সুশান্ত সিং রাজপুত
সুশান্ত সিং রাজপুত

সুশান্তের জীবনের শেষ ছয় দিন

দেড় বছরের বেশি সময় ধরে শারীরিক, মানসিক নানা সমস্যায় ভুগছিলেন সুশান্ত। এক মাসে ৫০টির বেশি সিম বদলেছিলেন। এই কর্মকাণ্ড সুশান্তের মানসিক অবস্থারই বহিঃপ্রকাশ। ফিল্মফেয়ার, ই টাইমস, মিড ডে, আনন্দবাজার—এসব সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে সুশান্তের মৃত্যুর সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্নজনের জবানবন্দি প্রকাশিত হয়েছে। সেখান থেকে সুশান্তের মৃত্যুর শেষ ছয় দিন সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

দেড় বছরের বেশি সময় ধরে শারীরিক, মানসিক নানা সমস্যায় ভুগছিলেন সুশান্ত

লকডাউনের শুরু থেকেই রিয়া চক্রবর্তী ছিলেন সুশান্তের বাড়িতে। মাঝেমধ্যে রিয়ার ভাই শৌভিকও এসে থাকতেন সেই বাড়িতে। ৮ জুনের আগে থেকেই সুশান্ত আর রিয়ার সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না। এদিন রাতে রিয়া সুশান্তের পরিচারিকাকে তাঁর ব্যাগ গুছিয়ে দিতে বলেন। তখন খুব রেগে ছিলেন রিয়া। রাতের খাবার টেবিলে দেওয়া ছিল। না খেয়েই ভাইকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি।

লকডাউনের শুরু থেকেই রিয়া চক্রবর্তী ছিলেন সুশান্তের বাড়িতে।

সুশান্তের বাড়িতে দুটি আলমারিভর্তি জামাকাপড় ছিল রিয়ার। এক আলমারির কাপড় নেন। আর বলেন, অন্য সময় এসে বাকি যা কিছু আছে, সব নিয়ে যাবেন। রিয়া নিজের বাড়িতে ফিরে ইনস্টাগ্রাম থেকে সুশান্তের সব ছবি ডিলিট করেন। আর হোয়াটসঅ্যাপে মহেশ ভাটকে জানান, তিনি সুশান্তের সঙ্গে ব্রেকআপ করেছেন। মহেশ তাঁর উত্তরে রিয়াকে নিজের সন্তান উল্লেখ করে লেখেন, ‘যা করেছ তার জন্য সাহসের দরকার হয় রিয়া। আর পেছনে ফিরে তাকিয়ো না।’ রিয়া তাঁর উত্তরে লিখেছেন, ‘আপনার কাছ থেকেই শক্তি আর সাহস পাই। আপনি আমার জীবনের আশীর্বাদ।’
পুরোটা সময় চুপ করে নিজের ঘরে বসে ছিলেন সুশান্ত।

রিয়া চলে যাওয়ার পর ওই রাতেই সুশান্তের বোন মিতু সিং আসেন

রিয়া চলে যাওয়ার পর ওই রাতেই সুশান্তের বোন মিতু সিং আসেন। ওই মুহূর্তে ভেঙে পড়েছিলেন সুশান্ত। ৯ থেকে ১২ তারিখ, এই ৪ দিন মিতু সুশান্তের সঙ্গেই ছিলেন। এই চার দিন সুশান্ত বোনের সঙ্গে ডাইনিং টেবিলে খেয়েছেন। চুপচাপ থেকেছেন। মিতু সিং চলে যাওয়ার সময় পরিচারিকাকে বলেন সুশান্তের খেয়াল রাখতে। আর জানান যে শিগগির ফিরে আসবেন।

এই চার দিন সুশান্ত বোনের সঙ্গে ডাইনিং টেবিলে খেয়েছেন

বোন চলে যাওয়ার পর থেকে ঘরেই থেকেছেন সুশান্ত। ১৩ তারিখ সকালে খিচুড়ি রান্না করে দেওয়া হলে খাননি সুশান্ত। এরপর ডাবের পানি, আমের জুস ও ফল দেওয়া হলে কেবল জুস খান সুশান্ত। বোন চলে যাওয়ার পর থেকেই বারবার ছাদে যাচ্ছিলেন সুশান্ত। সারা দিনে তেমন কিছু না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন তিনি।

প্রতিদিনের মতো সেদিনও খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠেন সুশান্ত

১৪ তারিখে আবার আসার কথা ছিল মিতু সিংয়ের। প্রতিদিনের মতো সেদিনও খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠেন সুশান্ত। জিম করেন। বেদানার জুস নিয়ে ঘরে ঢোকেন। ৯টার দিকে দুপুরে কী রান্না হবে জিজ্ঞেস করা হলে কোনো সাড়া দেননি। ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ডাকাডাকি করে দরজা ধাক্কা দিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তখন বাড়ির কর্মচারীরা চাবি খুঁজে না পেয়ে ভয় পেয়ে মিতুকে ফোন দেন। মিতু এসে পুলিশকে ফোন দেন। চাবিওয়ালা ডেকে দরজা খোলা হয়। ভেতরে সুশান্তের মৃতদেহ পাওয়া যায়।