নেহা কক্কর ভারতের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীদের মধ্যে একেবারে প্রথম সারির একটি নাম। কিন্তু আবেগপ্রবণ এই মানুষটাকে আজকের এই অবস্থানে আসতে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি। ইন্ডিয়ান আইডলের সর্বশেষ দুটি সিজনে বিচারকের আসনে বসে মাত করেছেন তিনি। একের পর এক আসছে তাঁর হিট গান। ছবিতে ছবিতে জেনে নেওয়া যাক নেহার জীবনের গল্প। ছবিগুলো নেহার ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া।
১৯৮৮ সালের ৬ জুন উত্তর প্রদেশের ঋষিকেশে এক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেন নেহা কক্কর। তাঁর বাবা ছিলেন শিঙাড়া বিক্রেতা। বড় বোন সনু কক্কর ও ভাই টনি কক্কর উভয়ে সংগীতের সঙ্গে যুক্ত। মাত্র চার বছর বয়স থেকে গান শুরু করেন নেহা।ইন্ডিয়ান আইডলে কত মানুষ আসে, যায়। কিন্তু থেকে গেছেন নেহা কক্কর। তখন তিনি সবে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হয়েছেন। এই মঞ্চের দ্বিতীয় সিজনে প্রতিযোগী হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল তাঁর, সেই মঞ্চের অন্যতম বিচারক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। গানে গানে তিনি জয় করেছেন কোটি মানুষের হৃদয়। গানের সঙ্গে নাচেও দারুণ পারদর্শী নেহা। আর ঘুরে বেড়াতে ভীষণ ভালোবাসেন তিনি।নেহার জনপ্রিয় গানগুলোর ভিতর ‘জাদু কা ঝাপ্পি’,‘টুকুর টুকুর’, ‘ন্যায়না’, ‘মে তেরা বয়ফ্রেন্ড’, ‘দিলবার দিলবার’, ‘কালা চশমা’, ‘আঁখ মারে’, ‘কোকাকোলা’, ‘সাকি সাকি’ উল্লেখযোগ্য। শিল্পী হতে চাওয়া কত তরুণের আইডল তিনি। আর নেহার আইডল সনু নিগম।বাবা শিঙাড়া বিক্রেতা হওয়ায় অনেক সময় বন্ধুবান্ধবের হাসিঠাট্টার পাত্র হতে হতো আজকের নেহা কক্করের। ঋষিকেশে একটা এক কামরার ঘরে ভাড়া থাকতেন মা–বাবা আর তিন ভাইবোন। আবার ওই ঘরটাই ছিল তাঁদের রান্নাঘর। আর এখন হেলিকপ্টারে, উড়োজাহাজে করে আজ বালি তো কাল সিডনি! নেহা এক অনুপ্রেরণার নাম।তেষ্টা পেলেই ডাবের পানি খান ৩১ বছর বয়সী নেহা। নেহা কক্কর বলে কথা! ডাবওয়ালা তো এভাবে তাকাবেই। এই ছবিটি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘প্রতিটি নারীর জীবনে এমন একজন পুরুষ থাকা দরকার, যে তাঁর দিকে এই ডাবওয়ালার মতো তাকিয়ে থাকবে।’বাঁ পাশের বাড়িটিতে থাকতেন ছোট্ট নেহা। আর ডান পাশের বাড়িটি সদ্য কিনেছেন তিনি। গাড়ি–বাড়ি ছাড়াও ইনস্টাগ্রামে ৩ কোটি ৩৮ লাখ ফলোয়ারের মালিক নেহা। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত অভিনয়শিল্পী ও মডেল হিমাংশু কোহলির সঙ্গে প্রেম করেছেন নেহা। হিমাংশু এর দায় নিয়ে স্বীকারও করেছিল। জানিয়েছিল, সে অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে। এই সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায় প্রচণ্ড ভেঙে পড়েছিলেন নেহা। এখন অবশ্য সেসব কেবলই অতীত।নেহা আজ সারা ভারতে তুমুল জনপ্রিয়। মিউজিক সেনসেশন। কিন্তু একসময় বাবার স্বল্প আয়ে সংসার চালানো কঠিন ছিল বলে সনু, নেহা আর টনি—তিন ভাইবোনই উৎসবের সময় মন্দিরে ভজন গাইতেন। বিনিময়ে ৫০ টাকা করে পেতেন তাঁরা। বাড়ি ফিরে সেই টাকা তুলে দিতেন মায়ের হাতে। আর এখন নেহার গান ছাড়া পার্টি জমে না।২০০৮ ভাই টনির সঙ্গে মুম্বই আসেন নেহা। সেই বছরেই ‘নেহা দ্য রকস্টার’ নামে তাঁর প্রথম গানের অ্যালবাম মুক্তি পায়। ২০১৩ সালে ‘ফাটা পোস্টার নিকলা হিরো’ ছবির ‘ধাতিং নাচ’ গানে প্রথম প্লেব্যাক করেন। ২০১৪ সালে তাঁর গান ‘সানি সানি’ দারুণ হিট হয়। এরপর য়ার পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। নিয়মিত বিরতিতে একের পর এক তুমুল জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন।