জি-টিভির নাচ নিয়ে রিয়েলিটি শো ‘ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স’-এর অন্যতম বিচারক কারিনা কাপুর খান। এবারই প্রথম ছোট পর্দার কোনো রিয়েলিটি শোর সঙ্গে তিনি যুক্ত হলেন। দর্শক বড় পর্দায় এই বলিউড তারকার মেধা, প্রতিভা আর যোগ্যতা দেখেছেন; এবার ছোট পর্দার দর্শক দেখবেন তাঁকে। এরই মধ্যে অনুষ্ঠানটির শুটিং শুরু হয়েছে, চলছে টানা শুটিং, আর তাতে অংশ নিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি ভারতের সংবাদমাধ্যমে সেই অভিজ্ঞতার কথা বললেন এভাবে, ‘খুব ভালো লাগছে। প্রথম দিন তো নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলাম। এর আগে বিভিন্ন রিয়েলিটি শোর অতিথি হয়েছি। কিন্তু বিচারক এবারই প্রথম। তাই এ ধরনের অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আমার কোনো ধারণা ছিল না। কীভাবে শুটিং হয়, তা কখনো দেখিনি। কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেব, তা নিয়েও দ্বিধায় ছিলাম। কয়েক দিন শুটিং করার পর কাজটার সঙ্গে পরিচিত হয়ে গেছি।’
‘ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স’ অনুষ্ঠানে বিচারক কারিনা কাপুর খান কেমন করছেন, তা নিয়ে মানসিক চাপ অনুভব করছেন তাঁর স্বামী সাইফ আলী খান। কারিনা কাপুর খান বললেন, ‘শুটিং শেষ করে প্রথম দিন বাড়ি ফেরার পর সাইফ জানতে চেয়েছে, “কাজটা কেমন হয়েছে? সব ঠিকঠাক পারছ তো?” টেলিভিশনের এটা একমাত্র শো, যা আমি আর সাইফ একসঙ্গে বসে দেখি।’ জানালেন, এরই মধ্যে এই রিয়েলিটি শোতে একজন প্রতিযোগীর ওডিশি নাচ তাঁর মন ছুঁয়েছে। বললেন, ‘যদি কারও এই নৃত্যশৈলীতে দক্ষতা থাকে, তাহলে সে সব ধরনের নাচই দক্ষতার সঙ্গে করতে পারবে।’
রিয়েলিটি শোর বিচারক হওয়ার জন্য কারিনা কাপুর খানকে অনেক আগেই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি রাজি হননি। বললেন, ‘কারণ আমি খুব নার্ভাস। টেলিভিশন সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং মাধ্যম। এর মাধ্যমে কোটি কোটি পরিবারে পৌঁছে যাওয়া যায়। “ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স” অনুষ্ঠানে বিচারক হওয়ার প্রস্তাব যখন পেয়েছি, তখন স্থির করলাম, এবার দুর্বলতা কাটাতেই হবে। আর এটা এমন একটা মঞ্চ, যেখানে অসংখ্য ছেলেমেয়ে তাদের নাচের দক্ষতা দেখিয়ে লাখ লাখ দর্শকের হৃদয় জয় করছে। কাজেই আর দূরে সরে থাকলে চলবে না।’
‘ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স’ অনুষ্ঠানে প্রতিযোগীদের টেকনিক্যাল দিকগুলো দেখবেন দুই বিচারক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া নৃত্য পরিচালক বস্কো মার্টিস আর ভারতীয় র্যাপার ও মিউজিক কম্পোজার রাফতার। কারিনা কাপুর খান জানালেন, তিনি গুরুত্ব দিচ্ছেন প্রতিযোগীদের এক্সপ্রেশনের ওপর। বললেন, ‘নাচ তো কেবল হাত আর পায়ের চলন নয়, মুখের অভিব্যক্তির ওপর অনেকটাই নির্ভর করে।’
এবার এই রিয়েলিটি শোর কিছু পরিবর্তন করেছেন আয়োজকেরা। দেশের চারটি অঞ্চলের ওপর ভিত্তি করে প্রতিযোগীদের চারটি দলে ভাগ করা হয়েছে। একক প্রতিযোগিতার সঙ্গে থাকছে দলগত প্রতিযোগিতাও। তৈরি হয়েছে ৩৬০ ডিগ্রি মঞ্চ। শুটিংয়ে ২০০টি ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে।
‘ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স’ রিয়েলিটি শোর গ্র্যান্ড মাস্টার মিঠুন চক্রবর্তীকে দারুণ মিস করছেন কারিনা কাপুর খান। বললেন, ‘মিঠুন চক্রবর্তী আমার কাছে সুপারস্টার। তাঁর নাচ দেখে আমরা বড় হয়েছি। “ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স”-এর সেটে তিনি থাকবেন না, এটা ভাবাই যায় না। তাঁকে গ্র্যান্ড মাস্টার হিসেবে পাশে পেলে বিচারক হিসেবে সাহস বেড়ে যেত।’
বলা হয় কাপুর পরিবারের রক্তের সঙ্গে মিশে আছে নাচ। এই পরিবারের প্রধান পুরুষ কিংবদন্তি চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব রাজ কাপুরের নাচের খ্যাতি এখনো আছে বলিউড জুড়ে। শাম্মী কাপুরের নাচ আবার একদম আলাদা। রণবীর কাপুরের নাচের সঙ্গে কারিশমা কাপুরের নাচের কোনো তুলনা করা যাবে না। সবার নাচের স্টাইল আলাদা আলাদা। তাহলে কারিনা কাপুর খানের নাচে কার প্রভাব রয়েছে? বললেন, ‘ছোটবেলা থাকে আমি শ্রীদেবীর কঠিন ভক্ত। তাঁর নাচ ফলো করে আজ আমি নায়িকা।’
নাচ নিয়ে নিজের আক্ষেপের কথা বলতে গিয়ে কারিনা কাপুর খান বলেন, ‘শাস্ত্রীয় নাচ শেখা হয়নি, কিন্তু আমি শাস্ত্রীয় নাচের ভক্ত। এখনো পণ্ডিত বিরজু মহারাজের সঙ্গে কোনো কাজ করা হয়নি, এই আক্ষেপ আমার রয়ে গেছে।’