মনসুর আলী খান পতৌদি। যেমনই নামের বাহার, মানুষটার জীবনও ততটাই বর্ণাঢ্য। মাত্র ২১ বছর বয়সে ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হয়েছিলেন পতৌদির এই নবাব। ১৯৪১ সালের ৫ জানুয়ারি জন্ম নেওয়া এই কিংবদন্তি ১৯৬১ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত ৪৬টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন। এর মধ্যে ৪০টি ম্যাচেই তিনি ছিলেন দলের অধিনায়ক। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবি ও ফরাসি ভাষায় পড়াশোনা করা এই তারকা ১৯৬৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর বিয়ে করেন ভারতীয় অভিনেত্রী, ‘সত্যজিতের নায়িকা’ শর্মিলা ঠাকুরকে।
মনসুর আলী খান মারা গেছেন ২০১১ সালে। তাঁকে ভারতের ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ফিল্ডার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। চলছে বিশ্বকাপ। আর ভারত দল এখন পর্যন্ত প্রতিটা ম্যাচে তাঁর ভক্তদের মুখের হাসি কেবল চওড়া করেছে। আর এ সময় কন্যা সোহা আলী খানের নিশ্চয়ই মনে পড়ছে ক্রিকেটার বাবার কথা। তাই সোহা আলী খান নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটা ছবি আর দুটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। এখানে তিনি তাঁর দাদা ইফতিখার আলী খান পতৌদি ও বাবা মনসুর আলী খান পতৌদির কাছ থেকে পাওয়া ক্রিকেটের দক্ষতা দেখিয়েছেন।
প্রথম ভিডিওতে দেখা যায় উইকেটের পেছনে ক্যাচ প্র্যাকটিস করছেন সোহা আলী খান। আর একবারও ক্যাচ মিস করেননি তিনি। আর দ্বিতীয় ভিডিওতে দেখা যায়, স্লো মোশনে সোহা বিরাট এক ছক্কা হাঁকিয়েছেন। সেই ছক্কা নাকি সীমানা পেরিয়ে হারিয়ে গেছে সেখানে, যেখানে রয়েছে রংধনু। এই ভিডিওটি শেয়ার করে সোহা ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘রংধনুর আশপাশে কোথাও...।’ অর্থাৎ তিনি বলতে চাচ্ছেন, পৃথিবীর দীর্ঘতম একটা ছয় এটি। আর এই ‘পারফেক্ট’ ছয়ের ফলে বল দিগন্ত ছাড়িয়ে গিয়ে পড়েছে রংধনুর আশপাশে কোথাও। তাঁর বাবা মনসুর আলী খানও নাকি এভাবেই ছয় মারতেন।
আসলে জনপ্রিয় কার্টুন চরিত্র পেপা পিগ আর জর্জ পিগ ইংল্যান্ড থেকে ভারতে এসেছে। তারা এখানে ক্রিকেট খেলবে বাচ্চাদের সঙ্গে। কিছুদিনের মধ্যেই এই পর্ব দেখা যাবে পেপা পিগ আর জর্জ পিগের ইউটিউব চ্যানেলে। আর সেখানে দেখা যাবে সোহা আলী খানকেও। কেননা বাচ্চাদের ক্রিকেট খেলা শেখাতে গিয়েছিলেন প্রবাদতুল্য ক্রিকেটার মনসুর আলী খানের কন্যা সোহা আলী খান।
এই ইভেন্টে যোগ দিতে যাওয়ার আগে আইএএনএস কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সোহা আলী খান বলেন, ‘ভারতের বাচ্চারা, পেপা আর জর্জের সঙ্গে সময় কাটানো নিয়ে আমি খুবই রোমাঞ্চিত। এখানে আমি পারিবারিকভাবে শেখা ক্রিকেটের কিছু গোপন কৌশল শেখাব। এর মধ্যে রয়েছে ওয়ার্মআপ, দলগতভাবে কাজ করা আর অবশ্যই “পারফেক্ট” ছয় মারা। সত্যি কথা বলতে কি, আমি একটু নার্ভাসও। তবে আমি নিশ্চিত, পেপা আর জর্জের সঙ্গে অনেক মজা হবে। তারা দুজনে খুব আদরের।’
এই দুটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বাংলাদেশ থেকে একজন সেখানে মন্তব্য করেছেন, ‘সুন্দর, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভালোবাসা।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘যেমন বাবা, তেমন মেয়ে।’ আবার এক মা লিখেছেন, ‘দারুণ, আমার ছেলে পেপা খুবই পছন্দ করে।’ একজন তো সোহার ক্রিকেটের দক্ষতার প্রশংসা করে লিখেছেন, ‘বাহ, তুমি তো দারুণ খেলো, দুই হাত দিয়েই সমান তালে বল ধরছ।’