১ মাস ৩ দিন হলো, আমাদের এই পৃথিবীতে নেই ইরফান খান। বলিউড, হলিউড থেকে শুরু করে বিশ্বের কোটি ভক্তের শোক এসে মিলেছে এক বিন্দুতে। ৫৩ বছর বয়সী ইরফান খানকে মানুষ তাঁর জীবন দর্শন ও জনহিতকর নানা কর্মকাণ্ডের জন্য তাঁদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী আসন দিয়েছে। ইরফানের মৃত্যুর এক মাসেরও বেশি সময় পর এবার জানা গেল, মৃত্যুর আগে গোপনে করোনার জন্য তহবিল সংগ্রহ করছিলেন ইরফান।
ভারতের রাজস্থানের জয়পুরে ইরফানের প্রতিবেশী জানান, যে ইরফান চরম অসুস্থতা নিয়েও করোনা মহামারির জন্য তহবিল সংগ্রহ করছিলেন। ফিল্মফেয়ারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরফানের প্রতিবেশী জিয়াউল্লাহ বলেন, ‘করোনা মহামারির এই সময়ে আমরা তহবিল জোগাড় করছিলাম। আমরা ইরফান খানের ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তখন ইরফান খান আমাদের এই উদ্যোগের কথা জানতে পারেন। তিনি অসুস্থ অবস্থায়ই সর্বাত্মকভাবে আমাদের সহায়তা করেন। তবে তাঁর একটাই শর্ত ছিল, কেউ যেন তাঁর এই দানের কথা জানতে না পারে।
তিনি আমাদের বলেছিলেন, এমনভাবে দান করার কথা, যাতে ডান হাত না জানে বাঁ হাত কী দিল। এভাবেই তিনি মানুষকে সাহায্য করে স্বস্তি পান।’
তিনি আরও জানান, ইরফান খুবই মা–ভক্ত ছিলেন। মায়ের অসুখের কথা শুনলেই তিনি ছুটে চলে আসেন। কিন্তু শেষবার যখন তাঁর মা অসুস্থ হন, লকডাউন ও নিজের শারীরিক অসুস্থতার কারণে ইরফান আসতে পারেননি। জিয়াউল্লাহ আরও জানান, তিনি এত দিন ইরফান খানকে দেওয়া কথা রাখার জন্য এই তথ্য গোপন রেখেছিলেন। কিন্তু তাঁর মনে হয়েছে, মানুষের এই কথা জানা উচিত। যে পৃথিবীতে ইরফান খানের মতো মানুষও ছিলেন, যিনি মৃত্যুর আগেও অন্যের কথা ভেবে কাজ করেছেন।
অন্যদিকে ইরফানের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী সুতাপা সিকদার দীর্ঘ চিঠি লেখেন। ইরফানের একটা ছবি পোস্ট করে পারস্যের কবি জালালউদ্দিন মুহাম্মদ রুমির স্তবক থেকে ক্যাপশনে লেখেন, ‘সমস্ত ভালো আর মন্দের ওপারে যে সবুজ মাঠ, সেখানে আমাদের আবার দেখা হবে। মাঝখানে কেবল কিছু সময় দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছে।’