একতা কাপুর একাই এক শ না হলেও অনেক কিছু। তিনি ভারতের জনপ্রিয় টিভি ও চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিচালক। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি কথা বলেন তাঁর দুটি টিভি শো, 'কাওয়াচ মহাশিবরাত্রি'র নতুন সিজন ও 'বেপানাহ পেয়ার' নিয়ে। আলোচনার একটা বড় অংশজুড়ে ছিল নাগিন ৩।
একতা কাপুর নাকি ঘুরে ফিরে একই শিল্পীদের নিয়ে কাজ করেন। এই অভিযোগের বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়, তিনি টিভি ইন্ডাস্ট্রিতে ক্যাম্প গড়ার চেষ্টা করছেন কিনা। মৃদু হেসে উত্তর দিলেন, 'অবশ্যই আমি ক্যাম্প বানাচ্ছি। কিন্তু সত্যি এটাই যে আমি আমার অভিনয় শিল্পীদের সঙ্গে বেশি দিনের চুক্তি রাখি না। তাঁদের সমস্ত দরজা খোলা থাকে। আমি এজেন্ট হিসেবে কাজ করি না, টাকাও পাই না। কিন্তু একজন প্রযোজক আর অভিনয় শিল্পী যদি একজন আরেকজনের সঙ্গে কাজ করে আনন্দ পান, তাহলে আবার কেন তাঁরা একসঙ্গে কাজ করবেন না?'
কাওয়াচের নতুন সিজন সম্পর্কে তিনি বলেন, 'এর প্রথম সিজন অত্যন্ত জনপ্রিয়তা পায়। এটাই সম্ভবত আমাদের করা সবচেয়ে দারুণ শো। আমার মনে হয়, দ্বিতীয় সিজনের গিয়ে আমি আর সেই আগ্রহ ধরে রাখতে পারি না। গোলমাল করে ফেলি। আমার মনে হয়, নাগিন ১ দারুণ ছিল, নাগিন ২ মোটামুটি। তাই নাগিন ৩ দিয়ে তো এই সিরিজ সমাপ্ত হলো।'
প্রথম সিজন ভালো হবে বলে অনেকে মনে করে এর সিক্যুয়েলও দারুণ চলবে। কিন্তু একতা কাপুর মোটেও তা বিশ্বাস করেন না। তাঁর মতে, 'এই ইন্ডাস্ট্রিতে "সেফ গেম" বলে কিছু নেই। যখন আমি নাগিন ৩ করি, আমি আমার সব থেকে বড় স্টারসহ সমস্ত অভিনয়শিল্পীদের বিদায় জানিয়েছিলাম। মৌনি রায়ও আর থাকতে চাচ্ছিল না। এটা পারস্পরিক বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে হয়েছিল। কেউ তো আর সারা জীবন ধরে একটা ব্রান্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন না।'
একতা কাপুরের সিরিয়ালগুলো কিছুটা পৌরাণিক, অনেক ক্ষেত্রে বাস্তবতা বিবর্জিত। আর তা নিয়ে কিছু মানুষের সমালোচনা লেগেই আছে। সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ৪৩ বছর বয়সী এই প্রযোজক উত্তর দেন, '১০০ ভাগ সত্যি। আপনি যা-ই করেন না কেন, তা নিয়েই সমালোচনা হবে। আমরা হলিউডের সিনেমায় দেখি, একজন নারী একটা ড্রাগন জন্ম দিচ্ছে। সেটা গ্রহণ করতে কোনো অসুবিধে নেই। কিন্তু একটা সাপ প্রতিশোধ নিতে মানুষরূপে ফিরে এসেছে, তা দেখেই সমস্যা শুরু হয়ে যায়। আমার মনে হয় অনেক ভারতীয়রা বাস্তবতা থেকে একটু মুক্তির জন্য টিভি অন করে। সারা বিশ্বেই এটা চলছে। যেমন নাগিন ৩ এ, নায়ক বিপদে পড়তেই থাকে। আর নায়িকা গিয়ে ভিলেনদের পিটিয়ে তাড়িয়ে নায়ককে রক্ষা করে। আমি এখানে কোনো সমস্যা দেখি না।'
একতা কাপুর এ সময় আরও বলেন, যত দিন দর্শক দেখবে, তত দিন তিনি 'এই সব অবাস্তব কাহিনি' বানাবেন। তবে নিশ্চয়তা দিয়ে জানান, 'যেদিন দর্শক মুখ ফিরিয়ে নেবেন, সেদিন শুধু আমি কেন, আমরা কেউ-ই আর এই সব 'ছাইপাঁশ' বানাব না। আমরা দর্শকের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য বানাই।