শুটিংয়ের ফাঁকে 'ফেলুদা'র জন্মদিনের কেক কাটা হলো

গতকাল ৮ সেপ্টেম্বর ছিল ফেলুদা ওরফে প্রদোষ মিত্তির ওরফে সব্যসাচী চক্রবর্তীর ৬৩তম জন্মদিন। জন্মের সেই বিশেষ দিবসের সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকার উত্তরায় এক শুটিং বাড়িতে দেখা মিলল তাঁর।

‘ভুবন মাঝি’ খ্যাত ফাখরুল আরেফীন খানের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‘গণ্ডি’র তৃতীয় পর্যায়ের শুটিং চলছে। এই শুটিং চলবে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তবে সব্যসাচীর অংশের শুটিং শেষ হবে আজ সোমবার। শুটিংয়ের শত ব্যস্ততার মাঝে একটু সময় মিললে ৩ সেপ্টেম্বর তাঁর আগাম জন্মদিন পালন করা হয় রাজধানীর গুলশানের একটি কনভেনশন সেন্টারে।

রোববার রাতে চিত্রধারণ চলছিল। এর ফাঁকে ফাঁকে প্রথম আলোর সঙ্গে চলছে কথোপকথন। পাশের চেয়ারে তাপমাত্রা হারিয়ে ক্রমশ জুড়িয়ে যাচ্ছে চা। হঠাৎ সেখানে এলেন এক তরুণী।সব্যসাচীই পরিচয় করিয়ে দিলেন। তরুণীর নাম লিলিয়া সাহা। ডেন্টিস্ট। ‘গণ্ডি’ ছবিতেও তাঁর চরিত্র একজন ডেন্টিস্টেরই। সুবর্ণা মুস্তফার সহকারীর। এই লিলিয়া সাহা প্রথম দিনই ফেলুদার দাঁত দেখে ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘অবস্থা ভালো নয়।’ তবুও ডেন্টিস্টকে দেখে খুশি হলেন সব্যসাচী। আর লিলিয়া সাহার চোখেমুখে তখন ষোড়শী কিশোরীর মুগ্ধতা।

সব্যসাচী ভাবছেন, এক ফুঁতে মোমবাতি কীভাবে নেভাবেন। ছবি: প্রথম আলো

লিলিয়া সাহা সঙ্গে নিয়ে এসেছেন বিশাল বিশাল সব জন্মদিনের উপহার। আর একটা কেক। সেই উপহার পেয়ে সব্যসাচী খুশি হয়েছেন। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন চিন্তা। এত বড় উপহার তিনি কীভাবে কলকাতায় বাড়িতে নিয়ে যাবেন! শুটিং থামিয়ে, সাক্ষাৎকার থামিয়ে সবাই জড়ো হলেন কেক কাটবেন বলে। একসময় কেক কাটা হলো। এক টুকরা কেক তুলে দিলেন ঋদ্ধির মুখে। ঋদ্ধি কে? পর্দায় তার সঙ্গে সব্যসাচীর সম্পর্ক দাদু আর নাতনির। নাতনিও কেক তুলে দিল দাদুর মুখে। গেল ৫ সেপ্টেম্বর ৯ বছরে পা রাখা ঋদ্ধি যখন ৬ ফুট দেড় ইঞ্চির সব্যসাচীর মুখে কেক তুলে দিচ্ছিল, পেছন থেকে পরিচালক তখন হাঁ করে দেখছিলেন। যেন এটাও কোনো শট, আর তিনি চরিত্রের মধ্যেই আছেন! খাওয়ানো শেষ হলে বললেন, 'বাপরে, এত উঁচু একটা লোককে কেক খাওয়ালি।’ এই উঁচু যে কেবল উচ্চতার উঁচু নয়, তা তো আর বলে দিতে হয় না।

শিশুশিল্পী ঋদ্ধি অভিনেতা সব্যসাচীকে কেক খাওয়াচ্ছেন। পেছনে পরিচালক। ছবি: প্রথম আলো

ছবির শুটিংয়ের দল থেকে কেউ জন্মদিন পালনের উদ্যোগ নিল না? খুবই যৌক্তিক প্রশ্ন। যদিও আগে একবার আগাম জন্মদিন পালন করা হয়েছে, তবুও। জন্মদিন বলে কথা। পরিচালক প্রথম আলোকে জানালেন, হোটেলে ফিরেই টের পাবেন সব্যসাচী। বড় পর্দার ফেলু মিত্তির হলেও আঁচ করার কথা নয় যে হোটেলে ততক্ষণে ‘সারপ্রাইজ বার্থডে পার্টি’র সমস্ত আয়োজন সম্পন্ন।

ফেরার সময় বললাম, এ রকম জন্মদিন বারবার ফিরে ফিরে আসুক। শুনেই বললেন, ‘না না, তা কেন। আমি থুড়থুড়ে বুড়ো হয়ে লাঠিতে ভর করে হাঁটতে চাই না। আমি বিছানায় পড়ে থাকতে চাই না। আমি দিব্যি ফেলুদা হয়েই "টাশ" করে মরে যেতে চাই।’

সে তিনি যা-ই বলুন না কেন! আর তিনি তো বেঁচে থাকবেন তাঁর কর্মে। ফেলুদা, কাকাবাবু, দাশু, পুলিশ বা ‘গণ্ডি’তে ঋদ্ধির দাদু বা সুবর্ণা মোস্তফার বন্ধু অথবা প্রেমিক হয়ে। যে প্রেমিক গণ্ডি পেরোতে পারলেন কি না, তা জানা যাবে কেবল ছবিটা মুক্তি পেলে।