পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘বাংলা চলচ্চিত্রের জৌলুশ এখন দিনে দিনে বাড়ছে। বাংলা চলচ্চিত্র বিশ্বের সেরা চলচ্চিত্র। এই চলচ্চিত্র আজ এগিয়ে চলেছে। তৈরি হচ্ছে নিত্যনতুন আঙ্গিকে বাংলা চলচ্চিত্র। আমরাও এই বাংলা চলচ্চিত্র সংরক্ষণের জন্য গড়ে তুলছি কলকাতায় একটি চলচ্চিত্র জাদুঘর। সেখানে সংরক্ষিত থাকবে সব অতীত থেকে বর্তমানের বাংলা চলচ্চিত্র।’
আজ সোমবার বিকেলে দক্ষিণ কলকাতার নজরুল মঞ্চে ২৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধন করে এ কথা বলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন থেকে বাংলা চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আরও কাজ করতে হবে। প্রচার-প্রসার চালাতে হবে। কলকাতা ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এবার সেই সাংস্কৃতিক রাজধানী কলকাতাকে নতুন করে সাজাতে হবে।’ তিনি বাংলা চলচ্চিত্র নির্মাণের যুদ্ধে সব সংস্কৃতিমান মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা প্রদীপ জ্বালিয়ে এই ২৭তম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধন করেন। এ সময় তাঁর পাশে ছিলেন বলিউড তারকা ও আজকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বলিউড তারকা শত্রুঘ্ন সিনহা। ছিলেন পরিচালক গৌতম ঘোষ, পরিচালক সন্দীপ রায়, রাজ চক্রবর্তী, চলচ্চিত্র তারকা প্রসেনজিৎ, রঞ্জিত মল্লিকসহ টালিউডের তারকারা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে বলিউড তারকা শত্রুঘ্ন সিনহা বলেন, ‘আমার সঙ্গে বাংলার সম্পর্ক সুদূর অতীত থেকে। আমি সত্যজিৎ রায় ও মৃণাল সেনের ভক্ত।’ এই তারকা বলেন, ‘বাংলা চলচ্চিত্র আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। বাংলা চলচ্চিত্রের সেরা পরিচালক গৌতম ঘোষ আমার বন্ধু ও গাইড। আমার অভিনীত ২৫০টি ছবির মধ্যে আজও আমাকে আলোড়িত করে এই বাংলার ছবি “অন্তর্জলী যাত্রা”। ওই ছবির অভিনয় আজও আমাকে বিমোহিত করে রাখে। আমি আজও বাংলা ছবির একজন অনুরাগী। আমি এই বাংলা চলচ্চিত্র থেকে অনেক কিছু শিখেছি। আরও শিখব।’
এবার এই উৎসব ২৭ বছরে পা দিয়েছে। এবার উৎসবের থিম কান্ট্রি ফিনল্যান্ড। এসেছে ফিনল্যান্ডের সাতটি ছবি। উৎসবের উদ্বোধনী ছবি প্রখ্যাত পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ১৯৭০ সালে নির্মিত ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’। এ ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও শর্মিলা ঠাকুর।
আর এবারের উৎসবে বাংলাদেশ থেকে যোগ দিয়েছে ‘আজব কারখানা’। ছবিটি পরিচালনা করেছেন শবনম ফেরদৌসী। কাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় নন্দন-২–এ ছবিটি প্রদর্শিত হবে। ছবিটি দেখানো হবে উৎসবের নেটপ্যাক বিভাগে।
এবার এ উৎসবে ৪০টি দেশের ১৬৩টি ছবি অংশ নিয়েছে। ছবির মধ্যে রয়েছে ১০৩টি ফিচার ফিল্ম এবং ৫৮টি স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি। ৭১টি দেশের ১ হাজার ৬৯৮টি ছবি থেকে ১৬১টি ছবি বাছাই করা হয়েছে। এবারও উৎসবে দেওয়া হবে সেরা ছবি, সেরা পরিচালক, সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি এবং সেরা ডকুমেন্টারি ছবির পুরস্কার। সপ্তাহব্যাপী আয়োজিত এ চলচ্চিত্র উৎসব শেষ হবে ১ মে।