মাইক্রোবায়োলজিস্ট হওয়ার কথা ছিল মাধুরী দীক্ষিতের। কিন্তু তিনি এখন বলিউডের সেরা অভিনেত্রীদের একজন; ভারতের একজন আইকনিক নৃত্যশিল্পীও বটে। হিন্দি চলচ্চিত্রে অনবদ্য ভূমিকার জন্য ২০০৮ সালে তাঁকে ভারত সরকারের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘পদ্মশ্রী’তে ভূষিত করা হয়। এখন এই শিল্পীর বায়োপিক যদি নির্মাণ করা হয়, তাহলে মাধুরী দীক্ষিতের চরিত্রের জন্য কাকে যথাযথ বলে মনে হবে? এক মুহূর্ত না ভেবে মাধুরী দীক্ষিত বললেন, ‘আলিয়া ভাট।’
কিছুদিন আগেই মুক্তি পেয়েছে ‘কলঙ্ক’। এই ছবিতে মাধুরী দীক্ষিতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নাচতে দেখা গেছে আলিয়া ভাটকে। এই দুঃসাহসী কাজ আলিয়া যে কী দারুণভাবে করেছেন, তা নিয়ে সবাই প্রশংসা করেছেন। এ পর্যন্ত ‘ঘর মেরে পরদেশিয়া’ গানটি ইউটিউবে দেখা হয়েছে ৫ কোটি ১৭ লাখবার। মাধুরী দীক্ষিতের সঙ্গে পর্দা ভাগ করে নাচা তো আর সহজ কাজ নয়। ভড়কে গিয়েছিলেন আলিয়াও। মাধুরী তখন বলেছিলেন, ‘আমি আলিয়াকে সহজ আর স্বাভাবিক করতে চেষ্টা করেছি। বুঝতে পেরেছিলাম, বেচারি খুব ভয় পেয়েছে। ছবিতে আমাদের কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য আছে। এসব দৃশ্যে আলিয়া সত্যি দুর্দান্ত কাজ করেছে।’
অর্ধশত বছর পার করেও মাধুরী দীক্ষিত (৫১) এখনো বলিউডের অন্যতম লাবণ্যময়ী অভিনেত্রী। অভিনয় প্রতিভা ছাড়াও অন্যান্য সেলুলয়েড তারকার মতো তাঁর জীবনও ঘটনাবহুল। ক্যারিয়ারের একেবারে উঠতি সময়ে ১৯৯৯ সালে মাধুরী ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওভাসকুলার সার্জন শ্রীরাম মাধব নেনেকে বিয়ে করেন। আর সেই সঙ্গে বলিউডকে বিদায় জানিয়ে উড়াল দেন যুক্তরাষ্ট্রে। দর্শক আর ভক্তদের ভালোবাসার টানে ১১ বছর পর ফিরে আসেন সেই চিরচেনা বলিউডে।
এর আগে ১৯৯১ সালে ‘সাজন’ সিনেমার শুটিংয়ের সময় বলিউডের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিল মাধুরী আর সঞ্জয় দত্তর প্রেম। ১৯৯২ সালে এক সাক্ষাৎকারে মাধুরী বলেছিলেন, ‘একমাত্র সঞ্জুই পারে আমার মুখে হাসি ফোটাতে।’ ওই সময় সঞ্জয়ের স্ত্রী রিচা শর্মা যুক্তরাষ্ট্রে ক্যানসারের চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। আর সঞ্জয়ও মাধুরীকে বিয়ে করতে মরিয়া ছিলেন। সংসার বাঁচাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ছুটে আসেন রিচা শর্মা। এয়ারপোর্ট থেকে ফোন করেন বাসায়। সেদিন সেই ফোন ধরেননি সঞ্জয়।
এর পরের কাহিনি অনেকেরই জানা। সংসার বাঁচাতে পারলেও নিজেকে বাঁচাতে পারেননি রিচা শর্মা। ১৯৯৬ সালে মারা যান রিচা শর্মা। আর বলিউডে চাউর হয়, মাধুরীর সঙ্গে সঞ্জয়ের প্রেমই নাকি রিচা শর্মার মৃত্যুর জন্য দায়ী। ভেঙে পড়েন মাধুরী, ভেঙে দেন সম্পর্ক। এরপর দুই দশক মাধুরী আর সঞ্জয় কেউ কারও ছায়া মাড়াননি। এমনকি মাধুরীর অনুরোধে সঞ্জয় দত্তর বায়োপিক ‘সঞ্জু’ থেকেও বাদ দেওয়া হয় তাঁদের প্রেমের অংশ। এত দিন পর ‘কলঙ্ক’ ছবিতে আবার একসঙ্গে কাজ করেছেন সঞ্জয় দত্ত ও মাধুরী দীক্ষিত।
এবার সামনে এসেছে মাধুরীর বায়োপিক নির্মাণের প্রশ্ন। বায়োপিকে তাঁর চরিত্রে আলিয়া ভাটকেই সবচেয়ে বেশি পছন্দ বলে জানিয়েছেন মাধুরী দীক্ষিত। তাঁর মতে, আলিয়া নাকি বড় পর্দায় তাঁর চরিত্রের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি মানিয়ে যাবেন। এই সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, ‘আমার জীবন যদি সেলুলয়েডের পর্দায় নিয়ে যাওয়া হয়, সে ক্ষেত্রে “মাধুরী” চরিত্রের জন্য আলিয়া ভাটই সঠিক। পর্দায় মাধুরী হওয়ার সব যোগ্যতা আছে আলিয়ার। সে দুর্দান্ত অভিনয়শিল্পী। তাই আমার চরিত্রের জন্য ওর ওপর ভরসা করতে পারি। খুব মজা হবে। আলিয়া বড় পর্দার আদর্শ মাধুরী।’
অন্যদিকে, শ্রীদেবীর বায়োপিকের জন্য বনি কাপুরের প্রথম পছন্দ মাধুরী দীক্ষিত।