করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া শিল্পীদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া শিল্পীদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়

শিল্পকলায় জমেছে নবান্ন উৎসব

দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে রাজধানীতে ঘটা করে উদ্‌যাপন করা হচ্ছে নবান্ন। মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ক্যাম্পাসে আয়োজন করা হতো এই উৎসব। সংস্কৃতিকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ অনেক মানুষই আসতেন। নেচে গেয়ে লোকায়ত জীবন ও সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতেন। থাকত খই, মুড়ি, পিঠাপুলির আয়োজন। কিন্তু করোনার কারণে প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ চারুকলার গেট। শিক্ষা কার্যক্রম চালু হলেও পালা–পার্বণের জন্য স্থানটি এখনো খুলে দেওয়া হয়নি। এবার তাই শিল্পকলা একাডেমির খোলা প্রাঙ্গণেই বসেছিল আসর।

জাতীয় নবান্ন উৎসব উদ্‌যাপন পর্ষদের উদ্যোগে নাচের মাধ্যমে নবান্ন উৎসব ১৪২৮ উদ্‌যাপন

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটায় শুরু হয় উৎসব। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মুক্তমঞ্চে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

জাতীয় নবান্নোৎসব উদ্‌যাপন পর্ষদের সহসভাপতি মাহমুদ সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তৃতা দেন পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক নাঈম হাসান। চিকিৎসার কারণে দেশের বাইরে থাকায় পর্ষদের সভাপতি লায়লা হাসানের লিখিত শুভেচ্ছা বক্তব্য পাঠ করেন সহসভাপতি মানজার চৌধুরী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাতীয় নবান্নোৎসব উদ্‌যাপন পর্ষদের সহসভাপতি সঙ্গীতা ইমাম।

একক সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী ফাতেমাতুজ জোহরা

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ‘করোনাকালে দেশের সংস্কৃতিচর্চায় যে ভাটা পড়েছিল, করোনা-উত্তরকালে আমরা চেষ্টা করছি সংস্কৃতিচর্চা বেগবান করার মাধ্যমে তা পুষিয়ে নিতে। সে জন্য আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশব্যাপী বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উৎসব উদ্‌যাপন করছি। সাম্প্রতিক কালে যে ধর্মীয় উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, সংস্কৃতিচর্চার মধ্য দিয়ে তার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।’

দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন

সকাল-বিকেল দুই পর্বে বিভক্ত ছিল ‘নবান্ন উৎসব ১৪২৮’। শিল্পকলা একাডেমির খোলা চত্বরে মঞ্চ সাজানো হয়েছে। ব্যবহার করা হয়েছে গ্রামীণ নানা অনুষঙ্গ। অনুষ্ঠানে করোনাকালে প্রয়াত সংস্কৃতিজনদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। গান, নৃত্য ও কবিতার ভাষায় ফসলকেন্দ্রিক জীবনযাত্রা তুলে ধরা হয়।

বিভিন্ন সংগঠনের শিল্পীরা দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন

নানা পরিবেশনা ছাড়াও উৎসবে আগত ব্যক্তিদের জন্য ছিল পিঠাপুলির ব্যবস্থা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে দর্শক। ঝলমলে রোদ ছড়িয়ে পড়তে পড়তে উৎসবে শামিল নাগরিকদের জটলায় জমজমাট। মঞ্চে শিল্পীরা কখনো একক, কখনো দলীয় গান শোনালেন। কখনো কখনো গানের সঙ্গে সমবেত নৃত্য। মাঝে কিছুটা বিরতি। বিকেল পাঁচটায় শুরু হয় নবান্ন উৎসবের দ্বিতীয় পর্ব।

জাতীয় নবান্ন উৎসবে দলীয় নৃত্য পরিবেশন