বলিউডের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কৃষ্ণ কুমার কিন্নথ, ওরফে কে কের মৃত্যুর পর দুই দিন পার হয়েছে। এখনো প্রিয় গায়কের অকালমৃত্যুর শোক ভুলতে পারেননি অনেক ভক্তই। গতকাল বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ের ভারাসোভা মহাশ্মশানে তাঁর শেষকৃত্যে হাজির ছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্য, সহকর্মী থেকে সাধারণ ভক্তরা। এদিকে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল গায়কের হৃদ্যন্ত্রে সমস্যার কথা। তাঁর স্ত্রী জ্যোতি লক্ষ্মী কৃষ্ণাকেও কলকাতায় গাইতে আসার আগে অসুস্থতার কথা বলেছিলেন কে কে। জানিয়েছিলেন হাতে ব্যথার কথাও।
আগে সেভাবে জানা না গেলেও, মৃত্যুর পর ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসতে থাকা কে কের হৃদ্যন্ত্রের সমস্যার কথা। ময়নাতদন্তের বিস্তারিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে নতুন তথ্য।
প্রতিবেদন জানানো হয়েছে, কে কের হৃদ্যন্ত্র বা হার্ট সাদা চর্বিতে ঢেকে গিয়েছিল। পড়েছিল চর্বির মোটা আস্তরণ। প্রচণ্ড চর্বি জমে যাওয়ায় তাঁর হার্টের ভাল্ভও শক্ত হয়ে গিয়েছিল। এ জন্যই তাঁর হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা দেখা দেয়।
হৃদ্যন্ত্র সচল রাখতে নিয়মিত ওষুধ খেতেন কে কে। তাঁর পাকস্থলীতে ১০টি ওষুধের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার মৃত্যুর দিনও কে কে অনেকগুলো ওষুধ খেয়ে মঞ্চে উঠেছিলেন। চিকিৎসকেরা বলছেন, এ ধরনের চর্বিতে আচ্ছাদিত হৃদ্যন্ত্র থাকা মানুষের স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বেশি থাকে।
কে কে তাঁর মৃত্যুর দিনও স্ত্রীকে ফোন করে অসুস্থতার কথা জানিয়েছিল। চিকিৎসকেরা মনে করছেন, অতিরিক্ত চর্বির কারণে তৈরি হওয়া হার্টের ব্লকেজই তাঁর মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
এদিকে কে কের মৃত্যুর পর আবার গান ফিরেছে কলকাতার নজরুলমঞ্চে। এই মঞ্চেই গত মঙ্গলবার টানা ২০টি গান গান গেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন কে কে। এরপর ঢলে পড়েন মৃত্যুর কোলে। সেই ঘটনার চতুর্থ দিনের মাথায় আজ নজরুলমঞ্চে ফিরছে গানের অনুষ্ঠান। একই মঞ্চে আজ গাইবেন জনপ্রিয় গায়ক অনুপম রায়। সন্ধ্যা সাতটায় নজরুলমঞ্চে অনুপম রায়ের গান শুরু হওয়ার কথা।
কে কের মৃত্যুর পর নজরুলমঞ্চের ব্যবস্থাপনা নিয়ে বড় প্রশ্ন ওঠে। খোদ গায়কই গাওয়ার সমস্যার মঞ্চের শীতাতপব্যবস্থা নিয়ে অনুযোগ করেছিলেন। অভিযোগ আছে, ধারণক্ষমতার কয়েক গুণ দর্শক প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার। তাই আজকের অনুষ্ঠান সামনে রেখে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আজকের সংগীতসন্ধ্যা নির্বিঘ্ন করতে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে মিলে যৌথভাবে কাজ করেছে অনুপমের টিম। জানা গেছে, নজরুলমঞ্চে দর্শকদের জন্য ২ হাজার ৪৮২টি আসন রয়েছে। তবে আজ প্রবেশের অনুমতি পেয়েছেন মাত্র ১ হাজার ৫০০ দর্শক-শ্রোতা।
অনুষ্ঠানস্থলে রাখা হচ্ছে দুটি অ্যাম্বুলেন্স। যেখানে সার্বক্ষণিকভাবে থাকবেন দুজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক। তাঁদের মধ্যে একজন মেডিসিন ও অন্যজন হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ। থাকবে জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থাও। ভ্রাম্যমাণ শীতাতপযন্ত্র, স্ট্যান্ড ফ্যান এবং স্বেচ্ছাসেবকদের একটি দলও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।