আরও ছবি, আরও চরিত্র, আরও নতুন নতুন সৃষ্টি। আরও অনেক কিছু ছিল বাকি। অনেক অসম্পূর্ণতা রেখে মাত্র ৫৩ বছর বয়সেই চিরবিদায় নিয়েছেন ইরফান খান।
ইরফানের কথা মাথায় রেখে বলিউডের পরিচালক আনন্দ গান্ধী তাঁর আগামী ছবির গল্প লিখেছিলেন। পাঁচ বছর ধরে ছবিটির চিত্রনাট্যের ওপর কাজ করছেন তিনি। তাই ইরফানের মৃত্যুতে আনন্দের সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। তবে অনেকেই ভেবেছিলেন ইরফান খানকে মাথায় রেখে আনন্দের পাঁচ বছর ধরে লেখা এই ছবির চিত্রনাট্য বস্তাবন্দী হয়ে যাবে। কারণ, ইরফানই নেই। কিন্তু তা হচ্ছে না। ‘দ্য শো মাস্ট গো অন’ কথাটি মেনে আনন্দ আবার নতুন উদ্যমে ছবির কাজ শুরু করতে চলেছেন।
এই পরিচালক নাকি ইরফানের জায়গায় সুশান্ত সিং রাজপুতকে নেবেন বলে স্থির করেছেন। ছবিটির গল্পের সঙ্গে অদ্ভুতভাবে আজকের করোনা মহামারির পরিস্থিতির মিল আছে। আনন্দের এই ছবির গল্পের কেন্দ্রবিন্দু মহামারি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি আগেই এই ছবির মাধ্যমে মহামারির ভয়াবহতা দেখাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আজ আমরা মহামারির সাক্ষী। তবে আমাকে চিত্রনাট্যে অনেক পরিবর্তন আনতে হবে। এখন আমি দর্শককে সোজা পরের ধাপে নিয়ে যেতে পারব। মহামারি–পরবর্তী জীবনকে ছবিতে দেখাতে পারব।’
আনন্দ শুরুর দিকে এই ছবির নাম রেখেছিলেন ‘ইমারজেন্সি’। ইরফান খানের পরিবর্তে সুশান্ত সিং রাজপুতকে নেওয়ার কথা ভাবছেন। অস্ট্রেলিয়ান অভিনেতা হুগো বিবিংগকে কাস্ট করতে চান আনন্দ। তবে ইরফানকে না পাওয়ার বেদনা কুরে কুরে খাচ্ছে তাঁকে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘ইরফানের জন্য আমার দীর্ঘ অপেক্ষা ছিল। আমি নিশ্চিত ছিলাম, উনি সুস্থ হয়ে আবার পুরোদমে জীবনের ছন্দে ফিরে আসবেন। আমি এই বিশ্বাস নিয়ে ছিলাম যে যা-ই হোক না কেন, উনি ফিরে আসবেন। আমি শুধু ইরফানকে আর ইরফানকেই চেয়েছিলাম আমার এই ছবির জন্য। তাঁকে ঘিরেই পাঁচ বছর ধরে আমার সব আয়োজন। এখন উনি আমাদের মধ্যে নেই। তাই বলে কি ছবিটা হবে না? যেভাবেই হোক, ছবিটা আমি করব। সুশান্তকে নেওয়ার কথা ভাবছি। সুশান্ত আমার ভালো বন্ধু। ও নিশ্চয়ই আমার সঙ্গে কাজ করবে। এই ছবির জন্য আমার চার নায়িকারও প্রয়োজন।’
সব আয়োজন মিথ্যা করে দিয়ে, বিশ্বাসকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ২৯ এপ্রিল মুম্বাইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন বলিউডের বরেণ্য অভিনেতা ইরফান খান। নিউরোএন্ডোক্রাইন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। ছোট–বড় প্রায় সব পরিচালকই ইরফানকে নিয়ে ছবি বানানোর স্বপ্ন দেখতেন। এমনকি ইরফানকে মাথায় রেখে ছবির গল্প লেখা হতো। এমনই স্বপ্ন দেখেছিলেন ‘তুম্বাড’, ‘হেলিকপ্টার এলা’খ্যাত পরিচালক আনন্দ গান্ধী। এই পরিচালক চেয়েছিলেন ইরফানকে নিয়ে ছবি বানাতে। তাই দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেছেন তিনি। সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল।