ইরফানকে নিয়ে স্ত্রী-সন্তানের আবেগঘন স্ট্যাটাস

ইরফান খান ও সুতপা শিকদার। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
ইরফান খান ও সুতপা শিকদার। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

ইরফান চলে গেছেন গত ২৯ এপ্রিল। এখনো শোকের ছায়ায় মোড়ানো ইরফানের পরিবার। মৃত্যুর দ্বিতীয় দিনে ইরফান খানের স্ত্রী সুতপা শিকদার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখলেন এক আবেগঘন স্ট্যাটাস। এক লাইনের একটি স্ট্যাটাস কিন্তু এটিই যেন বলে দিল ইরফান-সুতপার ভালোবাসার খবর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের একটি ছবি দিয়ে সুতপা স্ট্যাটাসে লিখলেন, ‘আমি কিচ্ছু হারাইনি, বরং আমি সবকিছু পেয়েছি।’

দীর্ঘ দুটি বছর ধরে ইরফান খান এই মারাত্মক রোগের সঙ্গে লড়াই করেছেন। আর যোগ্য বন্ধুর মতো পাশে থেকে ইরফান খানকে আগলে রেখেছেন সুতপা। রোগের ভয়াল থাবা থেকে বাঁচিয়ে রেখেছেন ইরফানকে। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হলো না। চলে গেলেন ইরফান। কিন্তু যে স্মৃতি, যে ভালোবাসা রেখে গেছেন, তাই এখন সম্বল সুতপার।

ইরফান খান। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

হয়তো অনেক কিছুই বিশ্ব চলচ্চিত্রকে দেওয়ার ছিল ইরফান খানের, কিন্তু তা আর হলো না। অনেকগুলো ছবির কাজই বাকি থেকে গেল, আর ওপারে পাড়ি দিলেন ইরফান। সব হিসাব-নিকাশ চুকিয়ে, ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই থামিয়ে গত বুধবার চলে গেলেন এই বলিউড অভিনেতা। স্বামীর মৃত্যুর পর প্রথমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করলেন ইরফান খানের স্ত্রী সুতপা। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুকের প্রোফাইল পিকচার বদলালেন তিনি। স্বামীর সঙ্গে একটি মিষ্টি মুহূর্তের ছবি উঠে এল সেখানে।

সত্যিই সুতপা ছিলেন ইরফানের সবচেয়ে কাছের বন্ধু। এ কথা ইরফান স্বীকারও করেছেন নানা সময়। তার বেঁচে থাকার একটা দারুণ প্রাণশক্তিও ছিলেন সুতপা। ইরফান ভারতীয় গণমাধ্যমকে একবার বলেছিলেন, ‘সুতপাকে নিয়ে কী আর বলব? ২৪ ঘণ্টা সে আমার পাশে, আমার সঙ্গে থাকে। আমি যদি বাঁচার আরও একটা সুযোগ পাই, তাহলে সেই জীবনের একমাত্র কারণ সুতপা।’

ইরফান খান ও সুতপা শিকদার। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

মায়ের মতো শোকগ্রস্ত দুই ছেলে বাবিল ও অয়ন। তবুও ধন্যবাদ জানিয়েছেন সৃহদদের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘আমার বন্ধুরা দুর্দিনে যেভাবে আমার পাশে দাঁড়িয়েছে, আমি তাতে ধন্য। আশা করি আপনারা সকলেই বুঝতে পারছেন যে এই মুহূর্তে আমার শব্দভান্ডার শূন্য। আমি সবার কাছে ফিরে আসব। কিন্তু এই মুহূর্তে নয়। অনেক ধন্যবাদ। অনেক ভালোবাসা সবাইকে।’

২০১৮ সালে বিরল ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার পরও হার মানেননি ইরফান খান। বরং আরও বেশি করে জীবনকে আঁকড়ে ধরেছিলেন। কিন্তু ভয়াল এই রোগের সঙ্গে হেরে অবশেষে চলে গেলেন এই বলিউড অভিনেতা। বুধবার সকালে তিনি মুম্বাইয়ের ধীরুভাই অম্বানি হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।

২৮ এপ্রিল হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি হয়েছিলেন। এরপরই শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে এবং একসময় সব চিকিৎসার ঊর্ধ্বে চলে যান ইরফান। তাঁকে আর ফেরানো যায়নি। হাসপাতালে তাঁর পাশেই ছিলেন স্ত্রী সুতপা শিকদার এবং তাঁদের দুই ছেলে।