“এক প্যায়ার কা নাগমা হ্যায়...”।
লতা মঙ্গেশকরের এই গান রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে বসে গান রানু মণ্ডল। মোবাইলে ধারণ করা হয় সেই ভিডিও। আর মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল! রাতারাতি রানু মণ্ডল তারকা বনে গেলেন। তারপর উড়োজাহাজে চড়ে গেলেন মুম্বাই। সেখান থেকে রেকর্ডিং স্টুডিওতে। ‘হ্যাপি হার্ডি অ্যান্ড হির’ ছবির জন্য হিমেশ রেশমিয়ার সুরে ‘তেরি মেরি কাহানি’ শিরোনামে একটি গান রেকর্ড করলেন। কেউ কেউ তাঁর গলার সুরকে তুলনা করছেন লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে। ভাইরাল হওয়ার আগেও সবাই তাঁকে ডাকতেন, ‘লতাকণ্ঠী রানু পাগলি’।
যাঁর গান গেয়ে রাত পার হওয়ার আগেই তারকা হলেন, প্লেব্যাক করলেন, কী প্রতিক্রিয়া সেই লতা মঙ্গেশকরের? আইএএনএসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘যদি আমার নাম আর গান কারও জীবনে মঙ্গল বয়ে আনে, তবে তা আমার পরম প্রাপ্তি।’ তবে শুধু এটুকু বলেই শেষ করেননি, ৮৯ বছর বয়সী এই শিল্পী রানু মণ্ডলকে দিয়েছেন তাঁর জীবন থেকে শেখা উপদেশমালা। নকল যে তাঁর মোটেই পছন্দ নয়, তা অকপটে জানিয়েছেন।
লতা বলেছেন, ‘কারও গান নকল করে গাওয়া—শুধু এটুকুর ওপর ভরসা করে বেশি দূর এগোনো যায় না। নতুনেরা আমার, কিশোরদার (কিশোর কুমার), রফি সাহেবের (মোহাম্মদ রাফি), মুকেশ ভাইয়ার অথবা আশার (আশা ভোসলে) গান গায়। অল্প সময়ের জন্য কিছু মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। কিন্তু সেই জনপ্রিয়তা টেকসই হয় না। তাই নিজের মৌলিক গান থাকতে হবে। আমাদের চিরসবুজ গান গেয়ে তো বেশি দূর এগোনো যাবে না। শুরুর জন্য ঠিক আছে। তবে তারপরই নিজের ওপর ভর করে নিজের গানের সন্ধান করতে হবে। নিজস্ব ধরন তৈরি করতে হবে।’
রাতারাতি তারকা হওয়ার বিষয়টিও খুব একটা পাত্তা পেল না লতা মঙ্গেশকরের কাছে। তিনি বলেন, ‘কত মানুষই তো আমার গান কত সুন্দর গায়। সাফল্যের সেই প্রথম ঝলকের পর তাদের কতজনকে মনে রাখে মানুষ? আমি কেবল সুনিধি চৌহান আর শ্রেয়া ঘোষালকেই চিনি।’ তবে কীভাবে সত্যিকারের তারকা হওয়া যায়? তার উত্তরে লতা মঙ্গেশকর নিজের বোন আশা ভোসলের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘যদি আশা নিজের গায়কি, ধরন তৈরি করতে না পারত, তবে চিরকাল আমার ছায়ার আড়ালে থাকত। একটা মানুষের নিজস্বতা তাকে কত বড় তারকা বানাতে পারে, তার আদর্শ উদাহরণ সে।’
ইতিমধ্যে ‘তেরি মেরি কাহানি’, ‘আদাত’ ও ‘আশিকি ম্যায় তেরি’ নামে তিনটি গান রেকর্ড করেছেন রানু মণ্ডল। আরও অসংখ্য গানের প্রস্তাব জমা রয়েছে রানু মণ্ডলের ঝুলিতে।