মেহেবুব স্টুডিওতে রাত তখন প্রায় ৯টা। ট্রিম করা দাড়িতে নতুন লুকে সালমান। পরনে জিনস, গেরুয়া টি-শার্ট আর তার ওপরে চেক শার্ট। মেহেবুব স্টুডিওতে সালমান খানের মুখোমুখি হলেন প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি। উপলক্ষ, ভাইজানের নতুন ছবি ‘অন্তিম: দ্য ফাইনাল ট্রুথ’। অ্যাকশনধর্মী এই ছবিতে সালমানের সঙ্গে আছেন তাঁর ভগ্নিপতি আয়ুশ শর্মা। পর্দায় বোনজামাই-শ্যালকের রসায়ন দেখতে তাই উদগ্রীব হয়ে আছেন সালমানপ্রেমীরা।
শুরুতে এই ছবির সরদার চরিত্রটি অন্য কাউকে দিয়ে করাতে চেয়েছিলেন সালমান, ‘এই ছবির প্লট আর সরদারের চরিত্রটা আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছিল। তবে শুরুতে আমি করতে চাইনি। আমি এর জন্য দু-একজন অভিনেতাকে ফোন করেছিলাম। পরে ভাবলাম যে আমারই যখন এই ছবির গল্প আর চরিত্র এতটা পছন্দ, তখন আমারই করা উচিত। অন্যের মুখাপেক্ষী হওয়ার কী প্রয়োজন।’
করোনার তাণ্ডব কাটিয়ে জনজীবন অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে। অধিকাংশ সিনেমা হল খুলে গেছে। কিন্তু করোনার সময়ে ওটিটির দাপটের জন্য সিনেমা হলগুলোর অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করেছিলেন। তবে সম্প্রতি বলিউড সুপারস্টার অক্ষয় কুমারের ছবি ‘সূর্যবংশী’ তা ভুল প্রমাণিত করেছে। ছবিটি রীতিমতো বক্স অফিস কাঁপিয়েছে। তাহলে কি থিয়েটার আবার স্বমহিমায় ফিরে এসেছে, এই প্রশ্নের জবাবে সালমান বলেন, ‘আমাদের দেশের থিয়েটার কখনোই বন্ধ হতে পারে না। কারণ, আমাদের কাছে বিনোদনের বিকল্প কিছু নেই। এই যেমন ধরুন, বিদেশে অনেক কিছু আছে। কম খরচ করে সপরিবার আউটিং করার জন্য সিনেমা হল দারুণ ঠিকানা। বড় পর্দায় ভিজ্যুয়াল আর সাউন্ড এফেক্টের মধ্যে হিরোদের দেখার মজাই আলাদা। আর সে মজা মোবাইলে আর ল্যাপটপে নেই।’
শ কোটির ক্লাবে সদস্য হওয়ার চাপ অনুভব করছেন কি না, এ প্রসঙ্গে এই বলিউড তারকা বলেন, ‘আমি আমার এই ছবি অনেক চিন্তাভাবনা করে অনেক যত্নের সঙ্গে নির্মাণ করেছি। পাপাকে (চিত্রনাট্যকার সেলিম খান) দেখিয়েছি, তাঁর ভালো লেগেছে। আর তিনি বলেছেন যে ও (আয়ুশ) ভালো কাজ করেছে। কোনো ছবি যদি আপনি পরিশ্রমের সঙ্গে বানান আর পরিবারের তা পছন্দ হয়, তাহলে খুব ভালো লাগে। ছবি নির্মাণের ক্ষেত্রে পাপার মতামত নেওয়া হয়েছিল। আর তাঁর পরামর্শমতো ছবিটি আরও ভালো করার জন্য কাটছাঁট করা হয়েছে। এখন দর্শকের এই ছবি পছন্দ হলে আমাদের পরিশ্রম সার্থক হবে।’
‘অন্তিম’ ছবিটি পরিচালনা করেছেন পরিচালক আর অভিনেতা মহেশ মঞ্জরেকর। মহেশ মঞ্জরেকরের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে সালমান বলেন, ‘ও তো দারুণ ছেলে। ওর সঙ্গে জড়িয়ে সব অনুভূতিই বিশেষ। অভিনেতা, পরিচালক, লেখকের পাশাপাশি ও ভালো গায়ক আর চিত্রশিল্পী।’ সময়ে অসময়ে সালমান নিজেও ক্যানভাসে রংতুলির আঁচড় কাটেন। আঁকাআঁকি করতে বিশেষ ভালোবাসেন ভাইজান। সম্প্রতি তাঁর নতুন সৃষ্টির প্রসঙ্গে সালমান বলেন, ‘লকডাউনে অনেক সময় পেয়েছিলাম। তবে ওই সময়ে কিছু পেন্টিং করিনি। পরে বেশ কিছু পেন্টিং করেছি। সব মিলিয়ে ৩৬টির মতো পেন্টিং করেছি। আবুধাবিতে ছবি প্রদর্শন করার পরিকল্পনা আছে।’
সালশেষে উঠে আসে সালমান খানের আগামী ছবি ‘টাইগার থ্রি’র প্রসঙ্গ। এই ছবির শুটিংয়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ধুলাবালু-মাটির মধ্যে “টাইগার” ছবির শুটিং করেছি। তখন কিছু বুঝতে পারিনি। তবে শুটিং শেষ হওয়ার পর ধুলা-মাটির জন্য কাশি আর নাক থেকে জল গড়াচ্ছে। তিন-চার দিন ধরে শরীর বিশেষ ভালো নেই। এখন তো একটু কাশি হলেই ভয় লাগে।’