বলিউড

সুচিত্রা সেন: কেন নিজেকে নিয়ে অহংকার করতেন তিনি

বিনোদন প্রতিবেদকঢাকা
পর্দায় যাঁর উপস্থিতি মনে করিয়ে দেয় আবহমান বাঙালি নারীর কথা। তিনি ভক্তদের কাছে মহানায়িকা। তাঁর কথা বলার ঢং, সুবিন্যস্ত চুল, চোখের চাহনি, নানা সাজে শাড়ি পরা, হাসি, চলাফেরা—সবই আলাদা নজর কাড়ে। তাঁর উপস্থিতি দর্শকের কাছে আকর্ষণীয় মনে হতো। ভারত পেরিয়ে দেশের ভক্তদের কাছেও তিনি কিংবদন্তি হয়ে আছেন। এই অভিনেত্রীর নাম সুচিত্রা সেন। আজ তাঁর প্রয়াণ দিবস। ছবিতে তাঁর ফেলে যাওয়া জীবনের গল্প।
একসময় পরিবারের বাইরে কারও সঙ্গে দেখা করতেন না সুচিত্রা সেন। তবে রাতে মাঝে মাঝে হাঁটতে বের হতেন। হাঁটার সময় একবার এক পুলিশ অফিসার সুচিত্রাকে জানান, রাতে জায়গাটা নিরাপদ নয়। সেই থেকে রাতে হাঁটতে বের হওয়া বন্ধ হয়ে যায়
ছবি: সংগৃহীত
বাইরে বের হলে মানুষ তাঁকে চিনে ফেলবে, সে কারণে দিনেও বের হতেন না। তবে সুচিত্রা সেনের সঙ্গে পরিচিতজনেরা বাসায় দেখা করতে আসতেন। বাসায় তিনি যেভাবে থাকতেন, অনেকটা সেভাবেই দেখা করতেন। বাড়তি সাজগোজ তাঁর থাকত না
সুচিত্রা সেন আড্ডাপ্রিয় ছিলেন। পছন্দের মানুষদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলতেন। তাঁর মেয়ে মুনমুন সেন এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘একবার মা হাসপাতাল থেকে ফেরার সময় বলছিলেন, “এবার বাসায় গেলে ভালো লোক নিয়ে আসিস, যাঁদের সঙ্গে কথা বলে কিছু শেখা যায়।”’
উত্তম কুমার ও সুচিত্রা জুটি বাংলা সিনেমায় অমর এক নাম। ১৯৫৩ সালে তাঁরা প্রথম একসঙ্গে অভিনয় করেন। পরে ২২ বছরে তাঁরা ৩১টি ছবিতে অভিনয় করেন
সুচিত্রা সেন
নিজের চেষ্টায় সবকিছু অর্জন করেছিলেন সুচিত্রা। এ জন্য তিনি নিজেকে নিয়ে অহংকার করতেন। মেয়েকে বলতেন, ‘নিজের পায়ে দাঁড়াও, কারও ওপর নির্ভর কোরো না।’ মেয়েরাও মায়ের মতো নিজেকে তৈরি করেছেন
জানা যায়, স্বেচ্ছায় অন্তরালে যাওয়ার পর মাত্র দুবার জনসমক্ষে দেখা গিয়েছিল সুচিত্রা সেনকে। একবার, উত্তম কুমারের মৃত্যুর পর। দ্বিতীয়বার, তাঁর আধ্যাত্মিক গুরু ভরত মহারাজের মৃত্যুর সময়
সুচিত্রার গাড়ির শখ ছিল। অনেক সময় গাড়ির ওপর দাঁড়িয়ে ছবি তুলতেন। মাঝে মাঝে শুটিংয়ের ফাঁকে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অভিনেত্রী হিসেবে তিনি প্রথম বাংলা সিনেমার পুরস্কার জয় করেন। মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে ‘সপ্তপদী’ ছবি প্রতিযোগিতা করে। সেখানে সেরা অভিনেত্রী হন সুচিত্রা
‘প্রণয়পাশা’ ছিল সুচিত্রার শেষ ছবি। দীর্ঘ আড়াই যুগের ক্যারিয়ারে ৬২টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। অভিনয় ছাড়া তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত ছিল। তারপরও অনেক প্রযোজক তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসতেন। তিনি সবাইকে না করে দিতেন
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন আশাবাদী মানুষ। কখনোই ভেঙে পড়তেন না। ছিলেন অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। একবার রাজকাপুর একটি ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব নিয়ে তাঁর বাসায় আসেন। সঙ্গে এনেছিলেন ফুলের তোড়া। পরে আচমকা ফুলগুলো রেখে সুচিত্রার পায়ের কাছে বসে পড়েন রাজকাপুর। এমন কাণ্ডে হতবাক হয়ে যান সুচিত্রা। এমন ব্যক্তিত্ব তাঁর পছন্দ না হওয়ায় ছবির প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন
আরও পড়ুন