ভারতের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক কল্পনা লাজমি আর নেই। আজ রোববার ভোররাত সাড়ে চারটায় মুম্বাইর আম্বানি (কোকিলাবেন ধীরুভাই) হাসপাতালে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। অনেক দিন ধরে কিডনির ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করেছেন তিনি। সঙ্গে ছিল লিভারের সমস্যা। ডায়ালাইসিস চলছিল। তিন বছর ধরে হাসপাতাল আর বাড়ি করেছেন কল্পনা লাজমি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর। তাঁর ভাই দেব লাজমি পিটিআইকে জানিয়েছে, আজ দুপুরে মুম্বাইর ওশিয়ারা মহাশ্মশানে কল্পনা লাজমির শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
কল্পনা লাজমির চিকিৎসার সহায়তা করার জন্য এগিয়ে আসেন আমির খান, সালমান খান, করণ জোহর, আলিয়া ভাট, সোনি রাজদান, নীনা গুপ্তাসহ বলিউডের আরও অনেক তারকা।
কল্পনা লাজমি ছিলেন ‘রুদালি’ ছবির পরিচালক। এই ছবির জন্য তিনি দেশে ও বিদেশে দারুণ প্রশংসিত হন। জিতেছেন অসংখ্য পুরস্কার। ছবির নায়িকা ডিম্পল কাপাডিয়া পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এ ছাড়া ‘দারমিয়া: ইন বিটুইন’, ‘দামন: আ ভিকটিম অব ম্যারিটিয়াল ভায়োলেন্স’ ছবি তৈরি করেছেন। ‘দামন: আ ভিকটিম অব ম্যারিটিয়াল ভায়োলেন্স’ ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান নায়িকা রাভিনা টেন্ডন। প্যারালাল ছবির জগতে তিনি যুগান্তকারী ছিলেন। তাঁর ছবিগুলো সময় ও সমাজের নিরিখে প্রাসঙ্গিক ছিল। ২০০৬ সালে তিনি শেষ পরিচালনা করেন ‘চিঙ্গারি’। এই ছবিতে অভিনয় করেন মিঠুন চক্রবর্তী, সুস্মিতা সেন ও অর্জুন শাওনি।
গুরু দত্তের ভাইয়ের মেয়ে কল্পনা লাজমির মা চিত্রকর ললিতা লাজমি। শুরুতে তিনি শ্যাম বেনেগালের সহকারী পরিচালক ছিলেন। কল্পনা লাজমির ছবিতে ফুটে উঠেছে ছক ভাঙার কথা। বারবার উঠে এসেছে বহু না ছোঁয়া বিষয়। পুরুষতান্ত্রিক সমাজকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। তাঁর ছবিতে শোনা গেছে তৃতীয় লিঙ্গের কথা। ব্যক্তিগত জীবনেও প্রথা ভেঙেছেন। বয়সে নিজের থেকে ২৮ বছরের বড় ভূপেন হাজারিকার সঙ্গে তাঁর লিভ-ইন নানা গসিপের জন্ম দেয়। ভূপেন হাজারিকার অসুস্থতার জন্য নিজের ক্যারিয়ারকে দূরে সরিয়ে রাখেন তিনি।