ভারতের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘ভারতরত্ন’ প্রত্যাখ্যান করেছে প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী প্রয়াত ভূপেন হাজারিকার পরিবার। ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে গত ২৬ জানুয়ারি ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে এই সম্মান প্রদানের ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু গতকাল সোমবার ভূপেন হাজারিকার ছেলে তেজ ভূপেন হাজারিকা জানিয়ে দেন, তাঁর পরিবার এই ভারতরত্ন গ্রহণ করবে না। নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদ করে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে তেজ হাজারিকা বলেছেন, ‘আমি এনআরসি নিয়ে আসামের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানি। ভূপেন হাজারিকা সব সময় আসামের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আন্দোলন করেছেন। আমরা তাই এই সম্মান গ্রহণ করতে পারব না। আমরা জানিয়ে দিতে চাই, ভারত সরকার তাঁকে যে মরণোত্তর সম্মান প্রদান করতে চেয়েছে, তা আমাদের পরিবার গ্রহণ করবে না। নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
ভূপেন হাজারিকার জন্ম আসামের সাদিয়ায় ১৯২৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। ৮৫ বছর বয়সে ২০১১ সালের ৫ নভেম্বর মুম্বাইয়ের কোকিলাবেন ধীরুভাই হাসপাতালে তিনি মারা যান। ভূপেন হাজারিকা আসামের মানুষ হলেও তিনি ছিলেন বাঙালিদের ভালোবাসার শিল্পী। তিনি প্রচুর বাংলা গান গেয়েছেন। অসমিয়া, বাংলা, হিন্দিসহ বিভিন্ন ভাষায় গান গেয়েছেন তিনি। সিনেমায় তিনি বহু নেপথ্য সংগীতও গেয়েছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ও প্রচুর গান গেয়েছেন তিনি। তাঁর গান শুনে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ২০১১ সালে ‘মুক্তিযুদ্ধ পদক’ প্রদান করে।
ভূপেন হাজারিকা ছিলেন সংগীতশিল্পী, সুরকার, গীতিকার, চলচ্চিত্রকার এবং কবি। তিনি সংস্কৃতি অঙ্গনের ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান দাদাসাহেব ফালকে পদক পেয়েছেন ১৯৯২ সালে। ২০০৯ সালে পেয়েছেন আসামরত্ন পদক, ১৯৭৭ সালে ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মশ্রী, রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মভূষণ পেয়েছেন ২০০১ সালে, পদ্মবিভূষণ পেয়েছেন ২০১২ সালে। আরও পেয়েছেন সংগীত নাটক একাডেমি পদকসহ বহু পুরস্কার ও পদক।