সুশান্তের বাড়ি হবে জাদুঘর, টাকায় হবে ফাউন্ডেশন

হাসিতে তাঁর এতটুকু কার্পণ্য ছিল না। উদারভাবে মন খুলে হাসতেন সুশান্ত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
হাসিতে তাঁর এতটুকু কার্পণ্য ছিল না। উদারভাবে মন খুলে হাসতেন সুশান্ত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

সুশান্ত সিং রাজপুত রাতের আকাশের তারাদের খুব ভালোবাসতেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা টেলিস্কোপে চোখ রেখে তারা দেখতেন। মহাকাশ, মহাবিশ্ব আর সীমাহীন আকাশ নিয়ে তুমুল আগ্রহের কারণেই কি না, সময়ের আগেই তারা হয়ে ভেসে গেলেন অনন্তে, সীমাহীনে। মৃত্যুর ১৩ দিনের মাথায় এল সুশান্তের পরিবারের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি। এখানে বলা হয়েছে, সুশান্তের বাড়িকে তাঁর স্মৃতি জাদুঘর বানিয়ে ভক্তদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। সুশান্তের অর্থ খরচ হবে সিনেমা, বিজ্ঞান ও ক্রীড়া বিভাগের তরুণ মেধাবীদের সাহায্যের জন্য, যে বিষয়গুলো সুশান্তকে সবচেয়ে বেশি টানত। এভাবেই সুশান্তের পরিবার সুশান্তকে বাঁচিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এখন সুশান্ত কেবলই ছবি আর স্মৃতি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

 বিবৃতি শুরু হয়েছে এভাবে, ‘চিরবিদায় সুশান্ত। এই মানুষটা সারা বিশ্বের কাছে ছিল তারকা-সুশান্ত, আর আমাদের কাছে ছিল কেবলই গুলশান। সে ছিল মুক্ত এক হৃদয়। মানুষের সঙ্গে কথা বলতে ভালোবাসত, আর ছিল অবিশ্বাস্য মেধাবী। রাস্তার ধূলিকণা থেকে পৃথিবীর বাইরের ওই মহাবিশ্ব, সমস্ত বিষয়ে তার তুমুল আগ্রহ। সে বিরতিহীনভাবে স্বপ্ন বুনতে ভালোবাসত। তার ছিল এক সিংহের হৃদয়। হাসিতে তার এতটুকু কার্পণ্য ছিল না। উদারভাবে মন খুলে হাসত। সে আমাদের পরিবারের গর্ব আর অনুপ্রেরণা। তার সবচেয়ে প্রিয় ছিল টেলিস্কোপ। সেই টেলিস্কোপে চোখ রেখে সে দূর আকাশের নক্ষত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক করত। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পেরিয়ে যেত, তারাদের দেখা শেষ হতো না তার।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা কীভাবে মেনে নিই যে আমরা আর কখনো ওর হাসির শব্দ শুনতে পারব না। আমরা কীভাবে মনকে বোঝাই যে আমাদের দুই চোখ আর ওর জ্বলজ্বলে দুই চোখ দেখে উদ্ভাসিত হতে পারব না। আমরা কীভাবে একজন আরেকজনকে সান্ত্বনা দিই, যখন ও আর কোনো দিন বিজ্ঞান নিয়ে অদ্ভুত অদ্ভুত সব আলাপ করে আমাদের নাজেহাল করে দেবে না। ও আর নেই, আর ফিরবে না, এই ক্ষতি কোনো কিছু দিয়ে পোষানো যায়? যায় না। আমাদের পরিবারের হৃদয় খালি হয়ে গেল।’

ভাগনির সঙ্গে সুশান্ত সিং রাজপুত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

শেষ ভাগে ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সারা বিশ্ব থেকে সুশান্তভক্তদের ভালোবাসায় আমরা আপ্লুত। আমরা ঠিক করেছি, ওর সম্পত্তি দিয়ে ওর নামে একটা ফাউন্ডেশন বানাব। এই ফাউন্ডেশন থেকে সিনেমা, বিজ্ঞান ও খেলাধুলার ক্ষেত্রে সম্ভাবনাময় মেধাবীদের বৃত্তি দেওয়া হবে। পাটনার রাজীবনগরে ওর যে বাড়িটা আছে, সেটাকে ওর স্মরণে একটা জাদুঘর বানাব। সেখানে ওর সবকিছু থাকবে। ব্যবহার্য জিনিস, ব্যক্তিগত সংগ্রহ, টেলিস্কোপ আর হাজার হাজার বই। ওর ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম আর টুইটার পেজও সচল রাখা হবে, যাতে ওর স্মৃতি ওর ভক্তদের মধ্যে বেঁচে থাকে। ssrliveson@gmail.com ঠিকানায় ওর সম্পর্কে ভক্তরা আমাদের যেকোনো বিষয়ে জানাতে পারেন। ওকে নিয়ে তাঁদের কোনো ভাবনা বা পরামর্শও ভাগ করে নিতে পারেন।’