সাইফ আলী খান আর কারিনা কাপুর খানের একমাত্র সন্তান তৈমুর আলী খান পাতৌদি। বলিউডের এই তারকা জুটিকে যখনই সাংবাদিকেরা কাছে পান, তৈমুরকে নিয়ে একটি প্রশ্ন থাকবেই। আর তাতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন তাঁরা। আগামী ১ জুন মুক্তি পাচ্ছে কারিনা কাপুরের নতুন ছবি ‘ভিরে দি ওয়েডিং’। মা হওয়ার পর এটাই কারিনার প্রথম ছবি মুক্তি পাচ্ছে। তাই এই ছবির প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত তিনি। প্রায়ই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এর মাঝে একজন সাংবাদিক জিজ্ঞেস করেন, ‘তৈমুর দেখতে কার মতো?’ কারিনা বলেন, ‘আমার তো মনে হয় তৈমুর দেখতে ওর বাবার মতো। আর ওর চোখগুলো জাপানি সামুরাইদের মতো।’ জাপানের প্রাক-শিল্পাঞ্চল যুগের সামরিক বাহিনীর সদস্য বা জাপানি যোদ্ধাদের সামুরাই বলা হতো। সামুরাই শব্দের অর্থ ‘কাউকে সেবা করা’।
আরেকজন সাংবাদিক জানতে চান, ‘তৈমুরের জন্য আপনি ঠিক কোন পেশা বেছে নেবেন?’ কারিনা বলেন, ‘আমি আমার ছেলের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু চাপিয়ে দিতে চাই না। সে কী করবে, আমি চাই তা নিজে নির্বাচন করুক। তবে আমি চাইব, তৈমুর একজন ক্রিকেটার হোক।’
কারিনা কাপুরের শ্বশুর মনসুর আলী খান পাতৌদি ছিলেন ভারতের জনপ্রিয় একজন ক্রিকেটার। কিন্তু তাঁর ছেলে সাইফ আলী খান সেই পথে পা বাড়াননি। মা শর্মিলা ঠাকুরের মতো নিজেকে যুক্ত করেছেন চলচ্চিত্রের সঙ্গে।
সন্তান জন্মের পর তাকে মিডিয়ার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখার প্রবণতা দেখা যায়নি সাইফ বা কারিনার মধ্যে। কিছুদিন আগে তৈমুরের নতুন একটি ছবি প্রকাশ পায়। ছবিতে দেখা গেছে, কারিনা তাঁর সন্তান তৈমুরকে কোলে নিয়ে কপালে চুমু খাচ্ছেন। তিন মাস বয়সী তৈমুরও মায়ের আদর বেশ উপভোগ করছেন। পরে সাইফ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তাঁদের সন্তান তৈমুরের এই ছবি ইন্টারনেটে ফাঁস হয়ে যাওয়ায় কারিনার মন কিছুটা খারাপ হয়েছিল। মায়ের মন তো, ভেবেছিল পাছে সন্তানের ওপর নজর লেগে না যায়। এসব বিষয়ে অবশ্য শতভাগ অবিশ্বাসী সাইফ।
এদিকে ছেলের নাম ‘তৈমুর’ রাখার পর তা নিয়ে বছর দুয়েক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল ঝড় ওঠে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র শ্লেষ আর আক্রমণের মুখে পড়তে হয় তাদের। চতুর্দশ শতাব্দীতে যে মোঙ্গল অভিযানকারী তৈমুর লং ভারত আক্রমণ করে দিল্লিকে ছারখার করে দিয়েছিলেন, হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছিলেন, তার নামে কেন সাইফ আর কারিনা নিজেদের ছেলের নাম রাখলেন?
আবার কেউ বলেছেন, পাকিস্তান তাদের ক্ষেপণাস্ত্রের নাম রেখেছে তৈমুর। কেউ আবার মনে করিয়ে দেন, মাত্র ১৮ বছর বয়সে তৈমুর লং নিজের মায়ের মাথা কেটে ফেলেছিলেন, বাবাকে শিকলে বেঁধে বন্দী করেছিলেন জেলে। কেউ বলেন, দেশের বুকে সাইফ-কারিনা যেন ছুরি চালিয়ে দিয়েছেন, রাগে তাদের গা জ্বলছে।
ওই সময় কারিনার চাচা ঋষি কাপুর টুইটারে লিখেছেন, ‘তৈমুর নাম নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে লোকে বরং নিজের চরকায় তেল দিক।’
কারও আবার পরিষ্কার কথা, বলিউডের তারকারা ছেলেমেয়েদের যা খুশি নাম রাখুন, আমার তাতে কোনো অসুবিধা নেই।
চারদিকে যখন এত বিতর্ক, সেখানে তৈমুরের মা-বাবা কী ভাবছেন? কারিনা জানান, সাইফ একসময় ছেলের নাম পাল্টে ‘ফয়েজ’ রাখতে চেয়েছিলেন। তবে কারিনা রাজি হননি। কারণ, কারিনা ছেলে তৈমুরকে ‘লৌহপুরুষ’ হিসেবে দেখতে চান। আর সে জন্যই এই নাম দেওয়া।