ভারত দীর্ঘদিন ধরে লকডাউনে। এবারের মতো বিবাহবার্ষিকী আর আসেনি অভিষেক বচ্চন ও ঐশ্বরিয়া রাইয়ের। আজ ২০ এপ্রিল এই তারকা জুটির ১৩তম বিবাহবার্ষিকী। অনেকের কাছেই তাঁরা আদর্শ জুটি। যাহোক, ফিল্মফেয়ার, গলফ নিউজ, টুইটার ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান থেকে এই জুটির ১৩তম বিয়ের দিন উপলক্ষে থাকল ১৩টি অন্য রকম তথ্য:
১. ২০০৭ সালে মুম্বাইয়ে বচ্চনবাড়িতে অত্যন্ত গোপনীয়তা ও সতর্কতার ভেতর দুই পরিবার, নিকটাত্মীয় ও বন্ধুবান্ধবের উপস্থিতিতে বিয়ে হয় ঐশ্বরিয়া ও অভিষেকের। এই বিয়ে গণমাধ্যমের কাছে ‘রাজকীয় বিয়ে’ উপাধি পেয়ে বলিউডের ইতিহাসের অংশ হয়ে যায়।
২. এই জুটির ওপর গণমাধ্যমের ক্যামেরা সব সময়ই তাক করা ছিল। পাপারাজ্জিরাও নাওয়া–খাওয়া ভুলে ওত পেতে থাকত। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনকে খুব সযত্নে আড়ালে রাখতে পেরেছেন এই জুটি। কেবল ততটুকুই প্রকাশ্যে এসেছে, যতটুকু তাঁরা দেখাতে চেয়েছেন।
৩. তারকাদের বিয়ের পরই নাকি আসে বিচ্ছেদ। বিচ্ছেদ না হলে কী হবে, বিচ্ছেদের গুজব রটেছে একাধিকবার। বলা হয়েছে, শ্বাশুড়ির সঙ্গে নাকি সম্পর্ক ভালো নয় ঐশ্বরিয়ার। একসময় কারিশমা কাপুরের সঙ্গে অভিষেকের বাগদান হয়েছিল। কিন্তু বিয়ে পর্যন্ত গড়ানোর আগেই সেই সম্পর্ক ভেস্তে যায়। কারিশমা কাপুর আর অভিষেকের বোন শ্বেতা বচ্চন আবার খুবই ভালো বন্ধু। শ্বেতা নাকি কখনোই ঐশ্বরিয়াকে মেনে নিতে পারেননি। তবে একেকবার গুজবের গল্প ছড়ানোর পরই এই জুটি হাত ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এসেছেন। জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা একসঙ্গেই আছেন।
৪. অনেকে বলেন, ঐশ্বরিয়া নাকি অভিষেককে নয়, অমিতাভ বচ্চনের পুত্রবধূর পদকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু বিয়ের পর সমালোচকদের জবাবে এই দম্পতি বলেছেন, তাঁরা দুজন দুজনার প্রেমে পড়েছিলেন। অবশ্য তা শুনেও ট্রল করেছেন নেটিজেনরা। বলেছেন, ‘অভিষেকের কী দেখে প্রেমে পড়লেন ঐশ্বরিয়া? বাবার অর্থ আর প্রতিপত্তি দেখে?
৫. বিয়ের পর এই দম্পতি দারুণ জনপ্রিয়তা পান। বলা হয়, অভিষেকের জনপ্রিয়তা এক লাফে দ্বিগুণের বেশি বেড়ে যায়।
৬. বিয়ের পর অভিষেক স্ত্রীর সঙ্গী হয়ে প্রথমবারের মতো কানের লাল গালিচায় হাঁটেন। বিশ্বসুন্দরীর মঞ্চে যান। বাদ যায়নি অপরাহ উইনফ্রে শো। এই জুটির জনপ্রিয়তা ব্র্যাড পিট ও অ্যাঞ্জেলিনা জোলিকেও ছাড়িয়ে যায়।
৭. ঐশ্বরিয়া বিয়ের আগে মা–বাবার সঙ্গে বান্দ্রায় থাকতেন। বিয়ের পর জুহুতে সবকিছু গুছিয়ে নিচ্ছেন, এমন সময় হলিউডের ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’ ছবির প্রস্তাব আসে। ‘না’ করে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অভিষেক বচ্চন ছবিটি করার জন্য রাজি করান ঐশ্বরিয়াকে। বলেন, ‘তোমার পরিবার, ভবিষ্যতের সন্তান আর দেশ গর্ব করবে, গল্প করবে, এমন একটা কাজ তুমি ছেড়ে দিতে পারো না। তুমি অবশ্যই কাজটি করবে।’
৮. ২০০৩ সালে ‘কুছ না কাহো’ সিনেমার সেট থেকে বন্ধুত্ব হয় এই জুটির। যদিও এর আগে ‘ধাই আকষার প্রেম কে’ ছবিতে ২০০০ সালে একসঙ্গে কাজ করেছিলেন। তখন ঐশ্বরিয়ার প্রেম চলছিল সালমান খানের সঙ্গে। তবে সংবাদ বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, যতবার তাঁরা একসঙ্গে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন, বা একে অপরের বিষয়ে কথা বলেছেন, একজনের প্রতি আরেকজনের সম্মান স্পষ্ট।
৯. অভিষেক বলেন, ২০০৬ সালে ‘উমরাও জান’ ছবির সেটে তিনি ঐশ্বরিয়ার প্রেমে পড়েন। ঠিক করেন, এই নারীর সঙ্গেই বাকি জীবন কাটাবেন। তাই বিয়ের পর ফিল্ম কোম্পানিয়নকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘ঐশ্বরিয়া আমার জীবনের সেরা অর্জন।’ অবশ্য আরাধ্য জন্মের পর এই বিবৃতি বদলে গেছে। বলেছেন, তাঁদের দুজনেরই চোখের মণি এখন এই কন্যা।
১০. যদিও ‘উমরাও জান’ বক্স অফিসে ফ্লপ করে, তবে এরপর জীবনের গল্পে তরতর করে এগিয়েছেন এই দুজন। অভিষেকের ভাষায়, ‘“উমরাও জান” সিনেমাটা আমার জীবন বদলে দিল, জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিল।’ তারপর ২০০৭ সালের ১৪ জানুয়ারি নিউইয়র্কে এক শীতের বিকেলে অভিষেক বচ্চন যখন বিয়ের জন্য ঐশ্বরিয়ার সম্মতি চেয়েছেন, তিনি ‘হ্যাঁ’ বলে দিয়েছেন।
১১. ঐশ্বরিয়া আর অভিষেক দুজন একসঙ্গে ৬টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। তবে এগুলোর ভেতর দুজনেরই পছন্দ মনি রত্নম পরিচালিত ‘গুরু’।
১২. অভিষেক ও ঐশ্বরিয়ার অনুরাগ কশ্যপ পরিচালিত ‘গোলাপ জামুন’ ছবিতে অভিনয় করার কথা ছিল। আনুষ্ঠানিক ঘোষণাও এসেছিল। তবে কোনো এক অজানা কারণে প্রজেক্টটি বাতিল হয়ে যায়।
১৩. ঐশ্বরিয়াকে এরপর দেখা যাবে মনি রত্নম পরিচালিত ‘পনিয়িন সেলভান’ ছবিতে। আর অভিষেক বচ্চন দেখা দেবেন অনুরাগ বসুর ‘লুডো’, কৌশিক গাঙ্গুলির ‘দ্য বিগ বুল’ ও ক্রাইম থ্রিলার ‘বব বিশ্বাস’–এ।