বিরাট বাজার বলিউডের। গ্রহণযোগ্যতা বা জনপ্রিয়তা কেবল সেখানকার সিনেমাগুলোরই? না, বলিউডের তারকাদের প্রভাবও ‘সেই রকম’। পর্দায় প্রেমিক-প্রেমিকা হিসেবে তাঁরা হাজির হলে ভক্তদের হৃদয় দুলে ওঠে। তাঁদের কেউ কেউ যখন পর্দার আড়ালেও জুটি বাঁধতে চেয়েছিলেন, পেয়েছিলেন এমনকি ব্যর্থ হয়েছিলেন, সেটাও দর্শকদের বিরাট আগ্রহের বিষয় হয়ে উঠেছিল। চলুন দেখে নেওয়া যাক বলিউডের আলোচিত ১০ জুটির ভাঙনের কাহিনি। তাঁদের কারও বিয়ে ভেঙেছে, কারও বাতিল হয়েছে বাগদান আবার কারও ভেঙেছে প্রেম।
১. সংসার ভেঙেছিল সাইফ-অমৃতার
প্রায় ১৩ বছর সংসার করার পর ২০০৪ সালে বিচ্ছেদ হয়ে যায় বলিউড তারকা সাইফ আলী খান ও অমৃতা সিংয়ের। দুজনের সংসারের রয়েছে দুই সন্তান। মেয়ে সারা আলী খান, ইতিমধ্যে বলিউডে অভিষিক্ত হয়েছেন। ছেলে ইব্রাহিম আলী খান। ২০১২ সালে সাইফ বিয়ে করেন আরেক বলিউড তারকা কারিনা কাপুরকে।
২. কারিনা-শহীদের মধ্যে তৃতীয় পক্ষ!
‘ফিদা’ ছবির শুটিং করতে গিয়েই কারিনার প্রেমে মজে যান শহীদ কাপুর। কিন্তু বলিউডের এই মিষ্টি জুটির প্রেম ভেঙে যায় ‘জাব উই মিট’ ছবির শুটিংয়ের সময়। দুজনের মাঝখানে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে হাজির হন সাইফ আলী খান। ‘তাশহান’ ছবির শুটিংয়ের সময়ই কারিনা দুর্বল হয়ে পড়েন সাইফের প্রতি। যখন নিজে সেটা বুঝতে পারলেন, তখন সিদ্ধান্ত নেন, শহীদের সঙ্গে আর ঝুলে থাকার মানে হয় না।
৩. আভিজাত্যই অভিষেক-কারিশমার শত্রু?
অভিষেক বচ্চন ও কারিশমা কাপুরের বাগদান হয়ে গিয়েছিল। তারপর অমিতাভদের পারিবারিক অনুষ্ঠানে অনেকবারই দেখা গিয়েছিল কারিশমাকে। এমনকি তাঁকে ‘বউমা’ সম্বোধন করতে শুরু করেছিলেন অমিতাভের স্ত্রী জয়া বচ্চন। পরে শোনা যায়, অমিতাভ বচ্চনের সব সম্পত্তি অভিষেকের নামে লিখে দেওয়ার দাবি করেছিলেন কারিশমার মা ববিতা কাপুর। রাজি হননি জয়া। অভিষেকের সবকিছুতে মায়ের এই হস্তক্ষেপ হবু শাশুড়ির পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব হয়নি। সুতরাং বিয়েটা হয়নি এ জুটির। ২০০২ সালে সেটা বাতিল হয়ে যায়। ধরে নেওয়া যায় বচ্চন পরিবারের আভিজাত্যই যেন এই জুটির প্রধান শত্রু।
৪. পুরোনো হয়ে গিয়েছিলেন রণবীর-ক্যাটরিনা
একসঙ্গে সিনেমা করতে গেলে ঘনিষ্ঠতা হয়। কিন্তু রণবীর কাপুর ও ক্যাটরিনা কাইফের ঘনিষ্ঠতা ছিল চোখে পড়ার মতো। শুটিং না থাকলেও প্রায়ই দুজনকে একসঙ্গে দেখা যেত। এক বাড়িতে কখনো কখনো থাকতেন এই দুই তরুণ তারকা। পরে রণবীর কাপুর ও ক্যাটরিনা কাইফের প্রেম ভাঙে ২০১৬ সালে। সে সময় রণবীর স্বীকার করেন যে, ছয় বছর ধরে প্রেম করেছেন তাঁরা। কারণটা জানা যায়নি। যেন একে অন্যের কাছে পুরোনো হয়ে গিয়েছিলেন।
৫. দীপিকা-রণবীর সবচেয়ে হৃদয়বিদারক
এক বছর প্রেম করার পর হঠাৎ ২০০৯ সালে রণবীর কাপুর ঘোষণা দিলেন, তিনি আর দীপিকার সঙ্গে নেই। যদিও ২০১৩ সালে ‘ইয়ে যাওয়ানি হ্যায় দিউয়ানি’ এবং ইমতিয়াজ আলীর ছবি ‘তামাশা’য় একসঙ্গে কাজ করেছিলেন তাঁরা। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে তিনি বলেছিলেন, সবাই জানতেন যে দীপিকার সঙ্গে আমার প্রেম ছিল। তাই সবারই জানার আগ্রহ ছিল বিচ্ছেদের পরেও কীভাবে আমরা একত্রে কাজ করতে পারছি! আসলে আমরা তো কেবলই অভিনয়শিল্পী হিসেবে ছবিতে কাজ করেছি। আমরা কেবলই অভিনয় করেছি সেখানে, আর সেটাই একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার ছিল আমাদের জন্য।
৬. পর্দার বাইরেও দারুণ জন-বিপাশা
২০০৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘জিসম’ ছবির সেটে জন আব্রাহাম ও বিপাশা বসুর বন্ধুত্ব হয়। তারপর ক্রমে ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করেন তাঁরা। একপর্যায়ে উথাল-পাতাল প্রেমে নিমজ্জিত হন এ জুটি। প্রায় নয় বছর চলে সেই প্রেম। শেষের দিকে সম্পর্ক নিয়ে জনের হাবভাব খুব একটা ভালো লাগছিল না বিপাশার। কেবলই মনে হতো, জন কি তাঁকে নিজের অধীনস্থ ভাবতে শুরু করেছেন? বিচ্ছেদের ব্যাপারে কথা উঠতেই এক কথায় জন রাজিও হয়ে গিয়েছিলেন। ২০১১ সালে ভেঙে যায় জন আব্রাহাম ও বিপাশা বসুর প্রেম।
৭. টেকার কথা ছিল না সালমান-ঐশ্বরিয়ার প্রেম
১৯৯৯ সালে সঞ্জয় লীলা বনসালির ‘হাম দিল দে চুকে সানাম’ ছবিতে কাজ করার সময় সালমানের প্রেমে জড়িয়ে যান ঐশ্বরিয়া। কিন্তু সেটা টিকেছিল মাত্র বছর দুই। ২০০২ সালে বিচ্ছিন্ন হন তাঁরা। অনেকে মনে করেন সালমানের অভদ্র ব্যবহারের কারণেই মূলত এই সম্পর্ক ভাঙে। আবার অনেকে এও মনে করেন, ঐশ্বরিয়ার কাছ থেকে ছ্যাঁকা খেয়ে বেচারা সালমান খান চিরকুমার রয়ে গেলেন।
৮. টেকেনি আরবাজ-মালাইকার সংসার
আরবাজ খান ও মালাইকা অরোরার বিবাহবিচ্ছেদ হয় ২০১৬ সালের ২৫ মার্চ। ১৮ বছরের সংসার ভাঙার খবর গণমাধ্যমের কাছে নিশ্চিত করেছিলেন তাঁরা। অনেকে মনে করেন, এই বিচ্ছেদের নেপথ্যে অর্জুন কাপুর। সম্প্রতি তাঁর সঙ্গে প্রেম চলছে মালাইকার।
৯. অল্প বয়সের বিয়ে আমির-রীনার
প্রতিবেশী রীনা দত্তের প্রেমে পড়েছিলেন নায়ক আমির খান। বাড়ির কেউ সেই প্রেম মেনে নেয়নি। অভিভাবকদের অমতে মাত্র ২১ বছর বয়সে বিয়ে করে ফেলেছিলেন তাঁরা। তাঁদের দুই সন্তান হয়। তবে ১৬ বছর সংসার করার পর ২০০২ সালে বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁদের।
১০. বেদনাবিধুর ভাঙন হৃতিক-সুজানের সংসারে
হৃতিক রোশন ও সুজান খানের বিচ্ছেদ হয় ২০১৩ সালে। ভীষণ কষ্ট পেয়েছিলেন হৃতিক। ফিল্মফেয়ারকে এ বিচ্ছেদ নিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘বিচ্ছেদ মৃত্যুর চেয়ে যন্ত্রণাময়।’ কিন্তু মজার কথা হচ্ছে, গেল কয়েক বছর তাঁদের সম্পর্ক আবার বেশ জমে উঠেছে। সুযোগ পেলেই একে অন্যকে সময় দিচ্ছেন তাঁরা।