কঙ্গনা রনৌত
কঙ্গনা রনৌত

কঙ্গনার বিরুদ্ধে মাদক গ্রহণের অভিযোগ

আমার ড্রাগ টেস্ট করা হোক: কঙ্গনা

বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের অস্বাভাবিক মৃত্যু যেমন নাড়া দিয়েছে ভক্তদের, তেমনি তোলপাড় করে দিয়েছে পুরো বলিউডকে। এই মৃত্যুর সূত্রেই গতকাল গ্রেপ্তার হলেন অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী। যদিও তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহারের অভিযোগে। একই সময়ে মাদকের সঙ্গে যোগ থাকার অভিযোগ করা হয়েছে কঙ্গনা রনৌতের বিরুদ্ধে।

এবার এই অভিনেত্রীর মাদক নেওয়ার অভিযোগের তদন্ত হবে বলে জানালেন মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ। অবশ্য ধারণা করা হচ্ছে, এই অভিনেত্রী পুলিশ এবং মুম্বাই প্রশাসনের বিরুদ্ধে উল্টাপাল্টা মন্তব্য করে বিপদ ডেকে এনেছেন। তিনি ভিডিও বার্তায় বলেছিলেন, বলিউডের প্রথম সারির শতকরা ৯৯ ভাগ তারকা মাদকাসক্ত!

কঙ্গনা এক ভিডিও বার্তায় বলেছিলেন, বলিউডের প্রথম সারির শতকরা ৯৯ ভাগ তারকা মাদকাসক্ত!

গতকাল মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রের বিধানসভায় কঙ্গনা রনৌতের প্রসঙ্গ ওঠে। শিবসেনার দুই বিধায়ক, সুনীল প্রভু এবং প্রতাপ সরনায়ক আবেদন করেন কঙ্গনার মাদক গ্রহণের বিষয়টি তদন্ত করতে। বিধানসভার বাইরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ জানান, অভিনেত্রী কঙ্গনা রনৌতের বন্ধুত্ব ছিল শেখর সুমনের ছেলে অধ্যয়ন সুমনের সঙ্গে।

অধ্যয়ন এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, কঙ্গনা অবৈধ মাদক নেয়। শুধু তা–ই না, অধ্যয়ন সুমনকে জোর করে মাদক ধরানোর চেষ্টা করেছিল। এসব অভিযোগের তদন্ত করা হবে।

অধ্যয়ন সুমন এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, কঙ্গনা অবৈধ মাদক নেয়
‘আমার কল রেকর্ডস খুঁজে দেখা হোক, আমার ড্রাগ টেস্ট হোক। খতিয়ে দেখা হোক কোন কোন মাদক পাচারকারীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। যদি কোনো রকম যোগসূত্র পাওয়া যায়, তাহলে আমি আমার সব ভুল-অপরাধ স্বীকার করব এবং চিরতরের জন্য মুম্বাই ছেড়ে যাব। মুম্বাই পুলিশের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আমি খুব আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি।’
কঙ্গনা রনৌত

তিনি জানান, মুম্বাই পুলিশের মাদক দমন সেল তদন্ত করবে। প্রথমেই অধ্যয়নকে জেরার জন্য তলব করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশমুখ।


এ পরিস্থিতিতে টুইটারে আবার সক্রিয় হন কঙ্গনা। তিনি লেখেন, ‘আমি মুম্বাই পুলিশ এবং অনিল দেশমুখের থেকেও বেশি খুশি হয়েছি আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনায়। তদন্ত হোক। আমার কল রেকর্ডস খুঁজে দেখা হোক, অনুগ্রহ করে আমার ড্রাগ টেস্ট হোক। খতিয়ে দেখা হোক কোন কোন মাদক পাচারকারীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। যদি কোনো রকম যোগসূত্র পাওয়া যায়, তাহলে আমি আমার সব ভুল-অপরাধ স্বীকার করব এবং চিরতরের জন্য মুম্বাই ছেড়ে যাব। মুম্বাই পুলিশের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আমি খুব আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি।’

মুম্বাই পুলিশের সঙ্গে সাক্ষাতের আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন কঙ্গনা

এখানেই শেষ নয়। কঙ্গনার বিপদ আরও আছে। গতকাল কঙ্গনার পালি হিলের বাংলোর গায়ে নোটিশ ঝুলিয়েছেন সেখানকার স্থানীয় সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। অভিযোগ—কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই বাংলোর নকশায় একাধিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। মুম্বাই শহরতলির বান্দ্রার ওই বাংলোয় স্থানীয় সিটি করপোরেশনের একটি দল যায়। কিন্তু নোটিশ গ্রহণ করার কেউ তখন সেখানে না থাকায় পৌরসভার কর্মীরা নোটিশটি বাংলোর দেয়ালে লাগিয়ে দেন।

এর আগে কঙ্গনা নিজের দপ্তর চত্বরের ভিডিও শেয়ার করে সেই সম্পত্তি ভেঙে দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। যদিও বান্দ্রায় বেআইনি নির্মাণে নজর রাখতে নিয়মিত তল্লাশি অভিযানের অঙ্গ হিসেবেই সিটি করপোরেশনের দলটি সেখানে গিয়েছিল বলে তাঁরা জানিয়েছেন।

কঙ্গনা রনৌত
‘১৫ বছর ধরে আমি কঠোর পরিশ্রম করে তিলে তিলে গড়ে তুলেছি এটি। আমার জীবনের একটাই স্বপ্ন ছিল, আমি যখন নির্মাতা হব, তখন আমার নিজের একটা অফিস থাকবে। কিন্তু মনে হচ্ছে, আমার সেই স্বপ্ন ভাঙার সময় হয়ে এসেছে।’
কঙ্গনা রনৌত

এই প্রেক্ষাপটে কঙ্গনা আবারও টুইট করেন। তিনি লেখেন, ‘আমার ঘর ভাঙতে মরিয়া মুম্বাই পুলিশ। নতুন করে একটি মামলাও করেছে। মনে রাখবেন, অনেক কষ্ট করে, অনেক ভালোবাসা দিয়ে আমি এ ঘর গড়েছি। কাজেই এ ঘর ভাঙলে আমি ছেড়ে কথা বলব না।’

তিনি একটি ভিডিও বার্তা দেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সেখানে বলেন, ‘১৫ বছর ধরে আমি কঠোর পরিশ্রম করে তিলে তিলে গড়ে তুলেছি এটি। আমার জীবনের একটাই স্বপ্ন ছিল, আমি যখন নির্মাতা হব, তখন আমার নিজের একটা অফিস থাকবে। কিন্তু মনে হচ্ছে, আমার সেই স্বপ্ন ভাঙার সময় হয়ে এসেছে। আজ হঠাত্‍‌ কিছু মানুষ আমার বাংলোয় যায়। তারা জোর করে সেখানে ঢুকে মাপজোখ করে। প্রতিবেশীদের হেনস্তা করে।’

কঙ্গনা রনৌত

সম্প্রতি কঙ্গনা বাগ্‌যুদ্ধে জড়িয়েছেন শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউতের সঙ্গে। কঙ্গনার পাশে দাঁড়ানোয় আবার বিজেপিকে টার্গেট করছেন শিবসেনা নেতারা।
গত বৃহস্পতিবার কঙ্গনা রনৌত মুম্বাইকে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের সঙ্গে তুলনা করেন। মুম্বাই শহরে মোটেও নিরাপদ বোধ করবেন না জানিয়েও টুইটে কঙ্গনা লেখেন, ‘কখনোই মুম্বাই পুলিশের দ্বারস্থ হব না।’