দক্ষিণি সুপারস্টার আল্লু অর্জুনের ‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’ ছবিটি শিগগিরই ২০০ কোটি ক্লাবের সদস্য হতে যাচ্ছে। এদিকে ‘এইটিথ্রি’ কোনোমতে হাফ সেঞ্চুরি করেছে।
১৭ ডিসেম্বর মুক্তি পায় প্যান ইন্ডিয়ান ছবি ‘পুষ্পা’। এই ছবিতে আল্লু অর্জুনের বিপরীতে আছেন দক্ষিণি অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানা। মুক্তির ১১ দিন পরও বক্স অফিসে ছবির দাপট চলছে। তামিল, তেলেগু, মালয়ালম, কন্নড়, হিন্দিসহ পাঁচটি ভাষায় ছবিটি মুক্তি পেয়েছে। সব ভাষাতেই ‘পুষ্পা’ বক্স অফিসে ঝড় তুলেছে। তবে সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো, হিন্দিভাষী রাজ্যগুলোতেও ‘পুষ্পা’র জয়জয়কার।
আল্লু অর্জুনের ‘পুষ্পা’ যে গতিতে এগোচ্ছে, বাণিজ্য বিশ্লেষকদের অনুমান, খুব শিগগিরই এই ছবি ২০০ কোটি ক্লাবের সদস্য হবে। ইতিমধ্যে ছবিটি ১৮৬ কোটি রুপির বেশি ব্যবসা করেছে। প্রথম সপ্তাহে ‘পুষ্পা’ ১৬৬ কোটি ৮২ লাখ রুপির ব্যবসা করেছিল। সব মিলিয়ে ১৮৬ কোটি ছাড়িয়ে গেছে এই ছবির আয়।
অন্যদিকে কবির খানের ‘এইটিথ্রি’ ছবির সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে ‘পুষ্পা’ আগেই রিলিজ করেছিলেন নির্মাতারা। কিন্তু ‘এইটিথ্রি’ মুক্তির পরও আল্লু অর্জুনের এই ছবির দাপট বেড়েই চলছে। এমনকি এই ছবি থেকে বেশ কিছু দৃশ্য বাদ দেওয়া হয়েছে। তবুও ‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’ ক্রমেই ‘রাইজ’ হচ্ছে।
রণবীর সিং অভিনীত ‘এইটিথ্রি’ ছবিটি চিত্রসমালোচক এবং দর্শকের বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। কাহিনি, চিত্রনাট্য, নির্দেশনা, কাস্টিং, অভিনয়, মেকআপ সব ক্ষেত্রেই ‘এইটিথ্রি’ দুর্দান্ত। ১৯৮৩ সালে ইংল্যান্ডের লর্ডসের মাঠে ভারতের ঐতিহাসিক ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ের ওপর নির্মিত এই ছবি। তাই এই ছবির সঙ্গে কোটি কোটি ভারতীয়র আবেগ, ভালোবাসা জড়িয়ে। ট্রেড বিশেষজ্ঞদের ধারণা ছিল, কবির খান পরিচালিত এই ছবি বক্স অফিসে ক্রমাগত বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারি হাঁকাবে, কিন্তু বাস্তবে অতটা পারেনি। গত চার দিনে ভারতে ছবিটি ৫৪ কোটি ২৯ লাখ রুপি তুলতে পেরেছে। ওপেনিং ডেতে অর্থাৎ গত শুক্রবার ‘এইটিথ্রি’ আয় করেছিল ১২ কোটি ৬৪ লাখ রুপি। শনিবার ১৬ কোটি ৯৫ লাখ, আর রোববার ১৭ কোটি ৪১ লাখ রুপি ব্যবসা করেছে ছবিটি। আর বিদেশি বাজার থেকে রণবীরের এই ছবি আয় করেছে ২৬ কোটি ১৬ লাখ। জানা গেছে এই ছবির বাজেট প্রায় ২০০ কোটি রুপি। বাণিজ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, গত উইকেন্ডে ‘এইটিথ্রি’-এর সংগ্রহে ৭০-৭৫ কোটি রুপি হওয়া দরকার ছিল। তাঁদের মতে, ‘স্পাইডারম্যান: নো ওয়ে হোম’, আর ‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’ ছবি দুটির কারণে ‘এইটিথ্রি’-এর বাজার কিছুটা মন্দা। এমনকি একাধিক সিনেমা হলে ‘এইটিথ্রি’ সরিয়ে আবার ‘পুষ্পা’ ছবি প্রদর্শন করা হচ্ছে। ‘এইটিথ্রি’ ছবির নির্মাতাদের মতে অমিক্রন আর করোনার প্রকোপ যে হারে বাড়ছে, তার কারণে মানুষ হলমুখী হচ্ছে না।
এদিকে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে নাইট কারফিউ জারি করা হয়েছে। বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা অবাক যে কবির খানের এই ছবিকে মানুষ যেভাবে ভালোবেসেছেন, তার বিপরীত দৃশ্য ধরা পড়ছে বক্স অফিসে। ভারতের মেট্রো শহরগুলির বাইরে ‘এইটিথ্রি’ সেভাবে ব্যবসা করতে পারছে না। আর এই ছবি দেখতে নারীর অংশগ্রহণ খুবই কম। অনেকের মতে, কবির খান ক্রিকেটের ওপর একটি তথ্যচিত্র বানিয়েছেন। ‘সূর্যবংশী’ বা ‘পুষ্পা’র মতো ‘এইটিথ্রি’ মশলাদার ছবি নয়। তাই সব শ্রেণির দর্শক রণবীর আর দীপিকার মতো তারকা থাকা সত্ত্বেও ছবিটি দেখতে আগ্রহী হচ্ছেন না। এখন দেখার বিষয়, ‘এইটিথ্রি’ কত লম্বা ইনিংস খেলতে পারে।