‘রূপসা নদীর বাঁকে’, তানভীর মোকাম্মেলের নতুন চলচ্চিত্রটির ৯০ ভাগ শুটিং শেষ হয়েছে। সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রটির কাহিনি গড়ে উঠেছে একজন ত্যাগী বামপন্থী নেতাকে ঘিরে, যাকে ১৯৭১ সালে রাজাকাররা হত্যা করে। চলচ্চিত্রটি নির্মাণের ঘাটতি বাজেট সমন্বয়ের জন্য পরিচালক গণ-অর্থায়নের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছেন।
পরিচালক জানান, ইতিমধ্যে খুলনার বৈঠাঘাটা ও ফুলতলা উপজেলার গ্রামাঞ্চলে, দৌলতপুর স্টেশনে এবং কুমিল্লায় ছবিটির শুটিং হয়েছে। বিভিন্ন বয়সে বামপন্থী নেতাটির চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান শোভন, খায়রুল আলম সবুজ ও তাওসিফ সাদমান তূর্য্য। অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন রামেন্দু মজুমদার, নাজিবা বাশার, চিত্রলেখা গুহ, ঝুনা চৌধুরী, আফজাল কবির, রাজীব সালেহীন, মাসুম বাশার, অলোক বসু প্রমুখ।
বাংলাদেশে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার, অসাম্প্রদায়িকতা ও গণতন্ত্রের সংগ্রামে এবং সার্বিকভাবে সমাজপ্রগতির লক্ষ্যে ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে বামপন্থীদের অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা ও জেল-নির্যাতনের ইতিহাস রয়েছে। তাই পরিচালক তানভীর মোকাম্মেল বাংলাদেশের বামপন্থীদের নিয়ে রূপসা নদীর বাঁকে চলচ্চিত্রটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। দুই ঘণ্টা দৈর্ঘ্যের ছবিটিতে তিরিশ দশকের স্বদেশি আন্দোলন, তেভাগা আন্দোলন, রাজশাহী জেলের খাপড়া ওয়ার্ডে কমিউনিস্টদের হত্যাসহ বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য ঘটনাসমূহ একজন বিপ্লবীর জীবনের পরিপ্রেক্ষিতে বর্ণিত হবে।
ছবিটির বাজেট ৯৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৫০ লাখ টাকা বাংলাদেশ সরকার অনুদান হিসেবে দিয়েছে। যেহেতু এ ধরনের বিষয়বস্তুর একটি ছবির জন্য তানভীর মোকাম্মেল করপোরেট পুঁজির দ্বারস্থ হতে চান না, তাই বাকি ৪৬ লাখ টাকা গণ-অর্থায়নের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হচ্ছে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ এ ছবির জন্য অবদান রাখছেন। ছবিটা শেষ করার জন্য বাকি অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। ছবির ১০ ভাগ শুটিং বাকি আছে। সেগুলো শেষ করে ১ জুলাই থেকে ডাবিং শুরু হবে বলে জানালেন পরিচালক।
এর আগে তানভীর মোকাম্মেলের নদীর নাম মধুমতি, চিত্রা নদীর পারে, লালসালু, লালন, রাবেয়া, জীবনঢুলিসহ বেশ কিছু চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছিলেন। চলচ্চিত্রগুলো জাতীয় পুরস্কারসহ দেশি-বিদেশি পুরস্কার পেয়েছে। প্রদর্শিত হয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে।