এর বেশি আর কী চাইতেন

চলতি বছরটা দুর্দান্ত যাচ্ছে আলিয়া ভাটের। অভিনেত্রী যদি কখনো আত্মজীবনী লেখেন, নিশ্চিতভাবেই ২০২২ সাল সেখানে বিশেষ জায়গাজুড়ে থাকবে। এপ্রিলে রণবীর কাপুরের সঙ্গে বিয়ে। এর মাস দুই মাস পরেই জানান, তিনি মা হতে চলেছেন। ব্যক্তিগত জীবনের মতো পেশাগত জীবনেও সময়টা দারুণ যাচ্ছে। কিছুদিন আগে হলিউড প্রজেক্ট শেষ করলেন। ‘গাঙ্গুবাই কাঠিয়াবাড়ি’, ‘আরআরআর’ দুটি সুপারহিট ছবি মুক্তি পেয়েছে। সামনে নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেতে চলেছে তাঁর অভিনীত ও প্রযোজিত ছবি ‘ডার্লিংস’। অভিনেত্রীর প্রযোজনা সংস্থা ইটারনাল সানশাইনের প্রথম প্রজেক্ট এটি। এ ছাড়া সেপ্টেম্বরে মুক্তির অপেক্ষায় আছে আলিয়ার বহুল প্রতীক্ষিত ছবি ‘ব্রহ্মাস্ত্র’। ছবিতে প্রথম দেখা যাবে ‘রণলিয়া’ জুটিকে। সব মিলিয়ে আলিয়া ভাট কথা বলেছেন প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধির সঙ্গে। মুম্বাইয়ের এক পাঁচ তারকা হোটেলের সেই সাক্ষাৎকারে ছিলেন আরও কয়েকজন সাংবাদিক।

নির্ভেজাল আড্ডার শুরুতেই আলিয়া উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন চলতি বছর পাওয়া একের পর এক সুখবর নিয়ে, ‘এ বছর একের পর এক সুখবর এসেছে। প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করছি। নিজেকে ভালো রাখাটাই আমার লক্ষ্য। কাজের মধ্যেই আমি ভালো থাকি। চুপ করে এক জায়গায় বসে থাকতে পারি না। ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত কাজ করে যাব।’ সাক্ষাৎকারে আলিয়া এসেছিলেন সাবেকি পোশাকে। পরম তৃপ্তিতে চাট খেতে খেতে কথা বলছিলেন। আলিয়া জানালেন, এখন কড়া ডায়েট মানছেন না। তবে এমনিতে স্বাস্থ্যকর খাবারই তিনি বেশি পছন্দ করেন। মুচকি হেসে আলিয়া বলেন, ‘এখন একটু–আধটু জিভকে প্রশ্রয় দিচ্ছি। কিছু খেতে মন চাইলে বিন্দাস খাচ্ছি। এই এখন যেমন খাচ্ছি চাট। দইচাট, পানিপুরি—যা যা মন চাইছে, খাচ্ছি। তবে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খেয়ে বোর হয়ে গেছি।’

তবে দুনিয়ার যে প্রান্তেই যান আলিয়া, ‘ডাল-চাউল (ডাল-ভাত)’ তাঁর সবচেয়ে পছন্দের খাবার। তিন মাস ধরে হলিউড ছবি ‘হার্ট অব স্টোন’-এর শুটিংয়ের জন্য লন্ডনে ছিলেন তিনি। ওই সময় সবচেয়ে বেশি মিস করেছেন ‘ডাল-চাউল’। পরে একজন অবশ্য তাঁকে ঘরোয়া খাবার বানিয়ে খাওয়াতেন। আলিয়া সেটা তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করেছেন।
শ্রাবণের এই আড্ডায় অবধারিতভাবে উঠে আসে রণবীর ও আলিয়ার দাম্পত্য জীবনের টুকটাক কথাও। জানাতে চাওয়া হয় সেই বহুল চর্চিত প্রশ্নটাও—বিয়ের পর রণবীর কতটা বদলেছেন? উত্তরে আলিয়া বলেন, ‘দীর্ঘ সময় ধরে যে রণবীরকে চিনি, সেই রণবীর একই আছে। বিয়ের পর তার মধ্যে বিশেষ কোনো বদল আসেনি। তবে সে এখন আমার একটু বেশি খেয়াল রাখছে। সব সময় সাপোর্ট করে। রণবীর সঙ্গে থাকলে পরিবেশটাই বদলে যায়। মন ভালো হয়ে যায়।’

আলিয়া ভাট ও রণবীর কাপুর

অভিনেতা রণবীর সম্পর্কেও একঝুড়ি প্রশংসা শোনা গেল আলিয়ার কণ্ঠে, ‘রণবীরকে কখনো দেখিনি চরিত্রের গভীরে প্রবেশ করার জন্য অতিরিক্ত কিছু করতে, আলাদাভাবে কোনো প্রস্তুতি নিতে। কিন্তু ক্যামেরার সামনে রণবীর পুরোপুরি সেই চরিত্রের মতো হয়ে ওঠে। আমার প্রস্তুতির ধরনও রণবীরের মতো। রিহার্সাল একদম ভালো লাগে না। রণবীরের সঙ্গে কাজ করতে যে কেউ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। ইন্ডাস্ট্রিতে যাঁরা তার সঙ্গে কাজ করেছেন, প্রত্যেকে একই কথা বলবেন। সেটে ওর মধ্যে তারকাসুলভ ব্যাপারটা নেই। রণবীর সব সময় সময়মতো সেটে আসে।’

প্রথমবার প্রযোজক হয়েই ‘ডার্লিংস’-এর মতো ভিন্নধর্মী ছবি উপহার দিতে চলেছেন আলিয়া। প্রযোজক হিসেবে নিজের অভিষেকের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এমন সব প্রজেক্ট আনতে চাই, যা মানুষ দেখতে আগ্রহী হবেন। এ ব্যাপারে বাবার (মহেশ ভাট) থেকে অনেক পরামর্শ নিয়েছি। প্রযোজনা সংস্থার ব্যাপারে বোন শাহিনও সাহায্য করছে। অভিনয়শিল্পী হিসেবে এত দিন শুধু নিজের চরিত্র নিয়ে মাথা ঘামাতাম। এখন ক্যামেরার পেছনের নানা বিষয় সম্পর্কে জানতে হয়। আমার প্রযোজনা সংস্থার মাধ্যমে নবীন অভিনেতা, লেখক, পরিচালকদের সুযোগ দেব।’

‘হার্ট অব স্টোন’-এর শুটিংয়ে গ্যাদতের সঙ্গে

আলিয়ার হলিউড প্রজেক্ট ‘হার্ট অব স্টোন’ নিয়ে অনেক দিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে। বলিউডের সঙ্গে হলিউডের কাজের পার্থক্য নিয়ে তিনি বলেন, ‘হলিউডে কাজের ধরন আলাদা। ওখানে দুরন্ত গতিতে কাজ হয়। টানা ১০ ঘণ্টা শুটের মধ্যে কোনো বিরতি দেওয়া হয় না। সেটে গাল গাদতের মতো হলিউড তারকাসহ সবাই আমার খেয়াল রাখতেন। গালের থেকে সব সময় উষ্ণ ব্যবহার পেয়ে এসেছি। খুবই হাসিখুশি প্রাণবন্ত মানুষ তিনি।’