ভ্যারাইটির প্রতিবেদনে চরকির আগামী বছরের পরিকল্পনাকে শক্তিশালী বলে প্রশংসা

চরকি অ্যাওয়ার্ডের মঞ্চে দ্বিতীয় বছরের নির্মাতাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। গত শনিবার রাজধানীর শেফস টেবিল কোর্টসাইটে আয়োজিত চরকি কার্নিভ্যালে
ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

বাংলা ভাষার দর্শকদের জন্য যেন নতুন দুয়ার খুলেছে ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকি। ওয়েব ফিল্ম, চরকি ফ্লিকসহ নানা আয়োজন দিয়ে বছরজুড়ে আলোচনায় ছিল এই প্ল্যাটফর্ম। এবার মার্কিন সাময়িকী ‘ভ্যারাইটি’র মাধ্যমে নতুন করে আলোচনায় এল এই প্ল্যাটফর্ম। গতকাল এই সংবাদমাধ্যমে চরকির প্রশংসা করে বলা হয়, বাংলা ভাষার তীব্র প্রতিযোগিতামূলক ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের মধ্যে অন্যতম নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশের প্ল্যাটফর্ম চরকি। ২০২৩ সালজুড়ে মুক্তি পাবে, এমন কাজের একটি শক্তিশালী লাইনআপ প্রকাশ করেছে তারা।

কথা বলছেন চরকি দ্বিতীয় বছরের অন্যতম নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

ভ্যারাইটিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির নেতৃত্বে যাঁরা আশার আলো দেখাচ্ছেন, এমন নির্মাতারাই এই কাজগুলো করছেন। নির্মাতাদের গুরুত্ব ও কাজগুলোর বিচারে ২৫টি কাজের এই তালিকা খুবই শক্তিশালী। এই তালিকায় প্রথমেই সাময়িকীটি উল্লেখ করেছে চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সিনেমার কথা। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’ সিনেমা নিয়ে এখনো তিনি বিশ্বের বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে ঘুরছেন।

‘ভ্যারাইটি’র মাধ্যমে নতুন করে আলোচনায় এল চরকি

আগামী বছরের এই কাজের স্লটগুলোর মধ্যে অন্যতম ফারুকীর ‘মিনিস্ট্রি অব লাভ’। সিনেমাটির বিস্তারিত এখনো রহস্যে ঘিরে রয়েছে। এটা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর নতুন কৌশল নয়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত পাওয়া এই নির্মাতা বরাবর মুক্তির আগে কোনো সিনেমা নিয়েই মুখ খোলেন না।

‘রেহানা মরিয়ম নূর’ চরচ্চিত্রের পরিচালক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ

‘মিনিস্ট্রি অব লাভ’–এর মতো একই কথা যেন প্রযোজ্য আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের চরকির এই সিনেমাটি নিয়ে। সাদ এখনো চরকির দর্শকদের জন্য কী ধরনের প্রোডাকশন আনছেন, সেই সম্পর্কে কিছু বলতে চান না। ভ্যারাইটিতে বলা হয়েছে, ‘আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ বাংলাদেশ থেকে “রেহানা” সিনেমা দিয়ে প্রথমবার কান চলচ্চিত্র উৎসবে আঁ সার্তে রিগা বিভাগে অফিশিয়াল মনোনয়ন পেয়েছিলেন।’ তাঁর সিনেমাটি পাম স্প্রিং, সিঙ্গাপুর, বুসান চলচ্চিত্র উৎসবসহ একাধিক উৎসবে অংশ নিয়েছে ও পুরস্কৃত হয়েছে। বর্তমানে সিনেমাটি চরকির দর্শকদের জন্য প্ল্যাটফর্মে রয়েছে।

সৈয়দ আহমেদ শাওকী

চরকির শক্তিশালী ২৫ সিনেমার গল্পগুলো সাজানো হয়েছে রোমান্টিক, থ্রিলার, ড্রামা, হররসহ সব ঘরানার গল্প দিয়ে। ২০২৩ সালের এই লাইনআপে থ্রিলার ‘মারকুলেস’ নিয়ে আসছেন আবু শাহেদ ইমন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়ের গল্প নিয়ে ‘বাইপাস’ পরিচালনা করেছেন সৈয়দ আহমেদ শাওকী। রবিউল আলম রবির রোমান্টিক ড্রামা ‘ক্যাফে ডিজায়ার’ সাজানো হয়েছে পাঁচটি আলাদা গল্প দিয়ে, যেগুলো আবার একটা আরেকটার সঙ্গে সম্পর্কিত।

আশফাক নিপুণ

চরকির ২৫টি শক্তিশালী লাইনআপের অন্য গল্প নির্মাণ করছেন শঙ্খ দাশগুপ্ত। তাঁর চলচ্চিত্রের নাম ‘গুটি’। এ ছাড়া সঞ্জয় সমাদ্দারের ‘দাগ’, গৌতম কৈরীর ‘জীবন থেকে পাওয়া’, বাশার জর্জিসের ‘ওভার ট্রাম্প’, রায়হান খানের ‘ট্রাইব্যুনাল’, সুকর্ণ শাহেদ ধীমানের ‘ফেউ’, রায়হান রাফির ‘সুড়ঙ্গ’। এ ছাড়া পরিচালকদের মধ্যে আরও রয়েছেন নুহাশ হুমায়ূন, আদনান আল রাজীব, অনম বিশ্বাস, আশফাক নিপুণ, কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, মিজানুর রহমান আরিয়ান, মোহাম্মদ তৌকির ইসলাম, রেজানুর রহমান, সালেহ সোবহান অনিম, শিহাব শাহীন, তানিম নূর, তানভীর আহসান, ভিকি জাহেদ।

নুহাশ হূমায়ুন

ভ্যারাইটির প্রতিবেদনে শুধু আগামী বছরের কাজগুলোর তালিকার প্রশংসাই নয়, ভ্যারাইটি চরকির স্ট্রিমিংয়ের সব কাজের প্রশংসা করে প্রতিবেদন উল্লেখ করেছে, ২০২১ সালের জুলাইয়ে চরকির যাত্রা শুরু। এখন পর্যন্ত প্ল্যাটফর্মটি ৩৫টি অরিজিনাল টাইটেল প্রযোজনা করেছে। এই সময়ের মধ্যে চরকি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ‘এশিয়ান একাডেমি ক্রিয়েটিভ অ্যাওয়ার্ডর’ তিনটি পুরস্কার জিতেছে। আগামী ডিসেম্বরে সিঙ্গাপুরে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান হবে।

চরকির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ও নির্মাতা রেদওয়ান রনি

ভ্যারাইটির বরাত দিয়ে চরকির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা রেদওয়ান রনি বলেন, ‘চরকির লক্ষ্য আন্তর্জাতিক কনটেন্ট মার্কেটে লক্ষণীয় প্রভাব রাখা। মাত্র এক বছরের মাথায় আমরা নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইমের মতো প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছি। আশা করি, সামনের দিনগুলোতে আমরা আরও বড় হব, প্রত্যাশিত সীমা ছাড়িয়ে যাব।’ চরকিতে বর্তমানে ১৯৮টি দেশের দর্শকের সাবস্ক্রিপশন রয়েছে। ভ্যারাইটির প্রতিবেদক প্রকাশের এক দিন আগেই চরকিতে মুক্তি পেয়েছে অনম বিশ্বাসের ‘দুই দিনের দুনিয়া’। এখানে প্রধান দুটি ভূমিকায় অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী ও ফজলুর রহমান বাবু। এটি প্রচারের পর থেকেই দর্শকদের প্রশংসা পাচ্ছে।

আদনান–আল রাজীব