‘থালাইভি’ ছবিটি নিয়ে শুরু থেকেই আলোচনা–সমালোচনার ছড়াছড়ি। তা না হয়ে আর যায় কোথায়। কঙ্গনা রনৌত যেখানে, বিতর্ক সেখানে। এমনি এমনি তো আর তাঁর নামের আগে অলিখিতভাবে ‘বিতর্কের রানি’ বিশেষণ যুক্ত হয়নি। এবার ছবিটি আইনি নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে।
আর আয়োজন করে এই ছবির নির্মাণ কার্যক্রমের জন্য কলকাঠি নেড়েছেন দীপা জয়াকুমার। সম্পর্কে তিনি জয়ললিতা জয়ারামের বড় ভাইয়ের মেয়ে। দীপা রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিক। সম্প্রতি দীপা দাবি করেছেন, তিনি জয়ললিতার উত্তরসূরি। তাই জয়ললিতার জীবননির্ভর ছবি বানানোর আগে তাঁর লিখিত অনুমতি নিতে হবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, তিনি চান না, তাঁর ফুপুর ব্যক্তিগত জীবন বড় পর্দায় আসুক বা ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ব্যবসা হোক।
দীপা আদালতে লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন। আবেদনে তিনি লিখেছেন, তাঁর ফুপুর ওপর ছবি বা ওয়েব সিরিজ নির্মাণ করতে হলে আগে পুরো চিত্রনাট্য তাঁকে দিয়ে দেখিয়ে নিতে হবে। তিনি যদি অনুমোদন দেন, তবেই নির্মিত হবে এই ছবি। নতুবা তাঁদের পারিবারিক গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে এই ছবি নির্মাণ করা যাবে না।
এরই মধ্যে দীপা জয়াকুমারের অনুমতি ছাড়া এই ছবি নির্মাণের কাজ এগিয়ে নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত। গত মঙ্গলবার পরিচালক এ এল বিজয় এবং প্রযোজক বিষ্ণুকে আইনি নোটিশ জারি করেছেন মাদ্রাজ হাইকোর্ট।
এই ছবির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও অনেক বিতর্ক। কঙ্গনা রনৌত জীবনের শেষ দিকে এই বিপ্লবী ‘আম্মা’র মতো দেখতে হবেন কীভাবে? এ সমস্যার সমাধান আনা হয়েছে সুদূর হলিউড থেকে। নাম তাঁর জেসন কলিন্স। কিন্তু এই মেকআপ আর্টিস্টের মেকআপ নিয়েই ধুয়ে দিচ্ছেন সমালোচকেরা। ২৩ নভেম্বর মুক্তি পেয়েছে ‘থালাইভি’ ছবির ফার্স্ট লুক।
‘মুখে এক কেজি মেকআপ লাগিয়ে জয়ললিতা সেজেছেন?’ ‘দেখে মনে হচ্ছে “বাধাই হো বাধাই” ছবির অনিল কাপুর!’ ‘এ কী!’ ‘এটা কে?’ ‘কঙ্গনা রনৌতকে সেই “চাচি ৪২০” ছবির চাচির মতো লাগছে।’ ‘হায় হায়, আপনাকে কঙ্গনা রনৌত কিংবা জয়ললিতার মতো লাগছে না, মনে হচ্ছে স্মৃতি ইরানি।’ ‘এটা কি অ্যানিমেশন ছবি হচ্ছে?’ ‘আপনি অভিনয় ভালো করবেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এটা কী ধরনের মেকআপ?’ ‘এই ছবির মধ্য দিয়ে আম্মাকে অপমান করা হয়েছে।’—‘থালাইভি’ ছবিতে কঙ্গনা রনৌতের ফার্স্ট লুক দেখে টুইটারে এমনই মন্তব্য করেছেন ভক্তরা।
জয়ললিতা জয়ারাম ভারতের কিংবদন্তি অভিনেত্রী ও রাজনীতিবিদ। ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর ছয়বারের মুখ্যমন্ত্রী তিনি। এ ছাড়া ভারতের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেত্রীদের একজন ছিলেন। দেড় শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে ১২০টি ছিল ব্লকবাস্টার। রাজনীতিতে নামার পর তাঁকে বলা হতো ‘পুরাচ্চি থালাইভি’, অর্থাৎ ‘বিপ্লবী নেতা’। তবে ঘনিষ্ঠজনদের কাছে তিনি ‘আম্মা’।