্তাব পেয়েছিলাম। ১২ ঘণ্টা কাজ করেও পারিশ্রমিক ছিল খুবই কম, সেটা দিয়ে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকা কঠিন। মা বললেন, “সিনেমায় ভালো পারিশ্রমিক পাওয়া যায়, সিনেমা করতে পার।” সিনেমায় কাজ খুঁজতে গিয়ে গায়ের রং নিয়ে কটুকথা শুনতে হয়েছে আমাকে। আমি আবার তামিল ভাষায় কথা বলতাম, ফলে বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছি,’ বলেন ঐশ্বরিয়া।
তিনি বলেন, ‘কয়েকজন পরিচালক আমাকে বলেন, “তুমি নায়িকার মতো নও।” কৌতুক চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। তবে আমি সেই চরিত্রগুলো করতে চাইনি। একটি ভালো চরিত্র পাওয়ার স্বপ্ন ছিল আমার। “আট্টাকাঠি” সিনেমায় ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পাই। সিনেমাটি দর্শকেরা খুব পছন্দ করেছেন।’
সিনেমায় কাজ করতে এসে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন ঐশ্বরিয়া রাজেশ। তিনি বলেন, ‘নিপীড়কদের কোনো ছাড় নেই। আমি জোরালোভাবে নিপীড়ককে প্রতিহত করেছি। আমি চাই, প্রত্যেক নারীই নিপীড়কদের প্রতিহত করুক।’
এক যুগের ক্যারিয়ারে তামিল সিনেমার পাশাপাশি মালায়লম ও তেলেগু সিনেমায়ও দ্যুতি ছড়িয়েছেন ৩৪ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী।
‘রিপাবলিক’, ‘ওয়ার্ল্ড ফেমাস লাভার’, ‘কাকা মুতাই’, ‘গ্রেট ইন্ডিয়ান কিচেন’সহ বেশ কয়েকটি আলোচিত সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। সাউথ ইন্ডিয়ান মুভি অ্যাওয়ার্ডস, ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড সাউথ, তামিলনাড়ু স্টেট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডসহ বেশ কিছু পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।