প্রেম করলে নাকি কিছুতেই তা লুকিয়ে রাখা যায় না। মালাইকা অরোরা আর অর্জুন কাপুরের ক্ষেত্রেও তা সত্যি। তাঁরা স্বীকার করার আগে থেকেই বলিউডপাড়ায় গুঞ্জন, ফিসফাস চলছিল। অবশেষে ২০১৯ সালে তাঁরা উভয়েই একসঙ্গে হাতে হাত রেখে উড়াল দিলেন যুক্তরাষ্ট্রে, সেখান থেকেই স্বীকার করে নিলেন নিজেদের প্রেমের কথা।
তারপর তো ইনস্টাগ্রামে একজন আরেকজনকে নিয়ে পোস্ট করে সম্পর্ক ‘অফিশিয়াল’ করলেন। কিন্তু তাঁদের এই সম্পর্ক কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা। মালাইকা আর অর্জুনের প্রেম নিয়ে আড়াই বছর ধরে চলছে ট্রল। এর কারণ তাঁদের বয়সের পার্থক্য। মালাইকা অর্জুনের চেয়ে ১২টা বসন্ত বেশি দেখেছেন। তাই ৪৭ বছর বয়সী মালাইকাকে প্রায়ই অনলাইনে বলা হয় ‘বুড়ি’। এবার হিন্দুস্তান টাইমসকে এর সমুচিত জবাব দিয়েছেন এই বলিউড তারকা।
মালাইকা বলেন, ‘সম্পর্কে বয়স কোনো ব্যাপারই নয়। দুটো মনের মিলনই বড় কথা। সম্পর্ক বয়স নয়, হৃদয় দিয়ে হয়। দুঃখজনকভাবে সময় বদলাচ্ছে, কিন্তু সমাজ বদলাচ্ছে না। যদি বেশি বয়সের একজন পুরুষ অল্পবয়সী এক নারীর সঙ্গে প্রেম করে, তখন কেউ সমালোচনা করে না। আর নারী বয়সে বড় হলেই সে “বুড়ি” হয়ে যায়! আপনাদের সুবুদ্ধির উদ্রেক ঘটুক।’ মালাইকা আরও বলেন, ‘কে কী বলল তাতে আমার কিছুই আসে যায় না। আমি বরং আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে, আমার নিজের জীবন নিয়ে মনোযোগী হতে চাই। আমি আমার সম্পর্ক নিয়ে, আশেপাশের মানুষ নিয়ে খুবই খুশি। আর সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।’
মালাইকা আর অর্জুন বলিউডের বিভিন্ন পার্টিতে একসঙ্গে দেখা দেন। অনেকেই বলেন, অর্জুনের সঙ্গে সম্পর্কই আরবাজ খানের সঙ্গে ১৯ বছর দাম্পত্যজীবনের পর বিচ্ছেদের কারণ। কিন্তু মালাইকা বলেছেন, তাঁরা কেউ বিবাহিত জীবনে সুখী ছিলেন না। এটাই সম্পর্কের ইতি টানার জন্য যথেষ্ট। মালাইকা জানান, বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত মোটেই সহজ ছিল না। কারণ, যত যা-ই হোক না কেন, বিচ্ছেদের পর সবাই হন্যে হয়ে কারণ খুঁজবে। আর কারণ যা-ই হোক না কেন, সবাই আঙুল তুলবে তাঁর দিকেই।
মালাইকা বলেন, ‘বিবাহিত জীবনে আমরা দুজনের কেউই কাউকে খুশি রাখতে পারছিলাম না। আর আমাদের আশপাশের মানুষের জীবনে আমাদের সম্পর্কের খারাপ প্রভাব পড়ছিল। বিচ্ছেদের পর একদিন আমি আর আমার ছেলে আহরান বারান্দায় বসে কফি খাচ্ছিলাম আর গল্প করছিলাম। হঠাৎ সে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “মা, তোমাকে অনেক দিন পর এত খুশি দেখছি”।’
এই বিবাহবিচ্ছেদ তাঁকে আরও ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে জানিয়ে মালাইকা আরও বলেন, ‘আপনি যদি কোনো অসুখী সম্পর্কে থাকেন, আর সেখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য কোনো উদ্যোগ নেন, সেটা আপনার আত্মসম্মান বাড়ায়। কেউ যদি সে জন্য আপনাকে কেউ কাঠগড়ায় দাঁড় করায়, নতুন সম্পর্ক নিয়ে কটাক্ষ করে, সেটা একান্তই তার সমস্যা। আমি আমার সন্তানকে বেড়ে ওঠার জন্য একটা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থেকে বের করে এনেছি। নিজেও ব্যক্তিগত জীবনে আগের চেয়ে অনেক সুখে আছি।’
এদিকে বলিউডপাড়ার হাওয়া নানা দিকে বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে একটাই প্রশ্ন। কবে চার হাত এক হবে মালাইকা আর অর্জুনের? বিয়ের জন্য নাকি প্রস্তুত অর্জুন। তবে সময় চেয়েছেন মালাইকা। তাই তাঁর সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় আছেন অর্জুন।