বাহুবলী সিরিজের সাফল্যের পর দক্ষিণের প্রভাসে তকমা হয়ে যায় ভারতের প্রভাস।
বাহুবলী সিরিজের সাফল্যের পর দক্ষিণের প্রভাসে তকমা হয়ে যায় ভারতের প্রভাস।

নিয়মিত নীরবে দান করেন প্রভাস

বাহুবলী সিরিজের সাফল্যের পর দক্ষিণের প্রভাসে তকমা হয়ে যায় ভারতের প্রভাস। এরপর থেকে চর্চা শুধু প্রভাসকে নিয়েই। ‘বাহুবলী’র পর থেকে আলোচনা নতুন ছবি কবে আসবে। বিয়ে কবে, কার সঙ্গে বিয়ে—ভক্তদের এ নিয়ে জোর আলোচনা। জীবনে অভিনেতা হতে না চাওয়া প্রভাসই এখন ভারতের অন্যতম বড় তারকা। পাঠকের জন্য প্রভাসের গল্পের শেষটা আজ।

চিকেন বিরিয়ানি থেকে রাজ কুমার হিরানি, যা কিছু পছন্দ প্রভাসের
প্রভাসের প্রিয় রং কালো। প্রিয় পরিচালক, বলিউডের রাজ কুমার হিরানি। হিরানির ডাই হার্ট ফ্যান প্রভাস। তাঁর পরিচালিত ‘মুন্না ভাই এমবিবিএস’ ও ‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবি দুটো অন্তত ২০ বার করে দেখেছেন। যদিও প্রভাসের প্রিয় সিনেমা গীতাঞ্জলি, ভক্ত কানড়াপা। প্রিয় অভিনেতা, রবার্ট ডি নিরো। প্রিয় গান 'মেল্লাগা কারাগানি'। প্রিয় খেলা ভলিবল। আর খেতে ভালোবাসেন বিরিয়ানি, আর বিরিয়ানির ভেতর চিকেন বিরিয়ানি। আর ক্রাশের নাম রাভিনা ট্যান্ডন!

যেদিন প্রভাসের সিনেমা মুক্তি পায়, সেদিন তিনি মোটেও ঘর থেকে বের হন না।

‘সাইলেন্ট ডোনার’ প্রভাস
নীরবে দান করেন প্রভাস। একবার গাড়ি চালিয়ে কোথায় যেন যাচ্ছিলেন, যাওয়ার পথে রাস্তার ধারে একটি প্রতিবন্ধীদের স্কুল দেখে গাড়ি থামান তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে ১০ লাখ টাকা দেন। আর আজীবনের জন্য ওই স্কুলের দায়িত্ব নেন প্রভাস। প্রভাস দানে বিশ্বাসী, প্রচারণায় নয়।

তিনি বলেন, ‘যদি আমার টাকা কোনো মানুষের কাজেই না আসে, আরেকজনের জীবন ইতিবাচকভাবে বদলে না দেয়, তাহলে এত উপার্জনের কী দাম থাকল? যে অর্থ মানুষের কাজে লাগে না, সেই অর্থ অর্থহীন।’

প্রভাস

সিনেমা হিট করুক বা ফ্লপ, ঘুম আসে না প্রভাসের
যেদিন প্রভাসের সিনেমা মুক্তি পায়, সেদিন তিনি মোটেও ঘর থেকে বের হন না। টেনশনে ঘুমিয়ে পড়েন প্রভাস। ঘুম থেকে উঠে সিনেমার খবর নেন। কেননা, সিনেমা ভালো বা মন্দ- যা-ই চলুক না কেন, আর ঘুম আসে না প্রভাসের। হিট করলে সেই উচ্ছ্বাসে ঘুম পায় না। আর ফ্লপ করলে মন খারাপে ঘুমাতে পারেন না।

প্রভাসের অবসর
প্রভাসদের বাড়িতে বিরাট এক লাইব্রেরি আছে। অবসরে প্রভাসের সময় কাটে বইয়ের সঙ্গে। তা ছাড়া বাড়ির সামনে নিজ হাতে বাগানও করেছেন প্রভাস। সেই বাগানের দেখাশোনাও করেন। প্রভাসের বাগানে অনেক পাখি আছে। এ ছাড়া বাড়ির ছোট ছেলে প্রভাস তাঁর মায়ের খুব কাছের। সময় পেলেই মায়ের সঙ্গে সময় কাটান প্রভাস। অর্থ উপার্জন কখনোই প্রভাসের জীবনের মূল উদ্দেশ্য ছিল না।

অবসরে প্রভাসের সময় কাটে বইয়ের সঙ্গে।

প্রভাসও কখনো সেদিকে গুরুত্ব দেননি। তবে যে ১০০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক? সেটা বলিউডের ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে তেলেগু, তামিল ইন্ডাস্ট্রির অর্থনীতির চাকা সচল করে প্রতিযোগিতার জন্য। নিজের ইন্ডাস্ট্রিকে ওপরে তুলে ধরার জন্য।

বিজ্ঞাপন করেন না প্রভাস। তাঁর মতে, বিজ্ঞাপন মানুষকে ধোঁকা দেয়।

আপনি জানেন কি?
১. প্রভাসের প্রথম প্রেমিকা ‘বারফি’খ্যাত ইলিয়ানা ডি ক্রুজ। ২০০৭ সালে 'মুন্না' সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে তাঁদের প্রেম হয়। সেই প্রেম টেকেনি বেশি দিন।
২. ‘কবির সিং’ সিনেমা দেখার পর শহীদ কাপুরকে ফোন করেছিলেন প্রভাস। শহীদের অভিনয়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।
৩. বিজ্ঞাপন করেন না প্রভাস। তাঁর মতে, বিজ্ঞাপন মানুষকে ধোঁকা দেয়। দুই দশকের ক্যারিয়ারে প্রভাস কেবল মাহিদ্রা গাড়ির একটি বিজ্ঞাপন করেছেন। তিনি এই কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর।
৪. ২০১৪ সালে অজয় দেবগণের ছবি 'অ্যাকশন জ্যাকসন' সিনেমায় ক্যামিও করেছিলেন প্রভাস। বন্ধু প্রভু দেবার অনুরোধে 'পাঞ্চাবি মাস্ত' গানের ২ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডে সোনাক্ষীর সঙ্গে নেচেছিলেন প্রভাস। এর পরের বছরই মুক্তি পায় বাহুবলী দ্য বিগিনিং। সম্ভবত ওই গানে কেউ প্রভাসকে সেভাবে লক্ষ করেনি। শহীদ কাপুরও দেখা দিয়েছেন ওই গানে।
৫. প্রভাস তাঁর এক প্রতিবন্ধী ভক্তকে নিজের ব্যক্তিগত ফোন নম্বর দিয়েছিলেন। আরেক প্রতিবন্ধী ভক্তকে বাহুবলী সিনেমার সেটে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিজে ঘুরিয়ে দেখিয়েছেন।

প্রভাস

এই মুহূর্তে প্রভাস
খুবই ব্যস্ত সময় কাটছে প্রভাসের। তাঁকে সর্বশেষ দেখা গেছে ৩৫০ কোটি রুপি বাজেটের সাহো সিনেমায়। এদিকে রাধে শ্যাম ছবির বাজেট ৫০০ কোটি টাকা। এই ছবির রামের ভূমিকায় প্রভাস দেখা দিলেও সীতা কে, তা এখনো চূড়ান্ত নয়। আনুশকার সঙ্গে সব চূড়ান্ত হয়ে গেলেও এই মুহূর্তে আনুশকা মা হওয়া নিয়ে ব্যস্ত। তাই দীর্ঘদিন সিনেমা থেকে দূরে। এটি ছাড়া আরও বিশাল বাজেটের দুটি ছবি আছে প্রভাসের হাতে। একটিতে তাঁর বিপরীতে আছেন দীপিকা।

প্রভাস

এক দিনের জন্য প্রধানমন্ত্রী হলে কী করতেন প্রভাস?
কপিল শর্মার শোতে এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। প্রভাস কম কথা বলতে পছন্দ করেন। সাংবাদিকেরা তাঁকে প্রশ্ন করছেন, ক্যামেরায় ছবি তুলছেন—এসবে মোটেও স্বচ্ছন্দ নন প্রভাস। এমনকি নিজের ছবির প্রচারণায়ও বিশ্বাসী নন তিনি। তাই এক দিন প্রধানমন্ত্রী হলে কী করতেন, এই প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, ‘সিনেমার তারকাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া বন্ধ করে দিতাম!’ তবে এই লেখাটা কীভাবে হতো!

প্রভাস কম কথা বলতে পছন্দ করেন।