বিশ্বসুন্দরী আর মিস ইউনিভার্সের মঞ্চে তো কতজন কত কথাই বলেন! কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, সেই মানবতাবাদী কর্মকাণ্ড কেবল ওই বিবৃতিতেই থাকে। এর আগেও ছিল না, পরেও খুঁজে পাওয়া যায় না। কিন্তু সুস্মিতা সেন তাঁদের ভেতর ব্যতিক্রম। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই নানান সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিযুক্ত রেখেছেন তিনি। এ জন্য সম্প্রতি তাঁর হাতে উঠেছে চ্যাম্পিয়ন অব চেঞ্জেস অ্যাওয়ার্ড। তাঁর সর্বশেষ সংযোজন, দিল্লির শান্তি মুকুন্দ হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার পাঠানো।
ভারতের করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ। গতকালই ভাইরাল হয়েছে রয়টার্সের তোলা একটি ছবি। সেখানে দেখা যাচ্ছে, করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের লাশের সারি। শেষকৃত্য সম্পাদনের জন্য শ্মশানে লাশ নিয়ে অপেক্ষায় স্বজনেরা। হাসপাতালগুলোয় অক্সিজেনসংকট তীব্র। অক্সিজেনের অভাবে গতকাল দিল্লির একটি হাসপাতালেই মারা গেছেন ২৫ জন। দিল্লির ওই হাসপাতালের সিইওর একটি ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে অনলাইন দুনিয়ায়। সেখানে দেখা গেল, হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডারের অভাবে অঝরে কাঁদছেন ওই হাসপাতালের সিইও। কেননা, তাঁর হাসপাতাল সবচেয়ে সংকটের সময়ে মানুষকে বাঁচাতে পারছে না। সেটি দেখে সেখানে অক্সিজেন সিলিন্ডার পাঠানোর ব্যবস্থা করেন সুস্মিতা সেন। কেবল নিজে অক্সিজেন সিলিন্ডার পাঠিয়েই ক্ষান্ত দেননি, অন্যদেরও দিল্লির হাসপাতালগুলোর পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন টুইটারে।
সুস্মিতা টুইটারে লেখেন, ‘চারপাশের পরিস্থিতি দেখে হৃদয় ভেঙে যাছে। আমি ব্যক্তি উদ্যোগে কিছু অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু মুম্বাই থেকে সেগুলো পাঠাব কীভাবে?’ এরপরই টুইটারে সুস্মিতা সেনের এক ফলোয়ার এগিয়ে আসেন। শ্বেতা জেরি নামের ওই ব্যক্তি তাঁর বন্ধুদের সাহায্য নিয়ে ওই রাতেই মুম্বাই থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলো নিয়ে দিল্লির ওই হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। সুস্মিতা আবার তাঁকে ট্যাগ করে টুইটে সে খবর জানান।
এদিকে একপক্ষ সুস্মিতার এই মহৎ উদ্যোগকেও দেখতে পারছেন না সাদা চোখে। মুম্বাই থেকে দিল্লিতে অক্সিজেন সিলিন্ডার পাঠানোয় ক্ষেপেছেন অনেকেই। একজনের উত্তর দিয়েই সবাইকে জবাব দিয়েছেন এই অভিনেত্রী। একজন লিখেছেন, ‘আপনার কি খেয়ে কাজ নেই? আপনি কেন অক্সিজেন সিলিন্ডার মুম্বাই থেকে দিল্লিতে পাঠাচ্ছেন? একই পরিস্থিতির মুম্বাইয়ের কোনো হাসপাতালকে দিতেন। সবখানে তো একই অবস্থা!’ এই টুইটের কড়া জবাবে সুস্মিতা লেখেন, না, দিল্লি আর মুম্বাইয়ের পরিস্থিতি এক নয়। দিল্লির হাসপাতালগুলোয় অক্সিজেন সিলিন্ডারের প্রচণ্ড অভাব দেখা দিয়েছে। সেখানকার করোনা রোগীরা অক্সিজেনের অভাবে মারা যাচ্ছেন। অন্যদিকে মুম্বাইয়ে এখনো পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে। তাই সেগুলো মুম্বাই থেকে দিল্লিতে যাচ্ছে।'